BSF Attack : ‘বিএসএফের মদত ছাড়া সীমান্তে পাচার সম্ভব নয়’: উদয়ন গুহ

সীমান্ত সমস্যা সমাধানে যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভল্লা (Ajay Bhalla) রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বরাষ্ট্র সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকার(Bhagabatiprashad Gopalika) সঙ্গে বৈঠকে বসছেন, ঠিক সেই সময়েই সীমান্তে গুলি চালনার ঘটনার দায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঘাড়ে চাপালেন তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ(Udayan Guha)। সিতাই(Sitai) কাণ্ডে তিনি বলেন, ‘‘বিএসএফ কেন মাথায় গুলি করল? কোমরের নীচে কেন গুলি চালানো হল না? বিএসএফ-এর মদত ছাড়া সীমান্তে কোনও কিছুই পাচার করা সম্ভব নয়। আমি সীমান্তবর্তী এলাকার বিধায়ক। অধিকাংশ কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের সমস্যার কথা আমি জানি। স্টিলের ব্লেড দিয়ে মোড়া কাটাতাঁরের বেড়া পেরিয়ে কী করে পাচার হয়? তা নিয়ে সকলের মনেই প্রশ্ন আছে। ’’সিতাইয়ের ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাবদিহি করা প্রয়োজন বলে দাবি তুলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন:Sc EastBengal : রবিবার মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে চতুর্থ প্রস্তুতি ম‍্যাচে নামতে চলেছে লাল-হলুদ ব্রিগেড

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিতাইয়ের চামটা এলাকায় বিএসএফ-এর(BSF) গুলিতে তিন সন্দেহভাজন পাচারকারীর মৃত্যু হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃত তিনজনের মধ্যে এক জন ভারতীয়, বাকি দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক। মৃত ভারতীয়ের নাম প্রকাশ বর্মণ। কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে দিনহাটার(Dinhata) বিধায়ক বলেন,  ‘‘বিএসএফ মাঝে মধ্যে দু’একজনকে গ্রেফতার করে, গুলি চালায়, কিন্তু পাচার সব সময় চলতে থাকে। মাঝে মাঝে যখন পাচারকারীদের সঙ্গে টাকা পয়সার ভাগে সমস্যা হয়, তখন বিএসএফ গুলি চালায়। এলাকার মানুষদের উপর জুলুম চলতে থাকে। মনে রাখতে হবে, কাউকে হত্যা করার অধিকার বিএসএফ-এর নেই। গুলি করে আটকাতে পারতেন সীমান্তরক্ষীর বাহিনীর সদস্যরা। তা করা হল না। বিএসএফ-এর দিকে কেউ পাথর ছুড়েছে, এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। এ সব অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি এই কাজে। বিএসএফ-এর উপর অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ করুক। না হলে অশান্তি বাড়বে।’

এদিন উদয়ন গুহ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি, কাঁটাতারের বেড়া একেবারে জিরো পয়েন্টে দেওয়া হোক। সেখানে গেট না থাকলেও অসুবিধা নেই। তা হচ্ছে না, ভারতের ভূখণ্ডের ১৫০ গজ ভিতরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে। ভারত নিজের জমি ছেড়ে দিচ্ছে। যত অত্যাচার, জুলুম, ভারতের কাঁটাতার এলাকার ভিতরে ভারতীয়দের উপর করা হয়। এত দিন ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিএসএফের এলাকা ছিল। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় এই এলাকায় বিএসএফ হস্তক্ষেপ করতে পারত। এখন নতুন আইন বলবৎ করার চেষ্টা হচ্ছে পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে ৫০ কিলোমিটার বিএসএফ-এর আওতায় আনার চেষ্টা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদ করেছেন। আমরাও প্রতিবাদ করছি। কারণ, ৫০ কিলোমিটার হলে অনেকদূর পর্যন্ত এলাকা বিএসএফের এক্তিয়ারের মধ্যে চলে আসবে। আমরা যাঁরা সীমান্ত এলাকায় থাকি, তাঁরা জানি, কী ভাবে বিএসএফ-এর এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় জুলুম চালায় বাহিনী। আমাদেরও গাড়ি আটকে রেখে বারবার নাজেহাল করা হয়। এ বার সাধারণ মানুষও অত্যাচারের মুখে পড়বে।’’

সিতাই (Sitai) সীমান্তে বিএসএফ (BSF) -এর গুলি চালানোর ঘটনায় ইতিমধ্যেই নানান প্রশ্ন উঠেছে। সত্যিই গুলি চালানোর মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কিনা,তানিয়ে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। কোচবিহার সীমান্ত গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের আওতায় পড়ে। তাই সিতাই সীমান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএসএফ কর্তার রিপোর্ট তলব গুয়াহাটির বিএসএফ-এর আইজির। কী ঘটনা ঘটেছিল? গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কিনা? এধারণের একাধিক প্রশ্ন নিয়ে মোট ৬টি বিষয়ে জানতে চেয়ে রিপোর্ট চাইলেন গুয়াহাটির আইজি। গুলি চালানোর কারণ উল্লেখ করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Previous articleMohammad Rizwan: রিজওয়ানের দায়বদ্ধতায় মুগ্ধ ক্রিকেট বিশ্ব, সেমিফাইনালের আগে দু’রাত আইসিউতে ছিলেন তিনি
Next articleViswabharati: ফের বিশ্বভারতীতে বিক্ষোভে পড়ুয়ারা