Tripura Election: কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে ফোটার আগেই ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী তৃণমূল

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Avishek Banerjee) ডাকে সাড়া দিল ত্রিপুরা (Tripura)। ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ শুরু হয়ে গেল সেখানে। বিজেপির (BJP) লাগাতার হামলা, মামলা, তান্ডব, ছাপ্পা ভোটের পরেও মাত্র দুমাসের সাংগঠনিক অভিযানে পুরভোটে (Tripura Election) মানুষের মন কেড়েছে তৃণমূল। আমবাসাতে দল একটি আসন জিতে নিয়েছে। আর সব মিলিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তৃণমূল। সবচেয়ে বড় কথা দল গড়ে ২০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে।

তাতেই চমকে গিয়েছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপি ছাপ্পা ভোট দিয়ে বোর্ড গড়লেও সবাই বলছেন অবাধ ভোট হলে তারা মুছে যেত। নৈতিক জয় হয়েছে তৃণমূলের। বাংলায় কুড়ি শতাংশ ভোট পেতে বিজেপিকে দু’দশক অপেক্ষা করতে হয়েছিল। সেখানে ত্রিপুরায় দুমাসেই চমকে দেওয়ার মত ভোট শতাংশ। বহু ওয়ার্ডে নামমাত্র ভোটে জিতেছে বিজেপি। ছাপ্পা না হলে হারত।

বিজেপি যতই তাদের জয়ের প্রচার করতে চাক, আগরতলার মন খারাপ। কারণ ত্রিপুরা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। এই রায় জনমতের প্রতিফলন নয়। বরং তৃণমূল মানুষকে ধন্যবাদ দিয়েছে কারণ এত সন্ত্রাস সত্ত্বেও তাঁরা ভোট দিয়েছেন তৃণমূলকেই।

আরও পড়ুন-মুম্বইয়ে মমতার সফরসঙ্গী অভিষেক, উদ্ধব ঠাকরে ও পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ধন্যবাদ দিয়েছেন দলের নেতা ও কর্মীদের। আমবাসার জয়ী সুমন পালকে নিয়ে উচ্ছ্বাস চলছে। তবে এর মধ্যেও তৃণমূল বলেছে, বিজেপিকে হারাতে চাইলে সরাসরি ভোট দিন আমাদের। অন্যদের ভোট দিলে ভোট নষ্ট হচ্ছে, ভোট ভাগ হচ্ছে। আগামী দিন এসব হবে না। ২০২৩ সালে ত্রিপুরার বুকে তৃণমূল সরকার গড়বে।

সবমিলিয়ে সন্ত্রাসের বাতাবরণের মধ্যেও আগরতলা শহর ত্রিপুরা পুরভোটে (Tripura Election) “নিঃশব্দ বিপ্লব”। মাত্র কয়েক মাসের সংগঠনের মানুষের হৃদয় জয় করল তৃণমূল কংগ্রেস। ব্যাপক সন্ত্রাস ছাপ্পা, রিগিং, হুমকি, মামলা-হামলার মধ্যেও বুক চিতিয়ে লড়ে প্রায় ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে আগরতলা পুরসভায় প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠলো তৃণমূল। যেটুকু ভোট মানুষ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তার প্রায় পুরোটাই এসেছে ঘাসফুল শিবিরের ঝুলিতে। রাস্তায় নেমে লড়াই করার মানসিকতা হারানো বামেদের দিক থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে ত্রিপুরাবাসী। আর গোটা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়েছে কংগ্রেস। মানুষ যেখানে একটু ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, সেখানেই বিজেপিকে উৎখাত করতে তৃণমূলকেই বেছে নিয়েছে। অর্থাৎ, ত্রিপুরাতে শাসক বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে প্রজারা “নিঃশব্দ বিপ্লব” ঘটিয়েছে। ফলে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলেই উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে বিজেপির ঘটি যে উল্টে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

গত বৃহস্পতিবার রক্তক্ষয়ী ভোটের দিনই ছবিটি পরিষ্কার হয়ে যায়। যখন শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দাঁতে দাঁত চেপে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছে তৃণমূল, তখন খুঁজে পাওয়া যায়নি বামেদের। আর কংগ্রেসের কথা যত কম বলা যায় ততই মঙ্গল। কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে ফোটার আগেই সেদিন তৃণমূল বুঝিয়ে দিয়েছিল ত্রিপুরার মাটিতে ঘাসফুল চাষের জন্য তৈরি জমি।

বিজেপির সন্ত্রাস আর জল মেশানো ভোট লুঠের মধ্যেও রাজধানী আগরতলা থেকে আমবাসা কিংবা তেলিয়ামুড়া থেকে সোনামুড়া সর্বত্র মানুষের ভোটে জিতল তৃণমূল। যা তেইশের আগে ত্রিপুরার সবুজ সেনাদের বাড়তি অক্সিজেন জোগাল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে নতুন ভোরের সূর্য দেখার অপেক্ষায় রইলেন তামাম ত্রিপুরাবাসী।

Previous articleSc Eastbengal: চোটের এমআরআই স্ক‍্যান করানো হল অরিন্দমের, রিপোর্টের অপেক্ষায় লাল-হলুদ কোচ
Next articleবাইক চালিয়ে প্রচারে নামলেন ফিরহাদ