মোদির জন্মদিন বলে কথা, এমন দিনে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ব্যাপকহারে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল। তালিকায় ছিল বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশও। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অবশ্য কোনো খামতি দেখা হয়নি। ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্ম দিনে এই রাজ্যে টিকাকরণ হয়েছে ২৭ লক্ষ। তবে তার বেশির ভাগটাই যে ‘উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে’ চাপানো হয়েছে সেটা ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। টিকা দানের ক্ষেত্রে কোথাও মৃত ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হয়েছে, তো কোথাও আবার টিকা না পেলেও পেয়ে গিয়েছেন টিকার শংসাপত্র। সংখ্যাটা অবশ্য একটি-দুটি নয় বহু। একের পর এক এমন অদ্ভুতুড়ে ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
১৭ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বাসিন্দা আশুতোষের ফোনে একটি ম্যাসেজ আসে যেখানে লেখা হয়েছে, “বিদ্যা শর্মা, আপনার করোনার দ্বিতীয় ডোজের কোভিশিল্ড টিকা আপনি পেয়েছেন ১৭ সেপ্টেম্বর। যখন ভারত রেকর্ডসংখ্যক ভ্যাকসিনের টার্গেট নিয়েছে।” এই মেসেজ পাওয়ার পর রীতিমতো চমকে ওঠেন বিদ্যার পুত্র আশুতোষ। সেটা হওয়াই অবশ্য স্বাভাবিক, কারণ ৪ মাস আগে মৃত্যু হয়েছে তার মায়ের। সরকারি অ্যাপ থেকে মিলে গিয়েছে শংসাপত্র। এক হাতে মায়ের ডেথ সার্টিফিকেট ও অন্য হাতে কোভিড সার্টিফিকেট নিয়ে আশুতোষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এমনটা হওয়ার পেছনে কারণ অবশ্য একটাই থাকতে পারে সরকারি কর্মীদের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে টিকা দেওয়ার জন্য।
"Dear Vidya Sharma, you have successfully been vaccinated with your 2nd dose with Covishield on 17th September",when India set a world record in #vaccinations Ashutosh was shocked because his mother had died of #COVID19 4 months earlier @ndtv @ndtvindia @manishndtv @GargiRawat pic.twitter.com/R1loSFh0I2
— Anurag Dwary (@Anurag_Dwary) September 22, 2021
একই ঘটনা ঘটেছে আগরের বাসিন্দা পিঙ্কি বর্মার সঙ্গেও। তিনি বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে পারিনি আমি। ১৭ তারিখ আমার ফোনে মেসেজ ঢুকে এবং জানানো হয় রাজস্থানের একটি অঞ্চল থেকে আমার টিকা হয়ে গেছে।’ এই ধরনের মেসেজ পেয়ে রীতিমতো তাজ্জব হয়ে যান ওই মহিলা। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে শুধুমাত্র নম্বর বাড়ানোর জন্য এটা করা হচ্ছে। ৫৪ বছর বয়সী রিতা নামে এক মহিলার সঙ্গেও ঘটেছে একই ঘটনা। তিনি রীতিমতো উদ্বিগ্ন এই ঘটনার পর আদৌও কি তিনি দ্বিতীয় ডোজের টিকা আর পাবেন? শুধু তাই নয় সরকারি নিয়মে ১৪ বছরের নিচে কাউকে ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও, ১৩ থেকে ১৫ বছরের একাধিক নাবালক নাবালিকা ভ্যাকসিন পেয়ে গিয়েছে (ভ্যাকসিন বললে ভুল হবে ‘টিকার শংসাপত্র’)।
আরও পড়ুন:বাবুলই শেষ নয়, আরও বড় নেতা আসছে! ফিরহাদের মন্তব্যে হাড়ে কাঁপুনি বঙ্গ বিজেপির
এ ধরনের ঘটনাকে অবশ্য খুব বিশেষ আমল দিতে নারাজ মধ্যপ্রদেশ সরকার। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী বিশ্বাস সরং বলেন, “বিক্ষিপ্তভাবে এই ধরনের ঘটনা দুই-একটি ঘটেছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করে তদন্ত হবে।” তবে দিনের পর দিন এই ধরনের ঘটনা যেভাবে বাড়ছে তাতে উদ্বিগ্ন মধ্যপ্রদেশবাসী।