কোভিড কেড়ে নিল সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দীর্ঘ এক মাসের বেশি হাসপাতালে লড়াই চালানোর পর রবিবার রাত ৯.২৫ মিনিট নাগাদ বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অঞ্জনের মৃত্যু বাংলা সাংবাদিকতা জগতে নিশ্চিত এক নক্ষত্রপতন। মাত্র ৫৬ বছর বয়সে নিভে গেল জীবনদীপ। ৪৮ ঘন্টা আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাইকে হারিয়েছেন। আর আজ, রবিবার রাতে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় হারালেন তাঁর সহোদরকে।
১৯৬৫ সালে জন্ম অঞ্জনের। আসানসোলে জন্ম। স্কুলের পড়াশোনা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে। সাফল্যের সঙ্গে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে। স্নাতক, স্নাতকোত্তর দুই-ই এখান থেকে। বিষয় ছিল বাংলা ভাষা। শুধু ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ছিলেন তিনি তাই নয়, ছিলেন গোল্ড মেডেলিস্ট প্রাপকদের মধ্যে অন্যতম রত্ন।
প্রায় ৩৩ বছরের বেশি অঞ্জনের সাংবাদিকতা জীবনের শুরু আনন্দবাজার থেকে। কলকাতায় কাজ শুরু। পরে দিল্লিতে গিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এরপর হায়দরাবাদে ইটিভিতে যোগ। ফিরে এসে আকাশ বাংলায়। ২০০৬ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর বিশাল জয়ের বছরে অঞ্জন এলেন জি-২৪ ঘন্টায়, ইনপুট এডিটর। ৯ বছর কাজ করার পর ২০১৫ সালে ফের আনন্দবাজার। সেবার ডিজিটালের এডিটর। ২০১৯-এ ফিরলেন জি-২৪ ঘন্টায়, এবার এডিটর।
বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কোভিডেও আক্রান্ত হন। এছাড়াও শরীরে কিছু জটিলতা ধরা পড়ে। ১৪ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। নির্বাচন চলাকালীন জেলায় জেলায় ঘুরছিলেন। সেইসময় সংক্রমণ ধরা পড়ে। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছিলেন। কিন্তু মাত্র তিন দিন বাড়িতে থাকার পর ফের জ্বর আসায় আবার হাসপাতালে ভর্তি হন। এইচডিইউতে ভর্তি করা হয়। এই সময়ে ফুসফুসে তাঁর সংক্রমণ ধরা পড়ে।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এইচডিইউ থেকে প্রথমে ভেন্টিলেশনে ও পরে একমো ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়। লড়াই ক্রমশ যে কঠিন হয়ে আসছিল, তা বোঝাই যাচ্ছিল। তবু আশা ছাড়েননি কেউ। কিন্তু সকলকে আশাহত করে সংবাদ জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র অঞ্জন চলে গেলেন। রেখে গেলেন স্ত্রী অদিতি ও কন্যাকে।
আরও পড়ুন- জ্বর নিয়ে বেলেঘাটা আইডি’তে ভর্তি কবি জয় গোস্বামী