মোদির শাসনে দেনার দায়ে ধুঁকছে ভারত, ঋণের বোঝা প্রায় ১৯৮ লক্ষ কোটি টাকা

বছরে দু’কোটি চাকরি, দেশবাসীর অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা, আরও নানান ধরনের প্রতিশ্রুতির ফানুস উড়িয়ে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিল মোদি সরকার(Modi government)। যদিও কোনও প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ হয়নি। তবে মোদির শাসনে একটি জিনিস রীতিমতো আকাশ ছুঁয়েছে তা হলো দেশের ঘাড়ে ঋণের বোঝা। নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi) প্রধানমন্ত্রী(Prime Minister) চেয়ারে বসার পর থেকেই তা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। তবে গত অর্থবছরে এই ঋণ সব সীমা পার করেছে। রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে ভারত সরকারের ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ অবস্থা। ১৯৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণে(Lone) জর্জরিত দেশবাসী। সংসদে এই তথ্য প্রকাশ করেছে খোদ মোদি সরকার।

বুধবার সংসদে তৃণমূল(TMC) কংগ্রেসের লোকসভার সাজদা আহমেদ এবং রাজ্যসভার নাদিমুল হকের তরফে সরকারের কাছে লিখিত প্রশ্ন করা হয়, কেন্দ্রে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কত হয়েছে ঋণের বোঝা? এবং সেই ঋণ শোধ করার জন্য সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? উত্তরে সরকারের তরফে জানানো হয় ২০২০-২১ সালের মার্চ মাস মোতাবেক সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ ১৯৭ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, মাত্র এক বছরে ঋণ বোঝার হার ৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২.৬ শতাংশ। বিশ্বের বহু বিদেশী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ভারত সরকার। এবং ঋণশোধের বিষয়ে সরকার উত্তরে জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং সরকারি জমি বিক্রি করেই এই ঋণভার কমানো হবে। বাড়ানো হবে দেশবাসীর থেকে কর আদায়ের পরিমাণ। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, আরও বহু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে মোদি সরকার।

আরও পড়ুন:১৬ অগাস্ট মোদি-শাহর রাজ্য গুজরাতেও “খেলা হবে দিবস” পালন করবে তৃণমূল

অথচ তথ্য বলছে, ডঃ মনমোহন সিংয়ের দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলের শেষদিকে, ২০১৪-১৫ আর্থিক বর্ষে ভারতের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৮ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। এরপর থেকে মোদির শাসনে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে দেশবাসীর ঋণের বোঝা। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে কেন্দ্রের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭০ লক্ষ ৭ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। তার পরের অর্থবর্ষে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ৭৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩৫ কোটি টাকায়। পরের দু’বছরে তা বেড়ে ১৯৭ লক্ষ কোটিতে পৌঁছেছে। তবে দেনার দায়ে ঝুঁকে পড়া দেশকে সামলে তোলার পরিবর্তে ঝাঁ চকচকে সেন্ট্রাল ভিস্তার মতো প্রকল্পে মেতেছে মোদি সরকার। প্রধানমন্ত্রীর জন্য আছে বিশেষ বিমান। বিপুল এই খরচ নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিরোধীদের তরফে। যদিও সরকার অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে ঋণ ভার কমাতে ধাপে ধাপে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, সরকারি জমি বিক্রি করবে কেন্দ্র। বাড়ানো হবে কর আদায়ের পরিমাণ। অর্থাৎ পরিস্থিতি যা তাতে সাধারণ মানুষের দুর্দশা কমার পরিবর্তে উত্তরোত্তর বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

 

Previous articleবিশ্বর‍্যাঙ্কিং-এ বড় সাফল‍্য নীরজ চোপড়ার, একলাফে উঠে এলেন দ্বিতীয় স্থানে
Next articleরাশিয়ায় কপ্টার দুর্ঘটনার কবলে এক শিশু-সহ ১৩ পর্যটক