তামিলনাড়ুতে বেনজির বিয়ে ১৩ জুন, পাত্র সোশ্যালিজম, পাত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বিস্মিত হতেই পারেন৷ কিন্তু কিছুই করার নেই৷ ঘটনা তো এমনই৷

তামিলনাড়ুর সালেম জেলা সিপিআইয়ের সম্পাদক লেনিন মোহন৷ এই লেনিনের তিন ছেলে। নাম, কমিউনিজম, লেনিনিজম এবং ছোট ছেলে সোশ্যালিজম।

ওদিকে সালেম-এর বিশিষ্ট এক কংগ্রেস নেতা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে নাতনির নাম রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নাম যতই চোখ কপালে তোলার মতো হোক, খবর কিন্তু এটা নয়৷ ব্রেকিং খবর, আগামী ১৩ জুন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন সোশ্যালিজম এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

বিষয়টি হজম করতে একটু সময় লাগতেই পারে৷ কিন্তু সত্যিই ১৩ জুন পাত্র সোশ্যালিজম ও পাত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চারহাত এক হচ্ছে তামিলনাড়ুর সালেমে। ঢাক-ঢোল- সানাই বাজিয়েই বিয়ে হবে। অতিমারির কারণে কোভিড- প্রোটোকল মেনে শুধুমাত্র দুই পরিবারের মধ্যেই বিবাহের অনুষ্ঠান সীমাবদ্ধ থাকছে। ছাপা কার্ড দেওয়া সম্ভব হয়নি আত্মীয়দের। ইতিমধ্যেই ভার্চুয়াল কার্ড বিলি হয়ে গিয়েছে৷ সেই কার্ড ভাইরালও হয়েছে নেট দুনিয়ায়৷ ওদিকে পাত্রের সিপিআই নেতা বাবা লেনিন মোহন দলের মুখপত্র ‘জনশক্তি’- তে ছেলের বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে দিয়েছেন। এই বিয়ে নিয়ে ইতিমধ্যেই মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে৷

বিয়ে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই দুই পরিবারের মধ্যে একরাশ খুশির আবহ তৈরি হয়েছে। পরিবারে খুশির হাওয়া লাগলেও গোটা দেশ তাজ্জব হয়েছে পাত্র-পাত্রীর নামে৷

ছেলেদের এমন নাম কেন রাখলেন কেন ? দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘গর্বিত’ বাবা লেনিন মোহন বলেছেন, “সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সকলেই বলতে থাকেন, দুনিয়া থেকে কমিউনিজম অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে গোটা দর্শন-ই। সেই সময় দূরদর্শনে এই খবরই দেখানো হত। আমার স্ত্রী তখন সন্তানসম্ভবা। বড় ছেলের জন্মের পর তাই ঠিক করলাম ছেলের নাম রাখবো ‘কমিউনিজম’৷ আমি এখনও বিশ্বাস করি পৃথিবীতে মানবসভ্যতা যতদিন থাকবে, কমিউনিজমের দর্শনও ততদিনই থাকবে।”

লেনিন মোহনের কাট্টুর গ্রামে অধিকাংশ মানুষই কমিউনিজম- দর্শনে বিশ্বাসী। আর তাই তাঁদের গ্রামে ‘রাশিয়া’, ‘মস্কো’, ‘চেকোস্লোভাকিয়া’, ‘রোমানিয়া’, ‘ভিয়েতনাম’ নামের ছেলে-মেয়ের সংখ্যাও কম নয়৷ একইসঙ্গে লেনিন মোহনের ঘোষণা, “আমরা সকলেই চাই আমাদের ছেলে-মেয়েরা ভবিষ্যতে কমিউনিজম- দর্শন বহন করুক। আমার এক নাতির নাম রেখেছি মার্কসিজম। ভবিষ্যতে নাতি-নাতনি যাই হোক, তাঁর নাম রাখব ‘কিউবা।”

অপরদিকে পাত্রী পি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সালেম জেলারই এক দাপুটে কংগ্রেস পরিবারের মেয়ে৷ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেস নেতা দাদু নাতনির নাম রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোশ্যালিজম আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই তাজ্জব বিয়ে দেখতে এখন উৎসুক গোটা তামিলনাডু, গোটা দেশ এবং সমগ্র নেট-দুনিয়া৷

আরও পড়ুন:ফের উত্তপ্ত জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়, একদল পড়ুয়ার বিরুদ্ধে FIR দিল্লি পুলিশের

Previous articleহানকে জেরা এনআইএ, উত্তরপ্রদেশ এটিএসের, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা
Next articleকোপা আমেরিকার জন‍্য ঘোষণা করা হল আর্জেন্তিনা দল