অতিমারিতে মোদি সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগে সিলমোহর দিল স্বাস্থ্য ও শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ

ভারতে করোনা অতিমারি (pandemic) নিয়ন্ত্রণে মোদি সরকারের (modi govt.) ব্যর্থতা ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিপুল গলদ নিয়ে লাগাতার সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। বিশেষজ্ঞদের আগাম সতর্কতা অগ্রাহ্য করায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় পরিস্থিতি বেসামাল হওয়া, অক্সিজেনের অভাবে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু থেকে দিশাহীন টিকানীতির ফলে রাজ্যে রাজ্যে তৈরি হওয়া জটিলতা; সব নিয়েই পাহাড়প্রমাণ অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে করোনা আক্রাম্ত মানুষের মৃত্যু, গঙ্গায় মৃতদের দেহ ভাসিয়ে দেওয়ার গুরুতর ঘটনায় উদাসীনতার অভিযোগ তো ছিলই, সেইসঙ্গে ব্রাজিলে ভারতের নিজস্ব টিকা কোভ্যাক্সিন নিয়ে ওঠা বিরাট দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরেও বিদেশে মোদি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এতদিন ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে যে অভিযোগ উঠছিল সেগুলি যে যথার্থ, বুঝিয়ে দিল কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষবর্ধনের পদত্যাগ। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সংকট ও ভ্যাকসিন বণ্টনে অব্যবস্থার ভুরি ভুরি অভিযোগে ক্ষোভের আঁচ যাতে সামগ্রিকভাবে সরকারের গায়ে না লাগে সেজন্য কোপ পড়ল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর (health minister) উপর।

একইসঙ্গে, করোনা অতিমারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষাক্ষেত্র নিয়ে সরকারি ব্যর্থতায় প্রলেপ দিতে পদত্যাগ করানো হল শিক্ষামন্ত্রী (education minister) রমেশ নিশঙ্ক পোখরিয়ালকেও। অতিমারি পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রয়োজনীয় তৎপরতার অভাব, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে বারবার সিদ্ধান্ত বদল ও অনলাইনমুখী শিক্ষানীতির ফলে দেশের একটা বড় অংশের শিক্ষক-পড়ুয়ার অসন্তোষ বাড়তে থাকায় শেষপর্যন্ত পদত্যাগ করলেন শিক্ষামন্ত্রী। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার দু’ বছরের মাথায় মোদি সরকারের মেগা রদবদলের দিন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই পদত্যাগ করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষবর্ধন ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ নিশঙ্ক পোখরিয়াল। যদিও স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যর্থতার দায় ব্যক্তিগতভাবে একা স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রীর, এমনটা আদৌ নয়। বিরোধীদের বক্তব্য, এই দুই দফতরের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে কার্যক্ষেত্রে যে কোনও বড় ঘোষণা নিজে করে কৃতিত্ব নিতে চেয়েছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি। এখন এই দুই মন্ত্রকের ব্যর্থতার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হতেই বলি দেওয়া হল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে। আর কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে কার্যত মান্যতা পেল সরকারের বিরুদ্ধে অতিমারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ।

আরও পড়ুন- পোড়া পোড়া গন্ধ, দমবন্ধ! মন্ত্রিত্ব না পাওয়া “অতৃপ্ত” বঙ্গ বিজেপি সাংসদদের কটাক্ষ কুণালের

 

Previous articleসৌমিত্রর ভর্ৎসনা হজম করে শুভেন্দু বললেন, “সিরিয়াসলি নিচ্ছি না”
Next articleহর্ষবর্ধনকে চিঠি দিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চান শুভেন্দু, আর মন্ত্রী নিজেই কিনা পদচ্যুত!