মদনের পক্ষে প্রচার, কামারহাটি জমিয়ে দিলেন কুণাল

শীতলকুচিতে চতুর্থ দফার ভোটে যেভাবে আজ কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার ভোটারের মৃত্যু হয়েছে, তা কলঙ্কজনক বলে মন্তব্য করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একযোগে আক্রমণ করে কুণাল বলেন, যাদের কাছে আশা ছিল সুষ্ঠ নির্বাচন পরিচালনা করার, তার বদলে ভিন রাজ্যের, বাছাই রাজ্যের, বাছাই বাহিনীকে এনে বাংলার প্রত্যন্ত এলাকায় ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, গন্ডোগোল করানোর চেষ্টা হচ্ছে, সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

শনিবার কামারহাটিতে মদন মিত্রের সমর্থনে জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ করে কুণাল বলেন, আজ বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং তারপর একটি আত্মরক্ষার তত্ত্ব গোঁজামিল দিয়েও খাড়া করা যাচ্ছে না কেন চালানো হল গুলি। তার প্রশ্ন, কী এমন ঘটনা হল, যে গুলি চালাতে হলো? লাঠিচার্জ দিয়ে হলো না? কাঁদানে গ্যাস কই? যদি ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে হয় সেক্ষেত্রে কাঁদানে গ্যাস না দিয়ে আপনারা গুলি চালাচ্ছেন। তাতে ঘটনাস্থলে চারজন মানুষ মারা যাচ্ছেন , আরও মানুষ গুলিবিদ্ধ হচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করছে। কুণালের সাফ কথা, ভোটের দিন ভোটার মারা গিয়েছেন। বাংলার নাগরিক মারা গিয়েছেন, সহ নাগরিক মারা গিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য মারা গিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য মারা গিয়েছেন। চতুর্থ পর্বে যে কলঙ্কজনক অধ্যায় তারা দেখালেন, আমরা এমনিতেই অনুভব করছি জঙ্গলমহল থেকে উত্তরবঙ্গ যেসব জায়গায় গত লোকসভা ভোটেও কিছু কিছু মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন সেই ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে ফিরে আসছে। নীরবতা পালন দিয়ে যে প্রতিবাদ শুরু, সেই প্রতিবাদ, সেই সমর্থন নিঃশব্দ বিপ্লব হয়ে ইভিএম মেশিনে আছড়ে পড়বে। অন্তত ২২৫টা আসন নিয়ে নবান্নে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করতে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন- “বিজেপিকে কেন ভোট দিতে বলছেন?” প্রতিবাদ করতেই লাভলিকে গুলি করার হুমকি জওয়ানের!

তিনি আরও বলেন, বিজেপি কর্মীরা আগে যাঁদের বিরুদ্ধে চোর অপবাদ দিতেন, এখন তাঁদেরই নেতৃত্বে কাজ করতে কতটা সমস্যা হচ্ছে তা সহজেই বোঝা যায়। তিনি বলেন, বিজেপিতে নয়, প্রকৃত সম্মানের সঙ্গে কাজ করা যায় তৃণমূলে থেকেই। এই নির্বাচন শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার নির্বাচন নয়, কেন্দ্রে যে জনবিরোধী সরকার চলছে সেটাকে ইওলো কার্ড দেখাবার নির্বাচন।

সিপিএমকে কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, কামারহাটিতে নতুন প্রার্থী দিয়েছে তারা। কিন্তু শুনে রাখুন, নতুন প্রার্থী দিয়ে পুরোনো পাপ ঢাকা যায় না। কামারহাটিতে হারবে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। মদন মিত্রের কাছে হেরে বলবে, রাজু বনগেয়া জেন্টেলম্যান।

সিপিএমের লোকেরাই ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। তৃমমূলের ভোট কমেনি, বরং সিপিএমের ভোট কমেছে।পাহাড় থেকে সাগর, কোটি কোটি মানুষের মিছিল থেকে আওয়াজ উঠছে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। কুণাল বলেন, নন্দীগ্রামের মাটি খালি হাতে মমতাকে ফেরাবে না। ২ মে বিপুল ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে জিতে আসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তার কটাক্ষ, কিসের বিশ্বের বৃহত্তম দল বিজেপি? যেখানে ২৯৪ কেন্দ্রে নিজেদের প্রার্থী দিতে পারেননি। এদিক ওদিক থেকে না ধরলে তো ২৯৪টা লোক জোগাড় হয় না, তাদের আবার বিশ্বের বৃহত্তম দল! গরুর গাড়ির আবার হেডলাইট!

বিজেপিকে নিশানা করে কুণাল বলেন, তোমরা দেশে যা খুশি করে বেড়াও, নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহর দৌড় খতম হবে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে। এখানে মা মাটি মানুষ, সাধারণ মানুষের সরকার। সেই জায়গায় দাঁড়িতে আমরা তোমাদের প্রতিহত করব। আগে দিল্লি সামলা, পরে ভাববি বাংলা।

কুণালের তোপ, জয় শ্রী রাম মানুষের পেট ভরাচ্ছে না।পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ছে। জয় শ্রী রাম বললে পেট্রোল ডিজেলের দাম কমছে না। কৃষকরা আন্দোলন করছেন। কৃষকদের মা বোনেরা রাস্তায়।মোদিজির একবার সময় সময় হচ্ছে না একবার ওদের সঙ্গে কথা বলার অথচ দিল্লি থেকে কলকাতা ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছেন মোদি-অমিত শাহ। লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর সময় কোথায় ছিল এইসব চার্টার্ড ফ্লাইট? একদিকে রেল থেকে ব্যাঙ্ক বেচে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, দেশের সর্বনাশ করে দিচ্ছে। জীবন বিমাতেও হাত দিয়েছে। অনেক পুরানো দিনের লোক মদন মিত্র। দলতন্ত্রে বিশ্বাস করে না মদন মিত্র। এবারও তিনি জয়ী হবেন ।

আরও পড়ুন- রক্ত ঝরল চতুর্থ দফায়, জায়গায় জায়গায় আক্রান্ত প্রার্থীরাও

আরও পড়ুন- শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর প্রতিবাদ, মহানগরে সভা বাংলা পক্ষর

Advt

Previous articleশীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর প্রতিবাদ, মহানগরে সভা বাংলা পক্ষর
Next articleকরোনা তাড়াতে মাস্ক ছাড়া বিমানবন্দরে বসে যজ্ঞ করছেন বিজেপির মন্ত্রী! ভাইরাল ভিডিও ঘিরে নিন্দার ঝড়