নাবালিকা ধর্ষণে সিদ্ধহস্ত ৭৯ বছরের গডম্যান! লাল সতর্কতা জারি ইন্টারপোলের

তিনি নাকি ধর্মগুরু! বয়স নয় নয় করে ৭৯ বছর। তাই স্বাভাবিক নিয়মেই ভরসা ছিল অভিভাবকদের। আর সেই সুযোগটাই সুদে আসলে ব্যবহার করেছেন ‘গডম্যান’! নিশ্চিন্তে নিভৃতে একের পর এক
নাবালিকাকে দিব্যি ধর্ষণ করেছেন । ৭৯ বছরের ‘গডম্যানে’র কুকীর্তি কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি এতদিন । যখন হদিশ মিলল তখন স্বঘোষিত গডম্যানের খোঁজে লাল সতর্কতা জারি করল খোদ ইন্টারপোল।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে এই কুকীর্তি চালাচ্ছিলেন তিনি?
বছরের পর বছর ধরে একাধিক নাবালিকা-মহিলাকে নিজের আশ্রমে বন্দি করে কীভাবে ধর্ষণ করতেন?
জানা গিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক হলেই আশ্রমের নাবালিকাকে মুচলেকা দিয়ে স্বেচ্ছায় থাকার কথা ঘোষণা করতে হত। দিল্লির স্বঘোষিত ধর্মগুরু বীরেন্দ্রদেব দীক্ষিতের বিরুদ্ধে এ ধরনের একাধিক অভিযোগ অনেকদিন আগেই উঠেছিল । কিন্তু বয়সের কারণ দেখিয়ে পার পেয়ে যেতেন তিনি । যার নিট ফল, তাঁকে পাকড়াও করতে পারেনি পুলিশ। এ বার ৭৯ বছরের সেই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল লাল সতর্কতা জারি করায় নড়েচড়ে বসেছে সবাই। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দেশ ছেড়ে নেপালে গা-ঢাকা দিয়েছেন বীরেন্দ্র।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর দিল্লির বিজয় বিহার থানার অন্তর্গত রোহিণী এলাকায় তাঁর আশ্রম। আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় নামে দুর্গসমান আশ্রম থেকে চার বছর আগে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে উদ্ধার করা হয়েছিল ৬৭ জনকে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল নাবালিকা। কয়েক জন নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে সেই বছর বীরেন্দ্রর বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছিল পুলিশ। দিল্লি পুলিশের সঙ্গে মহিলা কমিশনের সদস্যরাও সেই অভিযানে সামিল হয়েছিলেন।
নিশ্চয়ই ভাবছেন কী পাওয়া গিয়েছিল সেই সময়?
আশ্রমে তল্লাশিতে দেখা গিয়েছিল, সূর্যের আলো পৌঁছায় না এমন ছোট ছোট কুঠুরিতে গরাদ-বন্দি করে রাখা হত মেয়েদের। আধ্যাত্মিক পথ দেখানোর নামে দিনের পর দিন ধরে চলত ধর্ষণ ও শারীরিক অত্যাচার। আশ্রমে থাকাকালীন নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা সাক্ষাতের কোনও অনুমতি ছিল না আবাসিক মহিলাদের। সেই অভিযানের পর দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। বীরেন্দ্রর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ । বরং দিল্লি পুলিশের একাংশের মদত দেওয়ার মেলে। শুধু তাই নয়, আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে দিল্লি পুলিশ। পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে বীরেন্দ্রর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করে সিবিআই!
২০১৯ সালের জুনে এক নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগে বীরেন্দ্রর বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ করে সিবিআই। তখন সিবিআইয়ের দাবি ছিল, ১৯৯৯ সালে উত্তরপ্রদেশ-সহ দিল্লির রোহিণী এবং কম্পিলে নিজের আশ্রমে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করেন বীরেন্দ্র। সেই সঙ্গে পলাতক ‘গডম্যান’ বীরেন্দ্রর খোঁজখবর দিলে ৫ লক্ষ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে বীরেন্দ্রকে ধরা যায়নি।
এবার তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের লাল সতর্কতা জারি হওয়ায় এবার মুখ লুকানোর জায়গা নেই সিবিআইয়ের। আদৌ কি এই গডম্যান জালে পড়বেন, নাকি অধরাই থেকে যাবেন ? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র ।

Previous articleআগামী সপ্তাহ থেকে ফের প্রচারে মমতা, একাধিক জেলায় রয়েছে কর্মসূচি
Next articleমুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে যাবেন সৌরভ, কবে যাবেন তা নির্দিষ্ট করেননি মহারাজ