লখিমপুর খেরিতে(Lakhimpur Kheri) ৪ কৃষক খুনে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পুত্র আশিস মিশ্রকে(Ashish Mishra) ১২ দিনের জেল হেফাজত দিল হাইকোর্ট। শনিবার টানা ১২ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আশিসকে। এদিন তাকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি। তবে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের সঙ্গে চূড়ান্ত অসহযোগিতার করা মন্ত্রী পুত্রকে কেন পুলিশ হেফাজতে না দিয়ে সরাসরি জেল হেফাজতে পাঠানো হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গতকাল রাতে আশিসকে গ্রেফতারের পর পুলিশের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয় আশিস তাদের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা করছে না। এহেন পরিস্থিতিতে এদিন আদালতে তোলা হলে প্রাথমিকভাবে এই ধরনের মামলায় তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতের দাবি জানানো হয় পুলিশের তরফে। যদিও শোনা যাচ্ছে পুলিশের তরফে আদালত এই ধরনের কোনো দাবি তোলা হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিরোধীদের অভিযোগ শুধুমাত্র মন্ত্রীপুত্র বলেই আদালতে নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলতে তৎপর ছিল যোগীর পুলিশ। যার জেরেই পুলিশি হেফাজতের পরিবর্তে জেল হেফাজত হয়েছে আশিসের।
লখিমপুর খেরিতে ৪ কৃষকসহ মোট ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ছেলের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। নৃশংস সেই ঘটনার ৬ দিন কেটে যাওয়ার পর শনিবার পুলিশের কাছে হাজিরা দিয়েছিলেন অজয় মিশ্রর ছেলে অভিযুক্ত আশিস মিশ্র। খোদ ডিআইজি দীর্ঘ প্রায় ১২ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁকে। সেই জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় আশিসকে। এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে ডিআইজি জানান, “দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর আমাদের মনে হয়েছে অভিযুক্ত আশীষ মিশ্র কোনওরকম সহযোগিতা করছেন না। বহু প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। যার ফলে তাঁকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শীঘ্রই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে।”
আরও পড়ুন:তৃণমূল সাংসদ হিসেবেই সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পেলেন শিশির-দিব্যেন্দু
উল্লেখ্য, গত শুক্রবারই অবশ্য আশিস মিশ্রর গ্রেফতারি ও নৃশংস এ ঘটনায় যোগী সরকারের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে ভর্ৎসনার সুরে আদালতের তরফে জানানো হয়, ‘আপনারা কি খুনের মামলায় অভিযুক্ত সবার সঙ্গেই এমন করেন? নোটিস করবেন, তারপর অপেক্ষা করবেন, কবে আসবে?’ কেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি সে প্রশ্ন তোলা হয় আদালতের তরফে। আদালতের প্রশ্নবাণে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে এদিন আশীষ মিশ্রকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে পড়ে তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তবে খুনের মামলার মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হাইপ্রোফাইল মন্ত্রীপুত্রকে নিজেদের হেফাজতে নিল না উত্তর প্রদেশ পুলিশ।