পুরনো লজঝড়ে অ্যাম্বুলেন্সও মন্ত্রীর হাতের ছোঁয়ায় ঝকঝকে নতুন!

মন্ত্রীর হাতের ছোঁয়ায় রুমালও বেড়াল হতে পারে! পুরনো লজঝড়ে অ্যাম্বুলেন্সও হয়ে পড়ে ঝকঝকে নতুন! ঠিক যেমনটি হল বিহারে। মোদির মন্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডের সাক্ষী থাকল বক্সার জেলা।

রীতিমতো ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে বছর দু’য়েকের পুরনো বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্সকে উদ্বোধন করলেন মন্ত্রী। তিনি কোভিড মহামারির মোকাবিলায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি অশ্বিনীকুমার চৌবে।
মন্ত্রীর এই ‘জাদুগরি’ কাণ্ডে বিস্মিত গোটা দেশ। কড়া সমালোচনার সুর বিরোধীদের গলায়। কেউ কেউ বলছেন, ‘বিজেপি আর ধাপ্পাবাজি কথা দু’টো মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। মহামারির গভীর সঙ্কটকে নিয়েও ধাপ্পাবাজি করছে বিজেপি !’ তবে যাঁকে নিয়ে এই ‘অ্যাম্বুলেন্স-বিতর্ক’ সেই অশ্বিনী কুমারের এ ব্যাপারে তাঁর কোনও মন্তব্য মেলেনি।

বক্সারের এমপি অশ্বিনীকুমার। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে জয়ী হয়ে মোদি মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয় তাঁর। সেই সময় ভোট-রাজনীতির ফসল ছিল ছ’টি অ্যাম্বুলেন্স। সেগুলি অশ্বিনীকুমারকে দিয়েছিল বিহারে এসজিভিএন কোম্পানি নামের একটি সংস্থা। প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্সই বক্সার জেলার স্বাস্থ্যকমিটির হাতে তুলে দিয়েছিলেন অশ্বিনীকুমার। সে সময় তাঁর এই উদ্যোগ বেশ প্রশংসিত হয়। নির্বাচনী প্রচারও বেশ জমিয়ে দেন তিনি।
ভোটে হইহই করে জেতেন অশ্বিনীকুমার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় ঠাঁইও হয় তাঁর। কিছুদিন পর জেলা স্বাস্থ্য কমিটির কাছে এক নির্দেশিকা পাঠান তিনি। সেখানে অশ্বিনীকুমার স্পষ্ট নির্দেশ দেন—অ্যাম্বুলেন্সগুলি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হোক। তাঁর এই নির্দেশের কথা জানাজানি হতে বেশি সময় লাগেনি। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বক্সারের মানুষ। অ্যাম্বুলেন্সগুলি আর বক্সারের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সাহস দেখায়নি এসজিভিএন।

গত প্রায় একবছর ধরে অ্যাম্বুলেন্সগুলি পড়ে ছিল সর্দার হাসপাতালের ক্যাম্পাসে। রোদ-বৃষ্টিতে সেগুলি একরকম বাতিল হওয়ার জোগাড়। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল বিহার। কোভিড রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অ্যাম্বুলেন্স নেই। অক্সিজেন নেই। অগত্যা সেই পুরনো অ্যাম্বুলেন্সগুলির গায়ে মোদির ছবি লাগানো স্টিকার সাঁটিয়ে বর্ণাঢ্য উদ্বোধন করলেন অশ্বিনীকুমার।

Advt

Previous article“রোজ গোমূত্র পান করেই করোনামুক্ত,” বিতর্কিত বয়ানে ফের শিরোনামের সাধ্বী প্রজ্ঞা
Next articleচার্জশিট পেশের পরেও হেফাজতের আর্জি কেন? সিবিআইকে প্রশ্ন আদালতের