তোমার দেখা নাই রে… দুটি নিরুদ্দেশ সম্পর্কিত ঘোষণা আর খুঁজে দেওয়ার অনুরোধ

একটি নিরুদ্দেশ সম্পর্কিত ঘোষণা…

প্রথম ঘোষণা :

বয়স ৫০-এর আশপাশে।

উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি।

প্রাক্তন বিধায়ক। প্রাক্তন মন্ত্রী।

বিধানসভা ভোটের মুখে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৫-এর নিচে নেমে যাচ্ছিল। তাই দমবন্ধ করা পরিস্থতি থেকে বাঁচতে পদ্মাসনে বসেছিলেন।

নিঃশ্বাস নিয়ে যখন প্রশ্বাস ছাড়লেন, তখন দেখলেন আমও গিয়েছে, ছালাও গিয়েছে। যে আসনে এক লাখের বেশি ভোটে ৫ বছর আগে জিতেছিলেন, একুশের পাল্টানোর স্বপ্ন দেখা ভোটে হেরেছেন ৩১ হাজারের বেশি ভোটে!

রাজনৈতিক মহল তো পরের কথা, নেতার প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার দল বিজেপির মধ্যেই প্রশ্ন, কোথায় গেলেন বিপ্লবী, বিদ্রোহী প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়? হারের পর নাকি গৃহবন্দি। মানুষের জন্য কাজ করার কথা বলেছিলেন বিধায়ক পদ ছেড়ে রাজভবনের গেটে দাঁড়িয়ে, চোখে জলও ছিল। কিন্তু মানুষ যখন করোনাকালে কাঁদছেন, তখন কোথায় জনতার সেবক? যাঁকে দলে নিতে অমিত শাহের দল চার্টার্ড প্লেন পাঠিয়েছিল দিল্লি থেকে, তাঁকে খুঁজতে ডোমজুড়ের অলিতে গলিতে কেন সিসিটিভি লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিজেপিরই লোকজন? হেস্টিংসে বসে বিজেপির তরুণ তুর্কি নেতা বলছেন, দলবদলুরাই শেষ করে দিল। এলাকায় আদি বিজেপি নেতারা ক্ষেপে রয়েছে। এখন পা ফেলাটাই দুষ্কর। তার উপর হাওড়ায় বিজেপির খাতা শূন্য হওয়ায় মান সম্মান ধুলোয় মিশেছে।

আর এমবিএ পাশ করা রাজীব বাড়ির শোওয়ার ঘরে পাঞ্জাবির হাত গোটাতে গোটাতে ভাবছেন, ম্যানেজমেন্ট পড়েও সবকিছু কেন ঠিকঠাক ম্যানেজ হলো না! যাঁর হাত ধরে ঘর বদলেছিলেন, তিনিও তো মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন নারদের ধাক্কায়। তাহলে? ‘আমার কী হবে’… সৌমিত্রদের গাওয়া গানটা যে কোনওদিন রেকর্ডিংও করে নিতে পারেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

দ্বিতীয় নিরুদ্দেশ সম্পর্কিত ঘোষণা :

বয়স ৫০-এর নিচে।

উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির মতো।

পেশা অভিনয়।

রাজনীতি পাগলে মতো টানে!!

ভোটের আগে সরকারি পদে ছিলেন।

আর ভোটের হাওয়া গরম হতেই ক্যানেস্তারা বাজানো শুরু। মাছের জাল নিয়ে বসে থাকা দিল্লির টোপে পড়লেন বললে ভুল হবে, ধরা দিলেন। দলবদলু রুদ্রনীল ঘোষ।

প্রার্থী হয়ে ভোটে নামলেন। হাবভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, শুধু দফতর পাওয়ার অপেক্ষা। বাংলাকে একাই সাজিয়ে দেবেন।কিন্তু তাঁর সিনিয়র অভিনেতা, সুপার স্টারের ছবির বিখ্যাত ডায়ালগটাই সত্যি হয়ে গেল… পাবলিকের মার, কেওড়াতলা পার…

যিনি দুদিন আগে রাজ্য বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন, রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু ভাবছিলেন না, চার্টার্ড ফ্লাইট মিস করে যিনি পরের ফ্লাইটে গিয়ে অমিত শাহের হাত থেকে পতাকা নিলেন, তাঁর সব বিপ্লব শেষ হয়ে গেল জনতা-জনার্দনের থাপ্পড়ে। বলে দিলেন এবার মন দিয়ে অভিনয় করব। তাঁর সমসাময়িক বন্ধু অভিনেতা যা শুনে বললেন, লক ডাউনে স্টুডিও পাড়াও তো বন্ধ। তাহলে? আর শেষ ৬ মাস ধরে যা করলেন, সেটা তো চড়া দাগের অভিনয়। উনি তো অভিনয়ের মধ্যেই ছিলেন।

প্রশ্ন একটাই, দুই বিপ্লবী-বিদ্রোহী রাজীব-রুদ্রনীল তো সোশ্যাল মিডিয়ায় রোজই কিছু না কিছু করতেন। সেটাও কেন বন্ধ হয়ে গেল? বিজেপির এক রাজ্য নেতা হাসতে হাসতে বললেন, আমরা এখন ওই গানটা গাইছি… তোমার দেখা নাই রে… গানটা ভাইরাল হলে নিশ্চিত কানে যাবে। তারপর নিশ্চয়ই ওরা দুজন ওই গানটা গাইতে গাইতে আসবেন… মনে পড়ে রুবি রায়…

আরও পড়ুন:তৃণমূল নেতার অসুস্থ স্ত্রীর পাশে ‘রেড ভল্যান্টিয়ার্স’ 

 

Advt

Previous articleতৃণমূল নেতার অসুস্থ স্ত্রীর পাশে ‘রেড ভল্যান্টিয়ার্স’ 
Next articleঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ সামলাতে পুরোদমে প্রস্তুত বিদ্যুৎ দফতর