মোদি-মন্ত্রিসভা: এবারও বঞ্চিত বাংলা, বঞ্চিত বঙ্গের আদি- বিজেপিও

‘সুনার বাংলা’ অতীত৷

এখন পুরোটাই ২০২৪-এর মোদির ভোট৷

ফলে, সেই ২০১৪ থেকে ২০২১, টানা বঞ্চনা চলছে বাংলার সঙ্গে৷ এবারও পশ্চিমবঙ্গকে কোনও পূর্ণমন্ত্রী দিলেন না নরেন্দ্র মোদি৷ এবং একইসঙ্গে নিজের হাতে সিলমোহর লাগালেন ‘তৎকাল- বিজেপি’র গায়ে৷ শীর্ষ গেরুয়া নেতৃত্ব বাংলার ‘আদি’ বিজেপি-বাহিনীর চোখে আঙুল দিয়ে বোঝালেন, ‘আপনারা দলে নেহাতই ‘দ্বাদশ ব্যক্তি’, তৎকাল-দের জল-টল লাগলে, মাঠে নিয়ে যাবেন৷ ওই পর্যন্তই৷

বহু প্রতীক্ষিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে এবারও বাংলা একজনও পূর্ণমন্ত্রী পায়নি৷ প্রাক্তণ আরএসএস ডাক্তার সুভাষ সরকার এবং ৩ তৎকাল-বিজেপি জন বার্লা, শান্তনু ঠাকুর এবং নিশীথ প্রামাণিককে এবার
প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন৷ সরানো হয়েছে দুই প্রতিমন্ত্রী, বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরিকে৷ কেন এই দুই প্রতিমন্ত্রীকে দরজা দেখালো বিজেপি, তা নিয়ে চর্চা চলছে গেরুয়া-অন্দরে৷ আর সেই ফাঁক দিয়ে বাংলার চার বিজেপি -সাংসদ কাগজে-কলমে হয়ে গেলেন মন্ত্রী৷

কেন্দ্রীয় সরকারের কাঠামোয় প্রতিমন্ত্রীর কাজের পরিধি খুবই সংকীর্ণ৷ ২০১৪ থেকে বাংলা যে প্রতিমন্ত্রী পেয়ে এসেছে, তাঁরা একজনও তেমন ‘কাজের কাজ’ কিছু করে উঠতে পারেননি৷ করা সম্ভবও নয়৷ রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়ণ তো দূরের কথা, প্রতিমন্ত্রীরা একক উদ্যোগে নিজেদের জেলায় বা সংসদীয় কেন্দ্রে উন্নয়ণমূলক কাজ করতে চাইলেও অন্যান্য পূর্ণমন্ত্রীদের বরাভয়ের ভরসায় থাকতে হয়৷ তাছাড়া কাজ বার করে আনার মতো এলেম বা অভিজ্ঞতাও এই চারজনের একজনেরও নেই৷ নেই প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা, প্রত্যেককেই এই প্রথমবার জন- প্রতিনিধি হয়েছেন৷

আসলে বাংলার উন্নয়ণের লক্ষ্যে এই চারজনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়নি৷ টার্গেট ২০২৪-এর মোদির প্রধানমন্ত্রী পদে টিঁকে থাকার ভোট৷ জন বার্লার হাতে ধরে আদিবাসী ভোট, শান্তুনু ঠাকুরের মাধ্যমে মতুয়া ভোট, সুভাষ সরকার এনে দেবেন বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার ২-১ টি আসন এবং কোচবিহারে এবার নিজে মাত্র ৫৭ ভোটে জিতে বিধায়ক হলেও, লোকসভায় আসন এনে দেবেন নিশীথ প্রমাণিক, এই ছকেই এবার এই চারজনকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়৷

ফলে, এবারও বাংলা বঞ্চিতই থাকলো৷ এবং বঞ্চনার শিকার হলেন দিলীপ ঘোষের মতো নেতা তথা আদি-বিজেপি সাংসদরাও৷ তৎকাল- বাহিনী যখন দিল্লিতে দাপট দেখাচ্ছেন, শপথ নিচ্ছেন, ‘আদি-বিজেপি’ দিলীপ ঘোষ তখন রাজ্যে বসে শুভেন্দু অধিকারী- সৌমিত্র খাঁয়ের ‘মারামারি’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন৷

বঙ্গের আদি- বিজেপি আশাকরি পড়তে পারছেন দেওয়াল-লিখন৷

আরও পড়ুন- মোদির মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা হেভিওয়েট রবিশঙ্কর-জাভড়েকরেরও

Previous articleগোপন ডেরা থেকে গ্রেফতার ভুয়ো CID রাধারাণী
Next articleনিশীথদের সামনে রেখে রাজ্য সরকারকে ‘উত্যক্ত করার খেলা’ চালাতে চায় বিজেপি