বিজেপিতে ১ লাখে পুরভোটের টিকিট! সুকান্ত-দিলীপ ঘনিষ্ঠ অডিও সংলাপের দুই নেতাই

আসন্ন পুরভোটে (Kolkata Corporation Election) দলীয় টিকিট পাইয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য বিজেপির (BJP) তরফে টাকা চাওয়া হচ্ছে। প্রতিটি টিকিটের মূল্য ১ লক্ষ টাকা। যেখানে উঠে আসছে বিজেপি শীর্ষ নেতাদের নাম। খোদ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) “সুপারিশ”-এ টিকিট দেওয়ার জন্য ১ লক্ষ টাকা দাবি করছে বিজেপি যুবমোর্চার নেতা। রবিবার ভাইরাল হওয়া এই অডিয়ো-সংলাপ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।

ওই অডিয়ো-সংলাপের শুরুতে শোনা যাচ্ছে, “হ্যাঁ বলো, সকালে ফোন করলে তুমি রাত্রিবেলা ফোন কর…।” ওই কথাটিতে যাঁর গলা শোনা যাচ্ছে, তাঁর সঙ্গে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা-সেকুলার (HAM)-এর শতদ্রু রায় (Shatadru Roy)। জিতিন রাম মাঝির (Notun ram Majhi) দল হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা বিহারে NDA জোট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শরিক। বিহারে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকারও চালাচ্ছে তারা। সেই দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি শতদ্রু নিজে ভাইরাল অডিওর সত্যতা স্বীকার করেছেন। এবং জানিয়েছেন, ফোনের উল্টো দিকে থাকা বিজেপি যুবনেতা প্রীতম সরকার (Pritam Sarkar) তাঁর কাছে কলকাতা পুরভোটের প্রতিটি টিকিটের জন্য ১ লক্ষ টাকা করে দাবি করেছে।

আরও পড়ুন:Life Link App:এক ক্লিকেই দুয়ারে অ্যাম্বুলেন্স থেকে ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক পরিষেবা নিয়ে হাজির ‘Life Link’

কে এই প্রীতম?

নিজেকে বিজেপির রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি প্রীতম সরকারের। তাঁর দাবি, নেহাতই অযৌক্তিক নয়। বিভিন্ন জায়গায় প্রীতমের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। একটি বৈঠকেও সুকান্তের ও দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি শংকর সিকদারের পাশে ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখা যাচ্ছে প্রীতমকে। যদিও তারপরও কোনও প্রীতমকে চেনেন না বলে দাবি সুকান্তের। ব্যাক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপের ভিতরে একাধিক ছবিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দেখা যাচ্ছে। শংকর সিকদার ঘনিষ্ঠ এই যুবনেতাকে একটি ছবিতে রাহুল সিনহা, নিশীথ প্রামানিকদের সঙ্গেও দেখা যাচ্ছে। এছাড়া বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে অডিও ক্লিপিং থেকে। যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ”শুভেন্দুদার বাড়ির পুজোয় গিয়েছিলাম।” আবার বিজেপি নেতা অনির্বান গাঙ্গুলি এই প্রীতম সরকারকে উত্তরীয় পরিয়ে দিচ্ছেন, সেই ছবিও বাইরে এসেছে। সবমিলিয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রীতমের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর কী বললেন প্রীতম?

বিশ্ব বাংলা সংবাদের তরফে প্রীতম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই ভিডিওর কোনও সারবত্তা নেই। সর্বৈব মিথ্যা। ভিডিওতে টাকা চাওয়ার কন্ঠস্বর তাঁর নয়। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আসলে তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা দক্ষিণ কলকাতার জেলা সভাপতি শংকর শিকদারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রচনা করতেই এমন অডিও তৈরি করা হয়েছে। বিজেপির অন্দরেই কেউ বাকারা এমন ষড়যন্ত্র কিছুদিন ধরে রচনা করেছেন বলেও দাবি প্রীতমের। আর শতদ্রু রায় নিজের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে এমন কাজকর্ম করছেন।

কী বলছেন শতদ্রু রায়?

অডিওর সত্যতা স্বীকার করেছেন শতদ্রু। তাঁর দাবি, প্রীতম সরকার ফেঁসে গিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন। কিছুদিনের মধ্যেই প্রমাণ হয়ে যাবে এই অডিও সম্পূর্ণ সত্য। আইনগত ব্যবস্থা নেবেন তিনি। টাকার বিনিময় টিকিট বিক্রি করার কথা বলছেন প্রীতম। রাজনীতিতে এমন দালাল এবং জুয়াড়িদের কোনও জায়গা নেই। বিষয়টি তিনি জোট শরিক বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গোচরেও এনেছেন। শতাব্দী দাবি, খুব বেশিদিন তিনি প্রীতমকে চেনেন না। কিছুদিন আগে বিজেপির প্রয়াত কাউন্সিলর তিস্তা বিশ্বাসের শেষকৃত্যে কেওড়াতলা শ্মশানে গিয়ে প্রীতমের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। তখনই প্রীতম তাঁকে ও তাঁর দল হামকে পুরভোটে টাকার বিনিময় টিকিট পাইয়ে দেওয়ার অফার দেয়। এরপর থেকেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আমার জন্য তক্কে তক্কে ছিলেন শতদ্রু।

 

Previous articleJagadhatri Pujo: চন্দননগরে বিসর্জনের সঙ্গেই রিষড়ায় শুরু জগদ্ধাত্রী উৎসব
Next articleManipur Terror Attack: গান স্যালুটে চিরবিদায়, বীর সৈনিককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় গ্রামবাসীদের