স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে দিতেই হবে চিকিৎসা, নির্দেশ কলকাতা পুরসভার

স্বাস্থ্যসাথীকে ‘নো রিফিউজ়াল’ প্রকল্প হিসেবে দেখার জন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা । তাদের নির্দেশ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কেউ চিকিৎসা করাতে গেলে ফেরানো যাবে না। পরিষেবা দিতেই হবে।
‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে প্রায় ৬০ লক্ষ পরিবার নতুন করে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখন দু’‌কোটি পরিবারের অন্তত সাড়ে ন’‌কোটি মানুষের বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার কথা। কিন্তু অনেক বেসরকারি নার্সিংহোম, হাসপাতালেই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে চিকিৎসা না-করে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। সেই স্বাস্থ্যসাথীকে ‘নো রিফিউজ়াল’ প্রকল্প হিসেবে দেখার জন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
সেই সমস্যা এড়াতেই শনিবার রাজ্যের সব কর্পোরেট, বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ । পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম ওই  বৈঠকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের স্পষ্ট বার্তা দেন, রোগীদের প্রত্যাখ্যান করলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনুমোদন আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেই রোগীর চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে। সমস্ত বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড প্রযোজ্য বলে বোর্ড লাগাতে হবে।
বৈঠকে কলকাতার কর্পোরেট হাসপাতালগুলির তরফে কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন তুলে সুরাহা চাওয়া হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলির বক্তব্য, তাদের সংস্থার পরিকাঠামো মূলত জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সেই পরিকাঠামো তৈরি করতে খরচও হয়েছে অনেক। তাই সেই পরিষেবার মূল্যও তুলনায় বেশি। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য যে-মূল্য ধার্য হয়েছে, তা খুবই কম। তাতে কলকাতার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়া কঠিন। তাই সরকার কলকাতার হাসপাতালগুলির জন্য প্যাকেজের মূল্য বাড়াক। তাদের আরও দাবি, এখন রাজ্যের সব পরিবারেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা করাতেও মানুষ কলকাতার কর্পোরেট হাসপাতালে চলে আসছেন। ওই কার্ড নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে যে-ভিড় হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে তা সরকারি হাসপাতালকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় সরকার কলকাতার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শুধু জটিল রোগীকেই স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।
জেলার প্রায় ১১০০ নার্সিংহোম, ছোট হাসপাতালের মালিকদের বলে দেওয়া হয়েছে, কোনও ভাবেই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডধারীদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

Previous articleপ্রয়াত ‘তেরো পার্বণ’-এ গোরার দাদা ইন্দ্রজিৎ দেব
Next article‘মান থাকলে তো হানি করা যায়!’ শুভেন্দুর নোটিশ পেয়ে অভিষেকের কড়া আইনি জবাব