দেশে টিকার আকাল আর অন্য দেশে দান করা ভ্যাকসিন পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে!

করোনার (corona) দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগাম সতর্কতাকে পাত্তা না দিয়ে ফেব্রুয়ারিতেই দেশে করোনা মুক্তির সাড়ম্বর ঘোষণা করেছিল মোদি সরকার (modi govt.)। পাশাপাশি বিশ্বজোড়া নাম কিনতে ভ্যাকসিন কূটনীতি (vaccine diplomacy) নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। প্রতিবেশী দেশগুলিতে ফ্রিতে করোনা ভ্যাকসিন পাঠিয়ে ভারত সরকার কীরকম মহৎ কাজ করছে তা নিয়ে আত্মপ্রচারের ঢাক পিটিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। দেশের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত টিকার বন্দোবস্ত না করেই বিদেশে টিকা পাঠানোর পর দেশ আজ ভয়ংকর টিকা সংকটের মুখে পড়েছে। লাগাতার সংক্রমণের মধ্যে গত দুমাস ধরে দেশের সব রাজ্যকেই এই পরিস্থিতি সামলাতে হচ্ছে। চাইলেও অমিল টিকা, ঘাটতি পূরণে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে ব্যবধান বারবার বাড়ানো হচ্ছে, বেশি টাকা খরচ করেও সময়মত টিকা পাওয়ার গ্যারান্টি নেই! কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন দুই টিকার নির্মাতারাই এত কম সময়ে বিপুল জোগানের অপারগতা স্বীকার করেছেন। অথচ যে ভ্যাকসিন কূটনীতিতে ভর করে বিশ্ববাজারে ভাবমূর্তি নির্মাণে ব্যস্ত ছিল মোদি সরকার, সেই টিকা অব্যবহৃত হয়ে পড়ে থেকে কীভাবে নষ্ট হচ্ছে সেই তথ্য জানলে চোখ কপালে উঠবে।

দেশে যখন ভয়াবহ টিকা সংকট তখন প্রতিবেশি দেশ আফগানিস্তানে (Afghanistan) ভারতের পাঠানো লক্ষ লক্ষ ডোজ কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন বাক্সবন্দি হয়ে পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে প্রায় ৫ লক্ষ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন ফ্রিতে পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। এর সিংহভাগই এখন অব্যবহৃত হয়ে পড়ে থেকে নষ্ট হওয়ার মুখে। জানা গিয়েছে, জুনের প্রথম সপ্তাহেই আফগানিস্তানে পাঠানো ফ্রি করোনা টিকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, তার পর আর সেগুলি ব্যবহার করা যাবে না, ফেলে দিতে হবে। অথচ আফগানিস্তানের মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ এপর্যন্ত টিকা নিয়েছেন। মূলত কুসংস্কার ও সচেতনতার অভাবই সেদেশে আমজনতার টিকা অনীহার কারণ। সরকারি স্তরে প্রচার করেও লাভ হয়নি। সেখানকার মানুষের ধারণা, ভারতেই যদি এত মানুষ করোনা আক্রান্ত হয় তাহলে ভারতের পাঠানো টিকা নিয়ে লাভ কী? প্রচার করেও মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে ঘাটতি থেকে গিয়েছে বলে মানছেন আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিক ডা. মহম্মদ সারোয়ার। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই কোন আক্কেলে ৫ লক্ষ ডোজ টিকা আফগানিস্তানে পাঠিয়ে দিল মোদি সরকার? সেই টিকার প্রায় ৯০ শতাংশই অব্যবহৃত হয়ে নষ্ট হতে বসেছে আর এদেশে এখন টিকার হাহাকার!

আরও পড়ুন- রাজ্যে এল কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের ৭ লক্ষের বেশি ডোজ

Advt

 

 

Previous articleটানা বৃদ্ধির পর অবশেষে ধাক্কা খেল শেয়ারবাজার, ৮৫ পয়েন্ট নামল সেনসেক্স
Next articleবেহালা পলিটেকনিক কলেজে সেফ হোমের উদ্বোধনে পার্থ-রত্না