ভোটের পর শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ অঞ্চল কিংবা ব্লক বা জেলার নেতৃত্বদের তৃণমূল কংগ্রেস দল থেকে বের করে শুদ্ধিকরণ করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এবার সরাসরি ধর্মীয় সংগঠনের রাজনৈতিক শুদ্ধিকরণ শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস।পশ্চিমবঙ্গ সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সম্পাদক পদ থেকে সরানো হল শ্রীধর মিশ্রকে। শনিবার মেচেদায় রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের এক বিশেষ সভা হয়। সেই সভায় রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মধুসূদন মিশ্র সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এদিনের সভায় অন্তবর্তীকালীন একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা হয়েছেন মন্ত্রী সৌমেনবাবু। এছাড়াও উপদেষ্টা হয়েছেন মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি, প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী, বিপ্লব রায়চৌধুরী ও তিলক চক্রবর্তী। আগামী ১৫দিনের মধ্যে সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে
২০১৬সালে তৃণমূল কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় পশ্চিমবঙ্গ সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট গঠিত হয়। সংগঠনের তৈরির সময় মুখ্য উপদেষ্টা ছিলেন সৌমেনবাবু। তারপর প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং পরে প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্য উপদেষ্টা হন। ট্রাস্টের রাজ্য সম্পাদক শ্রীধর মিশ্রকে রাজ্য সরকার নীলবাতি লাগানো গাড়ি এবং একজন নিরাপত্তারক্ষী দিয়েছিল।
অথচ বিধানসভা ভোটের আগে শ্রীধরবাবু বিজেপির পতাকা ধরেন। সংগঠনের মাথা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণে ট্রাস্টের মধ্যে অনৈক্য তৈরি হয়। সেই অনৈক্য থেকেই ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের মধ্যে একটা আড়াআড়ি পরিবেশ তৈরি হয়েছিল । ফলস্বরূপ ট্রাস্টের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীধরবাবু। শনিবার সেই তালা ভেঙে দেওয়া হয়।
এদিন মেচেদায় ট্রাস্টের গুরুত্বপূর্ণ সভা হয়। সেখানে রাজ্য সম্পাদককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন সৌমেনবাবু। তাঁর নিরাপত্তারক্ষী এবং সরকারি গাড়িও প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
সৌমেনবাবু বলেন, শ্রীধর মিশ্র ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের আর কেউ নন। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেও ওই ব্যক্তির কোনও যোগ নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শের কথা বলে সবকিছু নিয়েছেন। কিন্তু, সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি দ্বিচারিতা করেছেন। তাই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শ্রীধরবাবু বলেন, আমি এই ট্রাস্টটিকে জন্ম দিয়েছিলাম। আমার উপর মিথ্যা কথা বলে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি যে কিছু অসাধু ব্যক্তি যারা ট্রাস্টের কেউ নয় তাঁরা গিয়ে ট্রাস্টের অফিস এবং মন্দিরের তালা ভেঙে অন্য তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। জবর দখল করার চেষ্টা করছি। আমাকে ট্রাস্ট থেকে বরখাস্ত করেছে। আজ থেকে আমি ওই ট্রাস্টের কেউ নই।সংগঠনের আন্দোলনের জেরে ব্রাহ্মণদের ভাতা আদায় করেছি আমরা। মেচেদায় সংগঠনের অফিসের জন্য রাজ্যের কাছ থেকে ৪৬শতক জমি আদায় করেছি। এখন আমাকেই সংগঠন থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।