Sunday, August 24, 2025

ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের ঘরে ফেরালেন কুণাল

Date:

Share post:

ভোট পরবর্তী হিংসার খবর আসছে রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বাগমারির নতুনপল্লি এলাকায় ঘরছাড়া বিজেপি (Bjp) কর্মীদের ঘরে ফেরালেন তৃণমূল (Tmc) মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।

ঘটনার সূত্রপাত নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর। অভিযোগ, বিশ্বনাথ সিং (Biseanath Singh) নামে ওই বিজেপি কর্মীর দোকান ভাঙচুর করা হয়। তাঁকে মেরে পাড়া থেকে বের করে দেওয়া হয়। তার সঙ্গে তারই এক আত্মীয় এবং একজন বিজেপি কর্মী কেউ এলাকাছাড়া করা হয়। কোনও রকমে কুণাল ঘোষের নম্বর জোগাড় করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো ঘটনা বলেন বিশ্বনাথ। মঙ্গলবার সকালে, এলাকায় যান কুণাল। বিধায়ক সাধন পান্ডের (Sadhan Pandey) সঙ্গে কথা বলেন কুণাল। তিনি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেন। তারপর বিশ্বনাথকে নিয়ে যান তাঁর এলাকায়। তাঁদের দেখতেই স্থানীয় বাসিন্দারা বেরিয়ে আসেন।

তাঁদের অভিযোগ, ফল প্রকাশের বেশ কয়েকদিন আগে থেকে এলাকায় তাণ্ডব করছিলেন বিশ্বনাথ সিং ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। “ভোটের পরে দেখে নেব। তৃণমূলীদের ঘর থেকে বের করে মারব”- বলে হুমকিও দিয়েছিলেন। স্থানীয়দের মহিলাদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করেছেন। যার জেরে ফল প্রকাশের পরে জনরোষ গিয়ে পড়ে বিশ্বনাথের উপর। তাঁর দোকানে ভাঙচুর করে তাঁকে মেরে পাড়া ছাড়া করা হয়। যদিও ওই পরিবারের অন্য সদস্যরা পাড়াতেই আছেন। তাঁদের কোনো ভাবে কোনো ক্ষতি করা হয়নি।

সে সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল যুব নেতা জয়-সহ অন্যান্যরা। তাঁরাও বিশ্বনাথের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয়, জয় জানান এই পরিবারটিকে এলাকায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য সবরকম সাহায্য করেছেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পান্ডে। বিশ্বনাথ ও তাঁর ভাইকে সরকারি আবাসনের ব্যবস্থা করে দেন সাধন পান্ডে। আর এখন বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে সাধন পান্ডেকে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন বিশ্বনাথ। এতটাই নীতিহীন তিনি।

তাঁর ব্যবহারের জন্য বিশ্বনাথ সবার সামনে ক্ষমা চান। কুণাল ঘোষকে তিনি জানান, বিজেপিতে গিয়ে ভুল করেছেন। আর কোনদিন করবেন না। শুধু তাই নয়, সবার সামনেই তিনি স্বীকার করেন এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য বিজেপির তরফ থেকে তাঁদের প্রত্যেকক ২০০০টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। টাকার লোভেই তিনি একাজ করেছেন বলে কবুল করেন বিজেপি কর্মী। এমনকী, তাঁর বাবা-মা স্বীকার করেন, যে ছেলে বদ সঙ্গে পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের কথা শোনেননি। প্রাক্তন সাংসদ তাঁকে প্রশ্ন করেন, বিপদে পড়ে বিজেপি নেতারা যাঁরা থাকে টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের ফোন করেনি বিশ্বনাথ? বিজেপি কর্মী জানান, নেতারা কেউই তাঁর ফোন ধরেনি।

এরপরে কুণাল ঘোষ বলেন, এলাকায় একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বসবাস করুন বিশ্বনাথ, ব্যবসা করুন। তবে এলাকাবাসীর সঙ্গে সম্প্রীতি রক্ষা করে চলতে হবে তাঁকে। যে মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে অভব্য আচরণ এবং ধাক্কা মারার অভিযোগ কলেছিলেন তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে ক্ষমা চেয়ে নেন বিশ্বনাথ। এমনকী, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে এখনই তাঁকে দলে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন প্রাক্তন সাংসদ। তিনি বলেন, এটা কোনো তৃণমূল-বিজেপি গোষ্ঠী সংঘর্ষের বিষয় নয়। এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর প্রতিবাদেই জনরোষ গিয়ে পড়েছে বিজেপি কর্মীর উপর। তিনি বলেন, নাড্ডা-শাহরা এসে দেখে যান ভোটের আগে তাঁদের উস্কানিতে বিজেপি কর্মীরা এলাকায় যে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন, তার কী পরিণতি? এখন বিজেপি নেতাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তৃনমূল মুখপাত্রকেই বিজেপি কর্মীদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করে দিতে হচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষকেই মিষ্টিমুখ করিয়ে মধুরেণ সমাপয়েৎ করেন কুণাল ঘোষ। জানিয়ে দেন করোনা পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক ভাবে থাকতে হবে। মেনে চলতে হবে কোভিড বিধি।

আরও পড়ুন:মমতার শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বুদ্ধদেব, বিমান, দিলীপ, সৌরভও

Advt

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...