ভাষণ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে বিবাদে যেতে আস্তিন গোটাচ্ছেন ধনকড়

বিধানসভার অধিবেশনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের নতুন লড়াই-এর আশঙ্কা চওড়া হচ্ছে৷

রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার, ২ জুলাই৷ বাজেট পেশ হবে ৭ জুলাই। বিধি অনুসারে রাজ্যপালের ভাষণ দিয়েই শুরু হয় বাজেট অধিবেশন৷ আর এই ভাষণ নিয়েই নতুন করে রাজ্যের সঙ্গে বিবাদে যেতে আস্তিন গোটাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়৷

সূত্র মাধ্যমে রাজ্যপালের বাড়তি এক আবদারের কথাও এবার জানা গিয়েছে৷ ধনকড়ের আবদার, ‘সংবাদমাধ্যমে তাঁর বক্তৃতার সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে’। গত বছরের বাজেট অধিবেশনেও রাজ্যপালের বক্তৃতা ‘লাইভ’ না হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন এই রাজ্যপাল৷ এবার সেই ক্ষোভ আরও তীব্র হতে পারে বিধানসভার স্পিকার ধনকড়ের ‘বায়না’ না মেটালে৷ জানা গিয়েছে, কোভিড-বিধি মেনে এবার যে অধিবেশন বসছে, সেখানে ধনকড়ের ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা আদৌ সম্ভব নাও হতে পারে৷ আর তেমন হলেই ‘টুইট-মাস্টার’ ধনকড় টুইট করে অভিযোগ তুলতে পারেন, “রাজ্যে গণতন্ত্র নেই”৷

রীতি অনুসারে যেহেতু মন্ত্রিসভার তৈরি করা ভাষণই পড়ে থাকেন রাজ্যপাল, তাই রাজ্য মন্ত্রিসভা বৃহস্পতিবার
রাজ্যপালের এবারের ভাষণ চূড়ান্ত করেছে৷ এবার তা পাঠানো হবে রাজভবনে৷ আর এই ভাষণ নিয়েই নয়া বিবাদ প্রায় পাকা৷ রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা, রাজ্য মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত করা রাজ্যপালের ভাষণ রাজভবনে পৌঁছানোর অপেক্ষায় রয়েছেন ধনকড়৷

মন্ত্রিসভার পাঠানো ভাষণ হুবহু পাঠ করতে রাজ্যপাল এবার কিছুতেই রাজি হবেন না৷ এ বিষয়ে রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভাষণ হাতে পাওয়ার পর রাজ্যপাল নিজে তা খতিয়ে দেখবেন৷ কতখানি তিনি বলবেন, কোন কোন অংশ তিনি পড়বেন না, তাও ঠিক করবেন রাজ্যপাল নিজেই৷ ফলে ধরেই নেওয়া যায়, বিরোধীদের পর্যুদস্ত করে তৃণমূলের তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার কথা অথবা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ইত্যাদি কথা ভাষণের যে অংশে লেখা রয়েছে, তা কিছুতেই পড়তে চাইবেন না ধনকড়৷ এখানেই বিবাদ লাগবে রাজ্য-রাজ্যপালের৷

প্রতিটি পদে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবস্থা ‘বিপজ্জনক’ বলতেই দিল্লি নির্দেশ দিয়েছে ধনকড়কে৷ সেই পরিস্থিতিতে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে রাজ্যপাল সম্পূর্ণ ‘উল্টো’ কথা বললে, রাজভবনে তাঁর আর থাকা যে হবেনা, তা সব থেকে ভালো বুঝতে পারছেন ধনকড়৷ তাঁর আগামী স্বপ্নও রসাতলে যাবে৷ তাই চেয়ার রক্ষা করতে তাঁকে বিপ্লবী হতেই হবে৷ রাজ্যের সঙ্গে এই ইস্যুতে ধনকড়ের সঙ্গে লড়াই স্রেফ সময়ের অপেক্ষা ৷

এ সংক্রান্ত নিয়ম বলছে, সরকারের তৈরি করা বক্তৃতা পড়তে রাজ্যপাল ‘বাধ্য’৷ তবে পিছনের দরজা রাজ্যপালের জন্য খোলা৷ ভাষণ পাঠের সময় নিজের কোনও মতামত মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত ভাষণের সঙ্গে জুড়ে দিতে পারেন ধনকড়৷ সেই সময় তাঁকে থামানোও মুশকিল৷ তবে হট্টগোল হতে পারে৷ এই সুযোগটা নিতেই ধনকড় সরাসরি সম্প্রচার চাইছেন৷

আরও পড়ুন- দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে হাতাহাতি, বিজেপির ঘরোয়া কোন্দল নামল রাস্তায়!

Previous articleরবি ফাউলারের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ আনল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব
Next articleতৃণমূল ভবনে মমতার ঘরের চিলেকোঠায় উদ্ধার লক্ষ্মী পেঁচা