বেনজির ! নারদা- চার্জশিটে সাক্ষী ধনকড়, বিস্ময় সর্বত্র

CBI-এর পেশ করা নারদা-চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে নাম আছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের৷ এই ঘটনায় বিস্মিত আইনজীবী মহল৷

নারদ-মামলায় (Narada) ৪ নেতা-মন্ত্রী এবং এক IPS অফিসারের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট CBI জমা দিয়েছে, তাতে বেনজির ভাবে সাক্ষী (prime witness) তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Governor Jagdeep Dhankhar)।

আদালত সূত্রে খবর, মোট ৬১ জন সাক্ষীর নাম আছে চার্জশিটে৷ আর ৫২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে বাংলার রাজ্যপালকে। এই ঘটনাকে বেনজির হিসাবে চিহ্নিত করেছে আইনি মহল। অতীতে এ রাজ্যে কোনও মামলায় রাজ্যপালকে সাক্ষী হিসেবে কখনই দেখা যায়নি।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সাক্ষী হিসাবে তাঁর নাম চার্জশিটে থাকায় ট্রায়াল চলাকালীন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা নিশ্চিতভাবেই ধনকড়কে কাঠগড়ায় তুলে জেরা করার সুযোগ পাবেন৷এই মামলার বিচার চলার সময়ও তিনি যদি রাজ্যপাল থাকেন তাহলেও জেরার মুখে তাঁকে দাঁড়াতে হবে৷ তখন তিনি কোনও পদাধিকারী নন, নিতান্তই একজন সাক্ষী হবেন৷ আদালতের প্রশ্নের মুখেও ধনকড়কে পড়তে হতে পারে৷ দেশের কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল এইভাবে রাজ্যপাল পদের অমর্যাদা ঘটিয়েছেন কি’না, তা কেউই মনে করতে পারছেন না৷ রাজনৈতিক মহলের ধারনা, রাজ্যপালকে সাক্ষী তালিকায় রেখে মামলার গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। গত সোমবার নারদ- মামলায় ফিরহাদ হাকিম-সহ রাজ্যের ৪ নেতা-মন্ত্রীকে CBI গ্রেফতার করেছে৷ সেইদিনই এই মামলার চার্জশিট পেশ করেছে তদন্তকারী সংস্থা ৷

সাক্ষীর তালিকায় রাজ্যপালের নাম থাকায় তুমুল চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে আইন মহলে। প্রশ্ন উঠেছে,
◾রাজ্যের রাজ্যপাল কি নিম্ন আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেন ?
◾কোন আইনি যুক্তিতে রাজ্যপালকে সাক্ষী তালিকায় রাখা হলো?
◾ ট্রায়ালে তো রাজ্যপালকে কোনও প্রশ্নের জবাবদিহিও করতে হতে পারে আদালত বা বিপক্ষের আইনজীবীর কাছে৷ আইনগতভাবে তা কি সম্ভব ?
◾ট্রায়াল কোর্টের একজন বিচারক এবং সাংবিধানিক পদে থাকা রাজ্যপাল কার ক্ষমতা ও এক্তিয়ার বেশি?

এ প্রসঙ্গে হাইকোর্টের একাধিক বিশিষ্ট আইনজীবীর অভিমত, বলেন, বেনজির ঘটনা। সংবিধানের সঙ্গে খেলা চলছে৷ রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক রক্ষাকর্তা। তিনি গ্রেফতারিতে অনুমোদন দিয়েছেন বলে হয়তো তাঁকে সাক্ষী তালিকায় রাখা হয়েছে। আদালত চাইলে তাঁকে কোর্টে উপস্থিত হতেই হবে। রাজ্যপালের সাক্ষ্যগ্রহণে কোনও আইনি বাধা নেই। আদালত চাইলে রাজ্যপালের কাছে গোটা বিষয়টি জানতেও চাইতে পারে৷ তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণে আদালত কমিশনও গঠন করতে পারে। তবে রাজ্যপালের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রয়োজন আছে কি না, সে সিদ্ধান্ত আদালত নেবে।

আরও পড়ুন:শারীরিক টানাপোড়েনের মাঝেই সুব্রত-ফিরহাদরা তাকিয়ে কোর্টের দিকে

Advt

Previous articleশারীরিক টানাপোড়েনের মাঝেই সুব্রত-ফিরহাদরা তাকিয়ে কোর্টের দিকে
Next articleনারদ-মামলার ‘ট্রায়াল’ হাইকোর্টে করতে চায় CBI