নাড্ডার বাড়িতে চলছে বৈঠক, আছেন শাহ, দিলীপ- শুভেন্দুকে নিয়ে চর্চা তুঙ্গে

প্রথম দু’দফার বঙ্গ-ভোটে বিজেপির প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করতে জেপি নাড্ডার (J P NADDA) দিল্লির বাড়িতে চলছে বৈঠক। বৈঠকের গুরুত্ব বাড়িয়ে প্রথম থেকেই হাজির অমিত শাহ (AMIT SHAH) রয়েছেন দিলীপ ঘোষ-সহ (DILIP GHOSH)বুধবার দিল্লি যাওয়া রাজ্য বিজেপির নেতারা এবং কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা৷ সূত্রের খবর, আজ, বৃহস্পতিবার, রাতেই ঘোষণা হতে পারে বিজেপির প্রথম প্রার্থী-তালিকা।

জানা গিয়েছে, বৈঠকের শুরুতে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীকে (SUVENDU ADHIKARY) নিয়ে৷ বঙ্গ-বিজেপির সভাপতি এবার প্রার্থী হবেন কি না এবং শুভেন্দু কোন আসন থেকে লড়বেন, এই দুই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দীর্ঘ কথাবার্তা হয়েছে৷ প্রসঙ্গত, খড়্গপুর-সদর এবং নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ভোট দ্বিতীয় দফায়, আগামী ১ এপ্রিল৷ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিন ১২ মার্চ৷

বঙ্গ-বিজেপির তৈরি যে খসড়া তালিকা টেবিলে ফেলে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে শাহ-নাড্ডার সঙ্গে রাজ্য নেতাদের আলোচনা চলছে, ওই তালিকায় খড়্গপুর-সদর আসনে যে ৩ প্রার্থীর নাম সুপারিশ করা হয়েছে, সেখানে এক নম্বর নাম রয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের৷ মেদিনীপুর-বিজেপির বক্তব্য, একমাত্র দিলীপ ঘোষ প্রার্থী হলেই ২০১৯-এ হেরে যাওয়া খড়্গপুর-সদর আসন পুনর্দখল করতে পারে বিজেপি৷ দিলীপবাবু ২০১৬-র নির্বাচনে খড়্গপুর-সদর আসনে জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন৷ পরে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়ে সাংসদ হন৷ এর পর খড়্গপুর- সদরের উপনির্বাচনে তৃণমূল পরাজিত করে বিজেপি প্রার্থীকে৷ সেই আসন ফিরিয়ে আনতে মরিয়া গেরুয়া শিবির৷ জেলা বিজেপির বক্তব্য, একমাত্র দিলীপ ঘোষ প্রার্থী হলেই এই আসন ফিরবে৷ সে কারনেই খসড়া তালিকায় প্রথমেই আছে রাজ্য সভাপতির নাম৷

দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও এই আসন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি৷ শীর্ষনেতৃত্ব ‘কনফিউজড’, কোন পথে যাওয়া ঠিক হবে ! হাতছাড়া হওয়া খড়্গপুর আসনে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করে পাঠানো হলে, অনেকটাই ঝুঁকি থাকছে৷ বিকল্প হিসাবে রাজ্য সভাপতির জন্য নিরাপদ আসন খোঁজার কথাও আলোচনায় উঠে এসেছে৷ খড়্গপুরের মতো হারা আসনে দিলীপবাবুকে প্রার্থী করতে রাজি নন শীর্ষনেতৃত্বের সিংহভাগ৷ কারন, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও রাজ্য বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মুখ দিলীপ ঘোষই৷ সেই ‘মুখ’-কে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা বাহাদুরির কাজ হবেনা৷ দলের এই অংশ চাইছে, একুশের ভোটে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী না করে, ‘স্টার’ প্রচারক হিসাবে ব্যবহার করা হোক৷ ভোটের ফলপ্রকাশের পর তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতেই পারে। একাধিক পর্যবেক্ষক এদিনের বৈঠকে দৃষ্টান্ত হিসাবে বলেছেন, ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হননি। তৃণমূল ক্ষমতা দখল করার পর উপনির্বাচনে জিতে আসেন মমতা। দিলীপ ঘোষের বেলায় তেমনই ভাবা যেতে পারে৷
শেষ খবর, এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে আজ সন্ধ্যার মধ্যেই ফয়সালা হয়ে যাবে৷

ওদিকে, বিধানসভা নির্বাচনে লড়বেন বলেই জুট কর্পোরেশনের ‘অফিস অফ প্রফিট’-এর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী৷ পূর্ব মেদিনীপুর থেকেই লড়তে চান তিনি৷ সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ শুভেন্দুকে তাঁর পুরোনো কেন্দ্র নন্দীগ্রাম থেকেই প্রার্থী করতে চাইছেন। এই কেন্দ্রেই তৃণমূল প্রার্থী হতে চলেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ওদিকে, এদিন এমন আলোচনাও হয়েছে,আবেগকে প্রাধান্য না দিয়ে তৃণমূলকে ধাক্কা দিতে কৌশলগত কারণে নন্দীগ্রাম থেকে শুভেন্দুকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হোক৷ নন্দীগ্রামের জন্য বরং বড় কোনও চমক দেখানো যেতে পারে। সূত্রের খবর, এখনও এই বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়নি৷

আরও পড়ুন:নয়া সংসদ ভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পর্যন্ত থাকবে গোপন সুড়ঙ্গ পথ

সূত্রের খবর, প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ৬০ আসনের জন্য বিজেপি যে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করবে, তাতে একাধিক সেলিব্রেটির নাম থাকছে৷ বাংলা চলচ্চিত্র ও সিরিয়ালের পরিচিত বেশ কিছু মুখকে দলে নিয়েছে বিজেপি৷ এদের প্রায় সবাই কলকাতা বা লাগোয়া কেন্দ্রের প্রার্থী হতে চাইলেও,বিজেপি এই ‘আবদার’ মানছে না৷ সিনেমা-সিরিয়ালের পরিচিত মুখগুলিকে দূরের জেলার তুলনায় কঠিন কেন্দ্রেই প্রার্থী করে সেই আসন জিততে চাইছে পদ্ম – শিবির৷ এই কারনেই পরিচিত মুখকে শক্ত আসনে প্রার্থী করবে বিজেপি৷ ফলে প্রথম দু’দফার ৬০ আসনের মধ্যে নিশ্চিতভাবেই থাকছে একাধিক সেলিব্রেটির নাম৷

Advt

Previous articleনয়া সংসদ ভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পর্যন্ত থাকবে গোপন সুড়ঙ্গ পথ
Next articleমোদির ব্রিগেডের আগেই শহর মুড়বে মমতার পোস্টার,ব্যানার, ফ্লেক্সে