করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল মহারাষ্ট্রে রাত থেকেই শুরু লকডাউন, উদ্বেগ বাড়ছে অন্য রাজ্যেও

দেশজুড়ে ক্রমশ চোখ রাঙাচ্ছে করোনা ভাইরাস (Coronavirus)। দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বিপজ্জনক করোনা পরিস্থিতি। এই প্রেক্ষিতে সে রাজ্যে লকডাউন জারি করতে বাধ্য হল প্রশাসন। রাজ্যের রাজধানী ভোপালে আজ, মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে শুরু হচ্ছে লকডাউন। জারি থাকবে ১৯ এপ্রিল সকাল ৯টা পর্যন্ত।
লকডাউন চলাকালীন পণ্য ও পরিষেবাগুলি চালুই থাকবে। পাশাপাশি হাসপাতাল, নার্সিং হোম, মেডিকেল ইন্সুরেন্স কোম্পানি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনও দফতর খোলা থাকবে। এছাড়াও পেট্রল পাম্প, ব্যাঙ্ক, এটিএম, দুধের দোকান, সবজির দোকান, ওষুধের দোকানগুলিও খোলা থাকবে। প্রশাসনের তরফে মুদিখানার দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও তা শুধুমাত্র বাড়িতে সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে লকডাউন জারির ব্যাপারে কিছুদিন আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, মানুষ যেহেতু করোনায় সুরক্ষাবিধি মানছে না, তাহলে লকডাউনের জন্য প্রস্তুত থাকুন। টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ঠাকরে। করোনা ঠেকাতে লকডাউনের মতো নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। প্রশাসনকে লকডাউনের জন্য প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের ক্ষেত্রে তাঁদের অফিসে যাওয়ায় ছাড়পত্র দিয়েছে প্রশাসন। এছাড়াও বিদ্যুৎকর্মী, জলকর্মী ও কাঠের মিস্ত্রিদের কাজের ক্ষেত্রেও ছাড় দিয়েছে প্রশাসন। নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে কাজের ছাড়পত্র দেওয়া হলেও তাঁদেরকে লকডাউন চলাকালীন সেখানেই থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লকডাউনের পথে না হেঁটে ‘টিকা উৎসব’-এর পরামর্শ দিলেও করোনা সংক্রমণে জেরবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাতই। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি। করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। বর্তমানে গুজরাতের সুরাটে নিত্যদিন স্বাভাবিক ভাবে মৃতের পাশাপাশি করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় শতাধিক।
সোমবার ফের এরাজ্যে ৪৫১১ জন করোনা সংক্রামিত হলেন।এই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় কড়া অবস্থান নিল নবান্ন। নবান্নের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, এদিন থেকেই ভোট মিটে যাওয়া ১০ জেলায় নয়া কোভিডবিধি মানতে হবে।
গত বছর করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালগুলি যে ব্যবস্থা নিয়েছিল, তার থেকে ২০ শতাংশ বেশি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা হাসপাতালগুলিকে বলা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। সোমবার ভোট মিটে যাওয়া ১০টি জেলার প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার করোনায় সংক্রামিত হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন, শিলিগুড়ি পুরনিগমের চম্পাসারির বাসিন্দা সুধীর রায় (৪১) এবং মাটিগাড়া থানার শিবমন্দিরের বাসিন্দা অশোক নাগ (৬৯)।
অন্যদিকে, এদিন দার্জিলিং জেলায় ৭১ জন করোনায় সংক্রামিত হয়েছেন। শিলিগুড়ি পুরনিগম এলাকায় সংক্রামিত হয়েছেন ৫৪ জন। এর মধ্যে দার্জিলিং জেলার অধীনে থাকা ওয়ার্ডগুলিতে ২৮ জন এবং বাকি ২৬ জন জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা ওয়ার্ডগুলির বাসিন্দা। অন্যদিকে, এদিন মাটিগাড়ায় ১৯ জন, নকশালবাড়িতে ১০ জন, খড়িবাড়িতে তিনজন, দার্জিলিং পুরসভা এলাকায় পাঁচ জন, তাগদা ও সুখিয়াপোখরিতে দুজন করে এবং বিজনবাড়ি ও সুকনায় একজন করে সংক্রামিত হয়েছেন।

Advt

 

 

Previous articleরেকর্ড ছাড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ, রাজ্যে এল চার লক্ষ ভ্যাকসিন
Next articleFAKE: শীতলকুচি নিয়ে বিজেপি নেতাদের মিথ্যাচার ফাঁস, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড়