সারা দেশে বাংলাই মডেল। রবিবার শিলিগুড়িতে (Siliguri) পুলিশের তরফ থেকে আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনে অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ১০০ কোটি ভ্যাকসিনের দাবিকে নস্যাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন নিয়েও ‘জুমলা’ করছে বিজেপি। ডাবল ডোজ না হলে সম্পূর্ণ টিকাকরণ বলা যায় না। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলা টিকাকরণের প্রথম।
দেশে ১০০ কোটি মানুষের করোনা টিকাকরণ সম্পূর্ণ। কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিসংখ্যান দেখিয়ে দেশজুড়ে সাফল্যের উদযাপন করেছে। তবে, এই দাবি অসত্য বলে এদিন পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশের মোট জনসংখ্যার নিরিখে হিসেব করলে, তা ১০০ কোটির চেয়ে বেশ খানিকটা কম। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশের লোকসংখ্যা কত? বাচ্চাদের সংখ্যা কত? তথ্য অনুযায়ী, ২৯.৫১ কোটি ডবল ডোজ হয়েছে।
মমতা অভিযোগ করেন, সারা দেশে ৩৫ কোটি মানুষ এখনও একটা ডোজ পায়নি। বাচ্চাদের ধরলে সংখ্যা ৬০-৬৫ কোটিতে দাঁড়াবে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে টিকাবণ্টনে দ্বিচারিতার অভিযোগ তোলেন মমতা। তিনি দাবি করেন, মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ বেশি পেয়েছে টিকা। “আমার জনসংখ্যা বেশি। কেন টিকা পাব না?” রাজ্য সরকার টিকিট কিনে তা বিনামূল্যে দিয়েছে। দেশের মধ্যে টিকাকরণের বাংলায় প্রথম। বাংলাই দেশের মধ্যে ‘মডেল’ বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। “কোভ্যাকসিন যাঁরা নিয়েছেন, তাঁরা বিদেশ যেতে পারছেন না। সত্যি বলা ভালো আড়াল করা ঠিক নয়।”
এরপরই সম্প্রতি ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে সুর ছড়ান তৃণমূল (Tmc) নেত্রী। তিনি বলেন, বিপ্লব দেবের সরকার চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারে না, অথচ বিরোধীদের উপর আক্রমণ করে যাচ্ছে। “বাংলা ত্রিপুরা নয়, গেলেই মাথায় মারো? সন্তোষ মোহন দেবের মেয়েকেও মারছে।” ত্রিপুরায় বিরোধীদের মিছিল পর্যন্ত করতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, “আমরা যতদিন আছি, ততদিন বাংলাকে ত্রিপুরা হতে দেব না”।
এদিন কিছুটা ব্যক্তিগত আলাপচারিতা মেজাজে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, “১২-১৩ বছর বয়স থেকে রাজনীতি করছি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এই জায়গায় পৌঁছেছি। ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছি। আমায় জীবন্ত লাশ বলতে পারেন।” নিজের অভিজ্ঞতা তার লেখা বইগুলিতে লিপিবদ্ধ করেছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। কোন সময়ে কী করলে আপনি সফলতার পথে এগোবেন তাও আছে তাঁর বইয়ে।
দীর্ঘদিন ভাত-রুটি খেতেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু করোনাকালে তিনি পুরনো অভ্যেস ফিরেছেন বলে জানান। বলেন, বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে সব উদ্যোক্তাদের আপনার রেখে পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে ঠান্ডা লেগে গিয়েছে তাঁর। “চারশো ষাটটা পুজো ওপেন করেছি। জলে ভিজে পুজা ওপেন করতে গিয়েই ঠান্ডা লাগে কথা বলতে পারছিলাম না। এখনও পুরো ঠিক হইনি।” গত কুড়ি বছরে তাঁর জ্বর হয়নি বলে জানান তৃণমূল সুপ্রিমো। আগামী তিনদিন বৃষ্টি-ধস বিপর্যস্ত পাহাড়ের একাধিক জায়গা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- মরশুমের প্রথম এল ক্লাসিকো, নজরে তরুণরা