Firhad Hakim: “নমস্কার, ববি হাকিম বলছি”, ছোট লালবাড়িতে “টক টু মেয়র” ঐতিহাসিক পদক্ষেপ

মানব সেবাই পরম ধর্ম, এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে এবং শপথ নিয়ে মানুষের পাশে থেকে ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টা কাজ করে গিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।

মস্তিষ্ক একেবারে ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল। মাথার উপর যেন বরফের আস্ত চাঁই চাপানো। তাঁকে সচরাচর মাথা গরম হতে বা উচ্চস্বরে কথা বলতে কেউ কখনও দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। অসম্ভব ধৈর্যশীল। ক্ষুরধার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বুদ্ধিমত্তা। রাজনীতির আঙিনায় একেবারে বুথস্তর থেকে কাজ করতে করতে আজ তিনি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী। কলকাতার বিদায়ী মেয়র (KMC Mayor)। দক্ষ প্রশাসক। শুধু নিজের এলাকা নয়, গোটা রাজ্যে তিনি এখন অন্যতম জনপ্রিয় একজন নেতা। তিনি সকলের প্রিয় সদাহাস্য ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তবে ববি (Boby) বলেই নামেই বেশি পরিচিতি তাঁর।

আরও পড়ুন: Weather Forecast:জমিয়ে ব্যাটিং করছে শীত,তাপমাত্রা কমে ১৩.৫ ডিগ্রি

রাত পোহালেই কলকাতা পুরভোট (KMC Election)। ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক লালবাড়ি দখলের লড়াই। যদিও এবার লড়াই অনেকটাই একপেশে। লড়াইয়ের ময়দানে শাসক তৃণমূলের (TMC) থেকে বিরোধীরা শত যোজন দূরে। এক-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে এবার তৃণমূলের কলকাতা পুরসভা দখল শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িযে এবার ফের নিজের ৮২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম। ২০০০ সাল থেকে একটানা চারবার জিতেছেন। দল আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নাম মেয়র হিসেবে প্রজেক্ট না করলেও, পুরবোর্ড গঠনের পর তিনিই ফের কলকাতার মহানাগরিক হতে চলেছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

ববি হাকিম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কলকাতা শহরের ভোল আরও বদলে যায়। তৃণমূল জমানায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পর ববি হাকিম যে সেরা মেয়র তা কার্যত আট থেকে আশি, শাসক থেকে বিরোধী সকলেই মেনে নিয়েছে। যদিও তিনি নিজে কোনওদিন ঐতিহ্যবাহী কলকাতা পুরসভার মেয়র হতে পারেন, সেটা ভাবেননি। আর মেয়র হওয়ার পর কলকাতার মানুষকে ভালো রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যে গুরু দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেছেন বলেই জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।

মানব সেবাই পরম ধর্ম, এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে এবং শপথ নিয়ে মানুষের পাশে থেকে ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টা কাজ করে গিয়েছেন। মানুষের অভাব-অভিযোগ এবং তার সমস্যা সমাধানে কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে সরাসরি নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ফিরহাদ হাকিম সর্বপ্রথম ‘‘টক টু মেয়র’’ (Talk to Mayor) কর্মসূচি গ্রহণ করেন। প্রতি শনিবার যেখানে সরাসরি মানুষ ফোন করে মেয়রকে কাছে পেয়েছেন। আর নাগরিক পরিষেবায় ‘’টক টু মেয়র” বা পরবর্তী সময়ে ‘’টক টু কেএমসি” কতটা ফলপ্রসূ তা হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েছেন কলকাতার মানুষ।

তিনি মেয়র থাকাকালীন করোনা মহামারির প্রকোপ থেকে আমফান, সবকিছু ঝড়ের মতো বয়ে গিয়েছে কলকাতার বুকের উপর দিয়ে। তছনছ করে দিয়েছে মহানগরকে। তবে ফিরহাদ হাকিম ও তাঁর সহকর্মীদের দক্ষতায় সেই ঝড়ঝাপটা সামলে আবার তিলোত্তমা হয়ে উঠেছে কলকাতা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে লকডাউনে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো থেকে করোনা টিকাকরণে কলকাতা পুরসভার অভূতপূর্ব সাফল্য ধরা দিয়েছে ফিরহাদ হাকিমের হাত দিয়েই।

ফিরহাদ হাকিমের হাত ধরেই গত কয়েক বছরে উন্নয়নের এভারেস্টে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু ফিরহাদ হাকিম বিশ্বাস করেন, উন্নয়নের কোনও সীমারেখা হয় না। উন্নয়ন যেখানে শেষ হয় সেখান থেকে আবার নতুন উন্নয়নের চিন্তা ভাবনা করতে হয়। তাই আত্মতুষ্টিকে প্রশ্রয় না দিয়ে আরও বেশি বেশি রাস্তা, আলো, পানীয় জল, উন্নত নিকাশি ব্যবস্থা করে আগামী দিনে আরও উন্নততর কলকাতা উপহার দেওয়াই লক্ষ্য হবে কলকাতা পুরসভার। একইসঙ্গে শহরকে পরিষ্কার ও নির্মল রাখতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জঞ্জাল অপসারণে জোর দিতে হবে। জঞ্জালকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার পরিকল্পনাও চলছে।

শহরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও ঢেলে সাজাতে হবে বলে মনে করেন ফিরহাদ হাকিম। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মেয়র’স ক্লিনিকের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। কোভিড পরীক্ষাও বাড়াতে হবে। বুস্টার বা বাচ্চাদের ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র মিললেই তা দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে বলেই জানিয়েছেন বিদায়ী মেয়র।

ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, তৃণমূল পুরবোর্ড গঠন করলে এবার প্রথম লক্ষ্যই হবে শহরবাসীকে স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়া। পুরসভায় দালালরাজ চিরতরে নির্মূল করতে অনলাইনেই সমস্ত পরিষেবা মিলবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।

Previous articleWeather Forecast:জমিয়ে ব্যাটিং করছে শীত,তাপমাত্রা কমে ১৩.৫ ডিগ্রি
Next articleOmicron:বুস্টার-সহ তিনটি করোনার ডোজ নিয়েও ওমিক্রনে আক্রান্ত মুম্বইয়ের যুবক