বাবা-মা সহ ৭ জনকে খুন করে স্বাধীন ভারতের প্রথম মহিলা হিসেবে ফাঁসিতে ঝুলতে চলেছেন শবনম

স্বাধীন ভারতে প্রথম মহিলা হিসেবে ফাঁসিতে ঝুলতে চলছেন উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার শবনম বেগম। নৃশংস অপরাধ তার। ফাঁসির আবেদন খারিজ করতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষা করেছিলেন তিনি। তবে সেই আবেদন খারিজ করেছেন কোবিন্দ। এরপরই প্রথম মহিলা আসামীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে মথুরার জেল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই ফাঁসি কাঠ পরীক্ষাও করেছেন নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডের চার অভিযুক্তর ফাঁসি কার্যকর করা পবন জল্লাদ। তবে এখনও তারিখ জানা যায়নি।

কী অপরাধ শবনম বেগমের?

উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার হাসানপুর এলাকার বাওয়ানখেদি গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক শওকত আলির একমাত্র মেয়ে শবনম বেগম৷ ১৪ এপ্রিল, ২০০৮ সালের রাতে প্রেমিক সেলিমের সঙ্গে পরিবারের সবাইকে কুপিয়ে খুন করে সে৷

আরও পড়ুন-কেমন রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর? খোঁজ নিতে উপত্যকায় পৌঁছলেন ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা

শওকত আলির পরিবারে ছিলেন স্ত্রী হাশমি, ছেলে আনিস, রশিদ, পুত্রবধূ আঞ্জুম, মেয়ে শবনম এবং দশ মাসের নাতি আরশ৷ মেয়ে শবনমকে তিনি খুবই আদরের সঙ্গে বড় করেন৷ স্নাতোকত্তরের পর শবমন শিক্ষিকা হিসেবে কাজ শুরু করে৷ তবে তার প্রেম যেন জীবনে ঝড় নিয়ে আসে৷ গ্রামেরই ছেলে সেলিমের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে সে৷ পঞ্চম শ্রেনী পাশ করা সেলিম খানকে শবনম ভালোবেসে ছিলেন। কিন্তু তাদের এই প্রেম মানতে চায়নি পরিবার৷ মেয়েও ছিল নাছরবান্দা৷ তাই সেলিমের সঙ্গে পরামর্শ করে রাতে বাড়ির সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যেত শবনম৷ এমনটা চলে দীর্ঘদিন৷

আরও পড়ুন-কৃষকদের সমর্থন করে ভুল করেছেন দিশা! ঘুরিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ কানহাইয়ার

শেষে একদিন বাড়িতে আসে শবনমের দিদি৷ সেদিন ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর, শবনম ও সেলিম সিদ্ধান্ত নেয় সকলে খুন করার৷ সেই মতো নিজের পরিবারের সদস্যদের কুপিয়ে খুন করে শবনম৷ সকাল হতেই গ্রামে রটিয়ে দেয় যে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে৷ তবে ধীরে ধীরে তার ওপর সন্দেহ হয় পুলিশের। পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ গ্রেফতার করা হয় সেলিমকেও৷ জেরায় ঘটনা স্বীকার করে দু’জনেই৷ সুপ্রিম কোর্টেও ফাঁসির সাজা বহাল রাখে শবনমের৷ প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছেন রাষ্ট্রপতি৷ ফলে পরিবারের সবাইকে খুন করে ফাঁসিতেই ঝুলতে চলেছে শবনম৷

নৃশংস অপরাধের জন্য স্বাধীন ভারতে অনেকেই ঝুলেছেন ফাঁসিতে দড়িতে। কিন্তু তাঁরা সকলেই ছিলেন পুরুষ আসামী। এই প্রথম ফাঁসিতে চড়ানো হচ্ছে এক মহিলাকে। নিম্ন আদালত প্রথমে শবনম ও তার প্রেমিক সেলিম খানকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল। সেই সাজা বহাল রেখেছে দেশের শীর্ষ আদালতও।

Advt

Previous articleহাউসফুল মোতেরা টেস্টের টিকিট, উচ্ছ্বসিত সৌরভ
Next articleবৃষ্টি মাথায় আরামবাগের রোড-শোতেও জনস্রোত: ‘গদ্দার’দের তীব্র কটাক্ষ কুণালের