গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পর একেবারে শুরুর সময় বিরোধী হিসেবে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়(Rupa Ganguly) দাপট ভোলেনি বঙ্গবাসী। রাজ্যের একাধিক বিডিও অফিস থেকে সরকারি দপ্তর কোমরে আচল গুঁজে প্রতিবাদ আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ে অনেকেই তাকে ‘বিজেপির দিদি’ বলে ডাকত। তবে একুশের ভোটের পারদ যখন চড়চড়িয়ে বাড়তে শুরু করেছে তখন একেবারে নিভৃতে চলে গিয়েছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। রাজনীতি থেকে কার্যত নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া রূপাকে কেন্দ্র করে যখন চর্চা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে ঠিক তখন শনিবার বিজেপির(BJP) পরিবর্তন যাত্রায় হঠাৎ আবির্ভূত হলেন তিনি। দিলীপ ঘোষের(Dilip Ghosh) সঙ্গে পরিবর্তনের রথে চেপে ঘুরে বেড়ালেন মেদিনীপুর। চন্দ্রকোনার জনসভায় দাঁড়িয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হলেও, অতীতের সেই ঝাঁজ কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে রূপার গলায়।

এদিন পরিবর্তনযাত্রা শেষে জনসভায় দাঁড়িয়ে ‘খেলা হবে’ মন্তব্যের পাল্টা দিয়ে শাসক দলকে আক্রমণ করে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা মানুষের সঙ্গে দেখা করি তাদের ভালো মন্দ বোঝার চেষ্টা করি মানুষের সঙ্গে খেলা করি না।’ পাশাপাশি সম্প্রতি বাম ছাত্র-যুবকদের নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গেও মুখ খুলতে দেখা যায় রূপাকে। বাম কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের গোপন বোঝাপড়া রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘ওইদিন বামেদের মিছিলে তৃণমূলের তরফে লোক পাঠানো হয়েছিল। বামেদের যে সংগঠন তাতে এত লোক কখনোই হওয়া সম্ভব নয়।’ একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ওয়ান নেশন ওয়ান রেশন কার্ড’, ‘উজ্জ্বলা যোজনা’ সহ আরো নানান প্রকল্পের প্রশংসা করতে দেখা যায় বিজিবি রাজ্যসভার সংসদকে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্যে লাগুনা হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন আর ক’টা দিন অপেক্ষা করার জন্য রাজ্যে বিজেপি সরকার এলে গোটা দেশের মতোই সমস্ত পরিষেবা পাবে বাংলার জনগণ। তবে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় যাই বলুন না কেন? অতীতের সেই আক্রমনাত্মক রূপা আর বর্তমান রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ে মধ্যে ফারাক বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এদিনের জনসভায়।

আরও পড়ুন:‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ায় জোর, সেনাবাহিনীতে আসতে চলেছে ‘অর্জুন’

উল্লেখ্য বঙ্গ নির্বাচনকে মাথায় রেখে রাজ্যে প্রতি মাসেই জনসভা করে যাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা ও অমিত শাহরা। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সম্প্রতি কোন জনসভাতেই দেখা যায়নি বিজেপির রাজ্যসভার সংসদকে। এহেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের হঠাৎ আবির্ভাব কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের চাপে পড়েই বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুধু তাই নয়, বিজেপির পরিবর্তন যাত্রায় ৪ রাত ৫ দিনের জন্য থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রূপাকে। রূপা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব তাকে যা দায়িত্ব দেবেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন। তবে রাজনীতিতে সঙ্গে দূরত্ব জেতার বেড়েছে তা আর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এর পিছনে কারণ হিসেবে রাজনৈতিক মহলের দাবি, সম্প্রতি লকেট চট্টোপাধ্যায়কে বিজেপি মহিলা মোর্চার সভাপতি পদ দেওয়ার পরেই কার্যত অভিমানে নিজেকে গুটিয়ে নেন একদা শীর্ষ নেতৃত্ব। পাশাপাশি বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে এই মুহূর্তে বিজেপির অন্দরে তৈরি হয়েছে দুটি দল। যার একটি দিলীপ ঘোষের শিবিরে লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। এবং দ্বিতীয় শিবিরে পদ হারানো রাহুল সিনহাদের দলে রয়েছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।