সত্যের জন্য আজীবন লড়াই করব, পদত্যাগের পর ভিডিও বার্তা কংগ্রেস নেতা সিধুর

চার মাস পরে পাঞ্জাব(Punjab) বিধানসভার নির্বাচন(assembly election)। নির্বাচনে দলের দায়িত্ব সামলাতে মাস দুয়েক আগে নভজোৎ সিং সিধুর(Navjot Singh Sidhu) উপর ভরসা রেখেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী(Rahul Gandhi) ও দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কিন্তু আনপ্রেডিক্টেবল সিধু মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। যদিও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি কংগ্রেস ছাড়ছেন না।

এরপর কংগ্রেস হাইকমান্ড সিধুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পাটিয়ালায় নিজের বাড়িতে থাকলেও সিধু হাইকমান্ডের কোনও নেতারই ফোন ধরেননি। তবে বুধবার সকালে এক ভিডিওবার্তায় সিধু জানান, সত্যের জন্য তিনি আজীবন লড়াই করেছেন। আগামী দিনেও করবেন। অন্যায়ের সঙ্গে তিনি কখনো আপস করেননি, ভবিষ্যতেও করবেন না।

আরও পড়ুন:মোদি মন্ত্রিসভায় বঞ্চিত বাংলা, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বাবুল

এদিন সকালে ওই ভিডিওবার্তায় সিধু বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। একটি মহৎ উদ্দেশ্য সফল করার জন্যই আমার রাজনীতিতে আসা। রাজ্য তথা রাজ্যবাসীর স্বপ্নপূরণ করাই ছিল আমার রাজনীতিতে আসার একমাত্র কারণ। আমি কখনও ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য রাজনীতিতে আসিনি। রাজ্যবাসীর সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধনের জন্যই আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলাম। তাই সেই লক্ষ্য থেকে সরে আসার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

মঙ্গলবার সিধু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে ইস্তফা দেওয়ার পরেই তাঁর ঘনিষ্ঠ রাজিয়া সুলতানা নামে এক মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। সিধু প্রসঙ্গে বুধবার মুখ খুলেছেন রাজিয়া। তিনি বলেছেন সিধু একজন আপাদমস্তক ভদ্রলোক। তিনি পাঞ্জাব তথা রাজ্যবাসীর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু এমন কিছু কাজ করা হয়েছে যেটা তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত করেছে। সে কারণেই তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে ইস্তফা দিয়েছেন। যথাযথ সম্মান না পেলে তিনি পদে আঁকড়ে থাকার লোক নন। যেখানে আমাদের ক্যাপ্টেনের সম্মান নেই, নৈতিকতার খাতির তাই আমাদের মন্ত্রিসভায় থাকা উচিত নয় বলে আমি মনে করি। সে কারণেই আমার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।

অন্যদিকে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সম্প্রতি নিজের ঘনিষ্ঠকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে সফল হলেও সামগ্রিক মন্ত্রিসভা গঠনে আদৌ খুশি ছিলেন না সিধু। এমনকী, প্রশাসনিক স্তরে রদবদলের ক্ষেত্রেও সিধুর মতামত সম্পূর্ণ মেনে নেওয়া হয়নি। সে কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। সিধু আদতে গান্ধী পরিবারের উপর চাপের খেলা খেলতে চাইছেন। রাজনৈতিক মহলের সাফ কথা, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিধুর উপর যে ভরসা করেছিলেন সেটা কার্যত ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি রাহুল-প্রিয়াঙ্কা এখন এটাও বুঝতে পারছেন যে, সিধুর সব অন্যায় অনৈতিক দাবি মেনে নিয়ে তাঁরা ঠিক করেননি। বরং সিধুকে আরও আগেই সমঝে দেওয়া উচিত ছিল। সেটা না করার কারণেই সিধুর অন্যায় আবদার ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেস পাঞ্জাবে কার নেতৃত্বে লড়বে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আগামী দিনে অমরিন্দর যে আর কংগ্রেসের সঙ্গে সে ধরনের সহযোগিতা করবেন না সেটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। কংগ্রেসের এই অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগে আম আদমি পার্টি বা বিজেপি এই রাজ্যের ক্ষমতা দখল করতে পারে কিনা সেটাই দেখার।

advt 19

 

Previous articleঅবিরাম বৃষ্টিতে নাজেহাল রাজ্য, নবান্ন থেকে নজরদারি মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleহার্দিকের পারফরম্যান্স নিয়ে কী বললেন রোহিত?