মুখ্যমন্ত্রীর ১৮ তারিখের সভার পাল্টা ১৯-শে সভা শুভেন্দুর

প্রত্যাশিতভাবেই নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর ১৮ জানুয়ারির সভার পাল্টা ১৯ তারিখ সভা করার ঘোষণা করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী৷

শুক্রবার নন্দীগ্রামের সভামঞ্চে শুভেন্দু ( Suvendu Adhikary) বলেন, “৭ তারিখে তৃণমূলের সভা হয়নি। ওরা আবার ১৮ জানুয়ারি সভা করবে বলেছে। আমি রাজ্য সভাপতির অনুমতি নিয়েছি। আগামী ১৯ জানুয়ারি খেজুরিতে পাল্টা সভা হবে। ১৮ তারিখের জবাব দেওয়া হবে ১৯ তারিখ৷ খেজুরির বিদ্যাপীঠ ময়দানে হবে এই জবাবি সভা”৷

প্রসঙ্গত, তৃণমূলের তরফে আগেই জানানো হয়েছিলো, আগামী ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ৭ জানুয়ারি, ‘শহিদ দিবসে’ নন্দীগ্রামে সভার ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। তৃণমূল-সুপ্রিমোর সেই সভায় উপস্থিত থাকার কথাও জানানো হয়েছিলো। শুভেন্দু তখনই জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরদিন, ৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে সভা করবে বিজেপি৷ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দেওয়া হবে ওইদিন৷ কিন্তু সভার মূল আয়োজক রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ওই সভা বাতিল করা হয়৷ পরে নতুনভাবে তৃণমূল ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হবে ১৮ জানুয়ারি ৷ তখন থেকেই রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ তৈরি হয়, ১৮ তারিখের পাল্টা সভা করতে শুভেন্দু তৈরি কি’না৷

বাংলায় পরিবর্তনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত নন্দীগ্রামে শুক্রবার ‘হাই-ভোল্টেজ’ সমাবেশ করে বিজেপি (BJP)৷ শুভেন্দুর ডাকে সাড়া দিয়েই এদিন মঞ্চে হাজির ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), সর্বভারতীয় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় (vijaybargiyo), সহ সভাপতি মুকুল রায় ( Mukul Roy)-সহ একাধিক নেতৃবৃন্দ৷ এদিনের সভায় জনসমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। তৃণমূলকে নিশানা করে এদিন শুভেন্দু বলেছেন, “আমাদের সভায় লোক ঢুকিয়ে আজ ঢিল ছুড়েছে তৃণমূল। কিন্তু সিপিএম ক্ষমতায় থাকার সময় কখনও তৃণমূলের সভায় ঢুকে এই কাজ করেনি। তৃণমূল পথ দেখাচ্ছে”৷

রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন রাজ্যের সর্বস্তরের, সবদলের রাজনৈতিক কর্মীদের বিজেপিতে আহ্বান জানান৷ এদিনের সভায় বিজেপির শীর্ষনেতারা বক্তব্য রাখেন৷

◾মুকুল রায় : সিঙ্গুরের আন্দোলন ভুল হয়েছিল। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে টাটাকে ফেরাতে আবেদন করা হবে৷ আজ এই নন্দীগ্রামের মাটিতেই পরিবর্তনের বাজনা বেজে গেলো৷

◾কৈলাস বিজয়বর্গীয় : নন্দীগ্রামে সেই গণহত্যার পর রাজ্যে এসে মমতাদিদির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি৷ কিন্তু পরে সেই আদবানিজির সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন মমতাদিদি৷ নন্দীগ্রামে সেদিন যে পুলিশ আধিকারিকরা গুলি চালিয়ে ১৪ জনকে হত্যা করেছে, সেই আধিকারিকদের মধ্যে দু’জনকে তৃণমূলে গ্রহণ করেছেন মমতাজি৷ যাদের শাস্তি পাওয়ার কথা, তাঁরা আজ তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন৷

◾দিলীপ ঘোষ : আজ এখানে আমি অতিথিশিল্পী, আসল নায়ক শুভেন্দুদা৷ তৃণমূল-ভাইরাসের ভ্যাকসিন আমরা পেয়ে গিয়েছি৷ এ বছরের মে মাসের পর বাংলায় আর তৃণমূল-ভাইরাস থাকবে না৷ ২০০ আসন নিয়ে বাংলায় সরকার গড়বে বিজেপি৷ আজ যারা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তাদের বিশ্বাসঘাতক বলছেন মমতাদিদি৷ কিন্তু আজ দিদি ভুলে গিয়েছেন, তিনিই একদিন কংগ্রেসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দল ছেড়েছিলেন৷ তৃণমূল রাজ্যজুড়ে পুরভোটে হারার ভয়ে ভোটই করছেনা৷

◾শুভেন্দু অধিকারী : এই সভা আমি ডেকেছিলাম। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। কিন্তু আমাদের কর্মীদের উপর সভায় ঢুকে আক্রমণ হয়েছে৷ সভা যাতে ভণ্ডুল হয়ে যায়, তাই এই কাজ করা হয়েছে। আমি সিপিএম-এর বিরুদ্ধে লড়েছি। সিপিএম কিন্তু কখনও তৃণমূলের মিছিলে ঢিল ছোড়েনি। আমি আরও দু’ঘন্টা এখানে থাকছি৷ আমি চাই সূর্যের আলো থাকতে থাকতে আপনারা বাড়ি ফিরে যান।”

এদিন নন্দীগ্রামের ৪০ শহিদ পরিবারের ৩১ পরিবার শুভেন্দুর সভায় হাজির ছিলেন৷ তাঁদের এদিন বিজেপিতে স্বাগত জানান রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷

Advt

Previous articleকোনও ‘অনিষ্ট’ না ঘটলে সোমবার বিজেপি মিছিলে পা মেলাচ্ছেন শোভন-বৈশাখী
Next articleশনিবার অমিত শাহের সঙ্গে  দিল্লিতে  জরুরি বৈঠক রাজ্যপালের