‘পরিকল্পিতভাবে CBI আদালতকে বিপথে চালিত করছে’, বৃহত্তর বেঞ্চে বিস্ফোরক সিদ্ধার্থ লুথরা

“CBI পরিকল্পিতভাবে আদালতকে
বিপথে চালিত করছে৷ গত ১৭ মে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে যে চিঠি CBI পাঠিয়েছিল তা অস্পষ্ট৷ সেখানে মামলা স্থানান্তরের কোন কথাই লেখা ছিল না। অথচ CBI সওয়াল করছে সেই বিষয়েই৷”

হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ- মামলা স্থানান্তরের শুনানিতে বুধবার
অভিযুক্তদের কৌঁসুলি সিদ্ধার্থ লুথরা তাঁর সওয়ালে ঠিক এভাবেই CBI-এর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন৷ এদিন লুথরা জোরালো প্রশ্ন তুলে বলেন, “CBI এ রাজ্যে কতগুলি মামলার তদন্ত করছে ? তারা শুধুমাত্র এই একটি মামলা নিয়েই অতিস্পর্শকাতর কেন? এর রহস্য কী ? ”

এর পরেই লুথরা একের পর এক গুরুতর অভিযোগ তোলেন এই মামলায় CBI-এর ভূমিকা এবং কর্মপদ্ধতি নিয়ে৷ লুথরা বলেন,

◾কেন্দ্রীয় ভিজিলেন্স কমিশনের সম্মতি নিয়ে CBI ম্যানুয়াল তৈরি হয়েছে। তাই সেটা মেনে চলা CBI- এর জন্য বাধ্যতামূলক। কিন্তু তেমন হচ্ছে না৷

◾নারদ-মামলার তদন্তের এই পর্যায়ে, যেখানে চার্জশিট পেশ হয়ে গিয়েছে, সেখানে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও প্রয়োজন নেই। অথচ CBI তেমনই করেছে৷

◾CBI আদালতের বিশেষ বিচারক তার চেম্বারে বসে শুনানি করেছেন। সেখানে কেউ উপস্থিত ছিল না। তাই মহামান্য বিচারকের প্রভাবিত হওয়ার কোনও সুযোগই ছিল না। অথচ CBI একথাই বলছে৷

◾CBI-এর কাছ থেকে CCTV ফুটেজ চেয়ে পাঠাক আদালত। তাহলেই দেখা যাবে CBI অফিসের গেট সেদিন বাধাহীন ছিল। কিন্তু CBI অন্য কথা বলছে৷

◾নিম্ন আদালতে শুনানির সময় গুরুত্বপূর্ণ নথি পেশ না করতে পারার যে গুরুতর অভিযোগ CBI করছে তা অবিলম্বে খারিজ করা উচিত। গোটা দেশে বিগত ১৪ মাস ধরে জামিনের মামলার শুনানিও এখন ভার্চুয়ালি হচ্ছে।

◾অভিযুক্তদের কারও সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। পশ্চিমবঙ্গ বহুদিন আগেই Crpc সংশোধন করেছে এবং সেই সংশোধনের মধ্যে অভিযুক্তদের ভার্চুয়াল প্রোডাকশনের বিষয়টিও আছে। এটা CBI-এর অজানা নয়৷

◾আদালতের কাজে বাধা দেওয়ায়ই যদি তাঁদের উদ্দেশ্য থাকত, তাহলে তাঁরা শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়েই সে কাজ করতেন। ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে শুনানি হলে বাধাদানের কোনও সম্ভাবনা থাকেনা। অথচ CBI সেটাই বোঝাতে চাইছে৷

◾কানহাইয়া কুমার, অরুণ জেটলি, আশারাম বাপুর মামলায় প্রতিবাদ- বিক্ষোভ হয়েছিলো৷ এমন প্রতিবাদ হয়, কিন্তু তা বিচারক বা বিচারপতিদের প্রভাবিত করতে পারে কি ? অথচ CBI সেকথাই বলছে৷

◾অভিযুক্তদের ভার্চুয়ালি পেশ করা হয়েছে বলেই সেই কাজে
আদালতের বিচারপর্ব কলুষিত হয়েছে এটা দাবি করা যায় না৷ কিন্তু CBI এমনই দাবি করছে৷

◾বাধাদানের কোন অভিযোগ CBI তাদের চার্জশিটে অথবা রিমান্ড অ্যাপ্লিকেশনে জানায়নি৷ অথচ সওয়ালে একথা বলছে৷

◾বাধাদানের অভিযোগ CBI পরে বানিয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের কোনও অভিযোগ নেই। অথচ সেকথাই CBI এখন বলছে৷

◾একজন ব্যক্তি, যিনি তদন্তে সাহায্য করছেন, তাকে কখনই গ্রেফতার করা যায় না। এখানে কোনও ভাবেই CBI হেফাজতের প্রয়োজনীয়তা নেই, ছিলও না। কিন্তু CBI সেই কাজ করেছে৷

◾Crpc সংশোধনের পরে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের শারীরিকভাবে আদালতের কাছে পেশ করার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। আইন মোতাবেক ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমেই বিচারপর্ব চলতে পারে৷ CBI তা সত্ত্বেও এই বিষয়টিকেই ইস্যু করছে৷

◾অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে CBI-এর সব বক্তব্য বিশেষ বিচারক লিপিবদ্ধ করেছেন । তিনি যদি এতই ভীত হবেন, তাহলে তিনি কীভাবে এগুলো নিজের নির্দেশনামা লিখলেন ? CBI ভুল বোঝাচ্ছে৷

আগামীকাল, বৃহস্পতিবার নিজের সওয়াল শেষ করবেন অভিযুক্তদের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা। এদিনের শুনানি শেষ৷

Previous articleঅন্ধ্রপ্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত ৬ মাওবাদী
Next articleআবহাওয়া খারাপ: আজ চেন্নাই নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না মুকুল-জায়াকে