অবৈজ্ঞানিক দাবি: পতঞ্জলির করোনিলে রামধাক্কা উদ্ধব সরকারের

বিজেপি-বন্ধু ও তথাকথিত যোগগুরু রামদেবকে ‘রামধাক্কা’ দিল মহারাষ্ট্রের উদ্ধব সরকার। জানানো হয়েছে, করোনা প্রতিষেধক ওষুধ বলে রামদেবের (ramdev) সংস্থা পতঞ্জলির দাবি করা ‘করোনিল’ (coronil) মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) বিক্রি করা যাবে না। জানিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। প্রসঙ্গত, বিশ্বের কোথাও এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে কিছু ওষুধ ও সংক্রমণ রুখতে কয়েকটি সংস্থার ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্র। তা সত্ত্বেও রামদেব দাবি করে চলেছেন, তাঁর সংস্থার তৈরি করোনিল নাকি করোনা সারাতে অব্যর্থ। যদিও তার সপক্ষে কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ছাড়পত্র নেই। মহারাষ্ট্র সরকারের বক্তব্য, কেন্দ্রের মোদি সরকার ও বিজেপি দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে কেউ ব্যবসায়িক স্বার্থে কোনও কিছুকে করোনার ওষুধ বলে চালাতে চাইলেই তার অনুমোদন দেওয়া যায় না। জনস্বাস্থ্য তথা মহারাষ্ট্রবাসীর স্বার্থে এধরনের অবৈজ্ঞানিক কাজকর্মকে রেয়াত করবে না রাজ্য সরকার।

আরও পড়ুন : পেট্রোপণ্যের অত্যাধিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইলেক্ট্রিক স্কুটিতে চেপে নবান্নে মমতা, চালক ববি

গত সোমবার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA) করোনিলের করোনা প্রতিষেধক ওষুধ হিসেবে কাজ করার দাবিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার’ বলে ঘোষণা করেছে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হষবর্ধনের কাছ থেকে আইএমএ ব্যাখ্যা চেয়েছে, নিজে একজন চিকিৎসক হয়েও কীভাবে তিনি এই বুজরুকি ও অবৈজ্ঞানিক দাবির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করলেন। শুধু আইএমএ (IMA) নয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও (WHO) রামদেবের ওষুধটি করোনার বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম নয় বলে জানিয়েছে। হু-র অনুমোদন না পেয়েও কীভাবে কেন্দ্রীয় সরকার করোনিলের পৃষ্ঠপোষকতা করছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরাও।

করোনিল নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক প্রসঙ্গে নিজের টুইটে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এমন একটি ভুল জিনিস নিয়ে প্রচার করছেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে করোনিলের ক্ষমতা যাচাই করার ক্লিনিকাল ট্রায়াল নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে আইএমএ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও করোনিল নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিলে বাবা রামদেবের সংস্থাকে। এবার মহারাষ্ট্রে করোনিলের ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন আইএমএ সরব হওয়ায় চাপের মুখে পড়ল কেন্দ্র।

এদিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রামদেবের সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয় করোনার প্রতিষেধক হিসেবে করোনিলকে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রক। এই প্রসঙ্গে রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলির ডিরেক্টর বালকৃষ্ণ জানিয়েছেন, এই ওষুধটির অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকারের ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ডিসিজিআই। এটির সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনও যোগ নেই। কারণ ‘হু’ কোনও ওষুধকে অনুমোদন প্রদান অথবা বাতিল ঘোষণা করতে পারে না।

Advt

Previous articleআসল বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে মালা দিয়ে জঙ্গলমহল সফর শুরু কুণালের, লালমাটির দেশে মানুষের ঢল
Next articleকলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক পদে অবসর গ্রহণের বয়স বাড়ল