পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলে ক্রমশই ব্রাত্য, কোণঠাসা অধিকারী- পরিবার

রাজনীতিতে এমনই হয়৷

মাসকয়েক আগেও যা ভাবনারও অতীত ছিলো, আজ সেটাই চরম বাস্তব৷

পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) তৃণমূলের (TMC) সদ্যনিযুক্ত সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র ( Saumen Mahapatra)
বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূলের নতুন কোর কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকে ডাক পাননি দলের দুই সাংসদ, শিশির অধিকারী
(Sisir Adhikari) এবং দিব্যেন্দু অধিকারী:(Dibyendu Adhikari)৷ দু’দিন আগেও অধিকারী- পরিবারকে বাদ দিয়ে ওই জেলায় তৃণমূলের যে কোনও কর্মসূচি বা বৈঠক, সভার কথা ভাবাই যেতো না৷পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলে অধিকারী- পরিবার যে ব্রাত্য হয়ে উঠেছে, তা স্পষ্ট হচ্ছে ক্রমশই৷ তবে এ বিষয়ে জেলা তৃণমূলের কেউই এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি৷

সবেমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। এতবড় দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গেই তাঁর মাথায় গুরুদায়িত্বও চেপেছে৷
রীতিমতো বড় চ্যালেঞ্জ৷ আগামী ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা সংগঠনের বিন্যাস বদলে গিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর অন্যান্য বারের জেলা সফরের সঙ্গে এবারের সফরে বিশাল ফারাক৷ তাই মমতার এবারের সভা চূড়ান্ত সফল করে তুলতে বদ্ধপরিকর সৌমেনবাবু।

প্রসঙ্গত, জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেয়েই শিশির অধিকারীকে সম্মান জানিয়ে সৌমেন মহাপাত্র বলেছিলেন, “শিশির অধিকারী আমাদের প্রণম্য নেতা। তাঁকে সরানো হয়নি। তিনি এখনও আমাদের জেলার চেয়ারম্যান। তাঁর উপদেশ নিয়েই আগামীদিনে চলবো।” বৃহস্পতিবার তিনি ফের বলেছেন,
মুখ্যমন্ত্রীর সভা সফল করতে দলের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারীর সাহায্যপ্রার্থী তিনি। সোমেনবাবুর কৌশলি মন্তব্য, “নন্দীগ্রামে দলনেত্রীর সভা সফল করে তুলতে জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান শিশির অধিকারীর সহযোগিতার খুবই প্রয়োজন”। শিশির অধিকারীকে কি মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ডাকা হচ্ছে?‌ অভিজ্ঞ রাজনীতিক সৌমেন মহাপাত্র সরাসরি উত্তর এড়িয়ে বলেছেন, “আমি শিশিরবাবুকে ডাকবো এটা হয় নাকি?‌ শিশিরবাবু জেলার চেয়ারম্যান। আমি তাঁর অধীনস্থ, সভাপতি। তিনিই আমাকে ডাকবেন।” ওদিকে জেলা তৃণমূলের প্রায় সকলেই জানেন, শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই দলের কর্মসূচিতে ডাকাই হতো না শিশিরবাবুকে।

শুধুই শিশির অধিকারী নন, দলের উপেক্ষার শিকার হচ্ছেন তাঁর আর এক পুত্র দিব্যেন্দুও। তিনি তমলুকের সাংসদ৷ এক্ষেত্রেও ‘‌ভদ্রতা’‌ মিশিয়ে পাল্টা চাল দিয়েছেন সৌমেন মহাপাত্র। বলেছেন, “নন্দীগ্রামে মমতার সভা সফল করতে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুকেও তাঁর প্রয়োজন। নন্দীগ্রাম এলাকা দিব্যেন্দুবাবুর তমলুক কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে। আমি তো সবে দায়িত্ব পেয়েছি। তার আগেই নিশ্চয়ই দলনেত্রীর সভা সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করেছেন দিব্যেন্দুবাবু। আমার মতো তিনিও দলের সৈনিক। তাঁরই এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। তাঁর নেতৃত্বেই তো সব হবে। দিব্যেন্দুবাবু অবশ্যই এ ব্যাপারে তাঁর মতামত দেবেন।”

সব মিলিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলে ডাকসাইটে অধিকারী- পরিবার যে এখন ব্রাত্য, তা একটু একটু করে স্পষ্ট হচ্ছে৷

Previous articleCAA-NRC-NPR-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদী তরুণীর ছবি বিকৃতির অভিযোগ
Next articleফরাসি সুপার কাপ চ‍্যাম্পিয়ন পিএসজি