নতুন তালিবানি সরকারে এবার একুশে আইন?

যে কোনও সময় সরকার গঠন করতে পারে তালিবান।তাদের বর্তমান সংবিধান ২০০৪ সালে বিদেশি তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছিল।তাই এবারের সংবিধান কী হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশয় তৈরি হয়েছে। সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে সবার সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের এই বলা কথার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির কিন্তু কোনও মিল নেই।১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত শরীয়ত আইন কার্যকর করেছিল তালিবান।
আফগানিস্তানে তালিবানের পুনরুত্থান প্রচলিত অর্থে হয়তো দুর্যোগ নয় কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলে তাদের শাসন আমলে দুর্যোগের মতোই ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছিল আফগান নারীরা৷ তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল৷পোশাকের অজুহাতে নারীকে খুন করা, মেয়েদের স্কুল কলেজে যেতে বাধা দেওয়া, কর্মস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া, জোর করে কমবয়সী নারীদের তালিবান যোদ্ধাদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়াসহ হেন অকর্ম নেই যা তারা সেই কালো সময়ে করেনি৷ এমনকি গত বছরও তালিবান জঙ্গিরা পুলিশ হওয়ার অপরাধে এক নারীকে অন্ধ করে দিয়েছিল৷ নারী বঞ্চিত হয়েছিল আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা থেকেও৷

আরও পড়ুন- হৃদরোগেই মৃত্যু সিদ্ধার্থ শুক্লার: ময়নাতদন্তে প্রকাশ, হবে ভিসেরা পরীক্ষা
এই অবস্থায় ২০ বছর পর সেই তালিবানরা আবার ক্ষমতায় ফিরে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও শঙ্কায় ভুগছেন সে দেশের সাধারণ জনগণ বিশেষ করে নারীরা৷ তারা ভাবছেন, আবার হয়তো সেই অন্ধকার সময় ফিরে আসছে৷ ফিরে আসছে নারীর উপর জোর-জুলুম ও জবরদস্তি করার দুঃসময়৷
এর মধ্যেই গণমাধ্যমে নানা রকম খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ শোনা গিয়েছে, বিভিন্ন প্রদেশে পেশাজীবী কয়েকজন নারীকে হত্যা করা হয়েছে৷ জুলাই মাসেই তালিবানদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অফিসে গিয়ে নারী কর্মীদের অফিস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ জোর করে অবিবাহিত ও বিধবা নারীদের সঙ্গে তালিবান যোদ্ধাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ বোরখা কিনতে দোকানে ভিড় করছেন নারীরা৷ দেওয়াল থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে বিজ্ঞাপনের নারী মুখ৷
অনুচ্ছেদ ছাব্বিশের ধারা অনুযায়ী অপরাধমূলক কার্যকলাপে একমাত্র শাস্তি দিতে পারে আদালত। ব্যক্তি স্বাধীনতা বজায় রাখা এবং মানবাধিকারের কথা বলা হলেও বাস্তব ক্ষেত্রে কিন্তু তার কোনও মিল নেই। পছন্দ না হলে গুলি করে মেরে দেওয়া জল ভাতে পরিণত করেছে তালিবান।
অনুচ্ছেদ আঠাশে অনুমতি ছাড়া কারও বাড়িতে তল্লাশি চালানো যাবে না বলে বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, আফগানিস্তান তালিবানরা নিজেদের কব্জায় আনার পরই এক সাংবাদিকের খোঁজে বাড়ি বাড়ি ঢুকে নির্বিচারে তল্লাশির নামে অত্যাচার চালিয়েছে তালিবান।
এমনকি সরকার গঠনে তালিবান ইরানকে মডেল করতে চায়। সেক্ষেত্রে শীর্ষে থাকবেন একজন এবং তার অধীনে থাকবে মন্ত্রী পরিষদ। নির্বাচনের ধার ধারবে না তারা। থাকবে না কোনও রাজনৈতিক দল। সংবিধানের সবার শিক্ষার কথা বলা হলেও ইতিমধ্যেই তালিবান ঘোষণা করেছে পুরুষ এবং মহিলা শরিয়াত মেনে পৃথকভাবে পড়াশোনা করবেন।
সব মিলিয়ে নতুন তালিবানি শাসন কি তবে এবার একুশে আইন? সেই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে গোটা বিশ্বে।

 

advt 19

 

Previous articleআফগানিস্তানের নতুন সরকারের রাষ্ট্রপতি মোল্লা বরাদর: তালিবান সূত্র
Next articleমাত্র ১৯ বছরেই পাইলট, রেকর্ড গড়লেন মৈত্রী