LIC বিক্রির পরিকল্পনা: নির্মলাকে পত্রবোমা অমিতের, সংসদে প্রতিবাদ জানাবে তৃণমূল

বাতিল করুন, নির্মলা সীতারমনকে (Nirmala Sitarmitran) চিঠি অমিত মিত্রের (Amit Mitra) দেশের সাধারণ মানুষের বড় ভরসার জায়গা এই বিমা। সেই বিমাকে সংস্থাকে বেসরকারিকরণ করা হলে তা দেশের কোটি কোটি মানুষের দুর্দশা বড়িয়ে দেবে। বাংলায় লাভজনক একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থার দফতর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। এবার এলআইসি-সহ অন্যান্য সরকারি বিমা কোম্পানির বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে চিঠি লিখলেন অমিত মিত্র।

 

কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে অমিত মিত্র লিখেছেন, খবর আছে দেশের ৪ বিমা কোম্পানিকে বেসরকারিকরণ করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। বিমা আইনে এমন কিছু সংশোধন আনছে যাতে বেসরকারিকরণের পথ সুগম হবে। বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্স কোম্পানিকে। এই কোম্পানিত কাজ করেন প্রায় ১৩,৯৬১ মানুষ। প্রিমিয়াম হিসেবে কোম্পানিটি বছরে তোলে প্রায় ১৭,৫১৫ কোটি টাকা। এই টাকার অধিকাংশই খেটে খাওয়া গরিব মানুষের। তাই এটির বেসরকারিকরণ করা হলে গরিব মানুষ অনিশ্চিততায় ভ7গবেন।

 

এলআইসি বিক্রির আশঙ্কা করে অমিত মিত্র তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, “শুনছি এলআইসি-ও বিক্রি করা হবে। দেশের অর্থনীতিতে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এলআইসি দিয়েছে ৩৬.৭৬ লাখ কোটি টাকা। পাশাপাশি সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি এলআইসির কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে ২১,০০০ কোটি টাকা। তাই দেশের অর্থনীতিতে এই প্রতিষ্ঠানের অবদান খুব সহজেই বোঝা যায়। এই কোম্পানির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ১২-১৫ লাখ মানুষের জীবিকা। তাই এই ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের নীতি থেকে সরে আসুক কেন্দ্রে। তা না হলে লাখ লাখ মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।”

 

যদিও শুধু পত্রাঘাতেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ রাখতে নারাজ তৃণমূল। সংসদেও বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদে সরব হতে কোমর বেঁধে নামছে তৃণমূল। কারণ, আজ সোমবারই লোকসভায় এই সংক্রান্ত বিলটি (দ্য জেনারেল ইনসিওরেন্স বিজনেস ন্যাশলাইজেশন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২১) পাশের জন্য তালিকাবদ্ধ হয়েছে। গত শুক্রবার বিলটি লোকসভায় পেশ করেছেন নির্মলা সীতারামন। বিমা কোম্পানির বেসরকারিকরণে মোদি সরকার এতটাই মরিয়া যে, দু’দিন পরেই তা তড়িঘড়ি পাশ করানোর উদ্যোগ নিয়েছে তারা।

লোকসভায় বিলটি আটকাতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছেন আরএসপির এমপি এন কে প্রেমচন্দ্রন। এবার সংসদের দু‌ই কক্ষেই বাড়তি উদ্যোগ নেবে তৃণমূল। দলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন রবিবার বলেন, ‘আলোচনা ছাড়াই অগণতান্ত্রিকভাবে বিরোধীদের বুলডোজ করে বিল পাশ করিয়ে নিচ্ছে মোদি সরকার। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভবিষ্যৎ কোনওভাবেই বিপদের মুখে ঠেলে দিতে দেব না। বিমা বিল রুখবই।’ যদিও পেগাসাস কাণ্ডে উত্তাল সংসদেও যেভাবে মোদি সরকার মুহূর্তে পরের পর বিল পাশ করিয়ে নিচ্ছে, তাতে বিমা কোম্পানি বেসরকারিকরণ সংক্রান্ত বিল বিরোধীরা কতটা আটকাতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

 

 

Previous article‘বিল না পাপড়িচাট?’ ৭ মিনিটে একটি করে বিল পাশে সরকারকে তোপ ডেরেকের
Next articleত্রিপুরার পুলিশ পারল না, অভিষেকের মধ্যস্থতায় অবরোধ তুলল পড়ুয়ারা