নিউদিল্লি কালীবাড়ির পুজো ইতিহাসের গর্বের স্বাক্ষর

কলকাতার (Kolkata) কালীঘাটের (Kalighat) মা কালীর মূর্তির আদলে তৈরি নিউদিল্লি কালীবাড়ির মায়ের মূর্তি। নিউদিল্লি কালীবাড়ি (New Delhi Kalibari) বা মন্দির মার্গের কালীবাড়ি নামেই পরিচিত এখানকার মন্দিরটি।

রাজধানী দিল্লির (Delhi) সবচেয়ে পুরনো এই কালীপুজো প্রায় ১০০ বছরের দোরগোড়ায়। কর্মসূত্রে কলকাতা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে দেশের নতুন রাজধানী দিল্লিতে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন তৎকালীন বাঙালিবাবুরা। ১৯৩০ সালে সেই প্রবাসী বাঙালিদের হাত ধরেই যাত্রা শুরু রাজধানী দিল্লির প্রাচীনতম কালীপুজোর। এই পুজো কমিটির প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhash Chandra Bose)।

আরও পড়ুন: এই প্রথমবার ভক্তিগীতি গাইলেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

১৯৩৫ সালে নেতাজির হাত ধরে স্থাপিত হয় পুজো কমিটি। আর মন্দির ভবনের উদ্বোধন করেন স্যার মন্মথনাথ মুখোপাধ্যায় (Mammoth Nath Mukherjee)। দিল্লির সবথেকে পুরনো এই কালীবাড়িটি আজ রাজধানীর বুকে নামকরা  একটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত।

শোনা যায়, প্রাক-স্বাধীনতার যুগেও দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিযোদ্ধা বিপ্লবীদের গোপন ঘাঁটি ছিল এই কালীবাড়ির প্রাঙ্গণ। পুজো কমিটির প্রথম প্রেসিডেন্ট নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মন্দির প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে ভারতের স্বাধীনতার জন্য ভাষণ দিয়েছিলেন। জানালেন মন্দির কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা স্বপন গঙ্গোপাধ্যায়। ইতিহাস আর আধ্যাত্মিকতার আশ্চর্য মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে।

মন্দিরের প্রাচীন ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, বাংলা ছেড়ে সদ্য রাজধানীতে আগত প্রায় ৩০০ জন বাঙালির নিরন্তর প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকার এক একর জমি দান করেন পুজোর জন্য।  তারপরেই  রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় থেকে ঢিল-ছোঁড়া দূরত্বে গড়ে ওঠে এই কালী মন্দিরটি। নিত্যপুজোর পাশাপাশি প্রতি বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে ধুমধাম করে হয় বাৎসরিক পাশাপাশি (Kalipuja)।

কালীপুজোর পাশাপাশি হয়ে আসছে দুর্গাপুজোও। শুধু দিল্লি শহরই নয়, দিল্লির আশপাশের এলাকা নয়ডা, গাজিয়াবাদ, ফরিদাবাদ, গুরগাঁও থেকেও প্রতি বছর হাজার হাজার বাঙালিদের পাশাপাশি ভিড় জমান অবাঙালি ভক্তরাও। যদিও করোনাকালে  বদলাতে হয়েছে দর্শনার্থী প্রবেশের নিয়ম। কিন্তু ভক্তদের কথা মাথায় রেখেই চালু করা হয়েছে ওয়েবসাইট। যার ফলে অনলাইনের মাধ্যমে এবারও ঘরে বসেই সম্ভব হবে মায়ের দর্শন। আধুনিকতার জোয়ারে গা না ভাসিয়ে প্রথম দিন থেকে চলে আসা সাবেকি রীতিনীতিতে কোনও বদল না করে সম্পূর্ণ নির্ঘণ্ট মেনে পুজোর বিধি পালন করাই এই পুজোর মূল আকর্ষণ ও বিশেষত্ব।

 

 

 

 

 

Previous articleবামেদের ভোটের খরায় ‘শান্তিজল’ শান্তিপুর
Next articleপিছিয়ে থেকেও রোনাল্ডো ম‍্যাজিকে আটালান্টার বিরুদ্ধে ড্র ম‍্যানইউর