হাসপাতাল দখল করে বিজেপির বেআইনি বিরিয়ানি মোচ্ছব, হাতেনাতে ধরে ফেললেন এলাকাবাসী

হাসপাতালকে বিজেপির পার্টি অফিস বানিয়ে চলছিল বিরিয়ানি রান্নার মোচ্ছব। খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও তৃণমূল কর্মীরা হাতেনাতে ধরে ফেললেন। হাসপাতাল কর্মীরা স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, হাসপাতালের পরিচালক এবং বিজেপির ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সজল ঘোষের নির্দেশেই ভোটের দিনে ‘এই বেআইনি বিরিয়ানি’ আয়োজন করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:KMC Election: কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে শুরু ভোটগ্রহণ

ঘটনাস্থল ২৮ নম্বর ওয়ার্ড। সকাল ৯.৩০মিনিট। আইনজীবী তৃণমূল প্রার্থী অয়ন চক্রবর্তী স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পান দীনেন্দ্র স্ট্রিটে জেএন রায় হাসপাতালের ছাদ দখল করে বিরিয়ানি রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। রয়েছেন প্রায় জনা পঞ্চাশেক কর্মী। সেইসঙ্গে বেশ কিছু বহিরাগত। উদ্দেশ্য বিজেপি কর্মীদের দুপুরের ভুরিভোজে বিরিয়ানি পাঠানো এবং ওয়ার্ডে অস্থিরতা তৈরি করতে ও ভোটারদের প্রভাবিত করতে এখানে লুকিয়ে রাখাদের এলাকায় এলাকায় পাঠানো, বিরিয়ানি ভেট দেওয়া। অয়ন চক্রবর্তী কর্মী সমর্থকদের নিয়ে হাসপাতালে যান। ছাদে উঠতেই তৃণমূল কর্মীদের চক্ষু চড়কগাছ।বিরিয়ানির আয়োজন বিরাট ছাদ জুড়ে। প্রচুর কর্মী রান্না করছেন। প্যাকিংয়ের জন্য প্রচুর লোক।পুরোপুরি পরিকল্পনা করে ৫০-নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষ গোপনে এই আসরটি সাজিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, গতকাল গভীর রাত থেকে স্থানীয়রা বার বার অভিযোগ করেন হাসপাতালের ছাদে প্রচুর বহিরাগত জড়ো হয়েছেন এবং রীতিমত মদ, মাংস নিয়ে মচ্ছব চলেছে। কর্মীদের চেপে ধরতেই তারা প্রথমে হাসপাতালের রোগীদের জন্য রান্না করা হচ্ছে বলে যুক্তি দেন। কিন্তু বিরিয়ানি কীভাবে অসুস্থ রোগীদের পথ্য হতে পারে তার কোনও জবাব মেলেনি। হাসপাতালের কর্মীদের একটু জেরা করতেই আসল তথ্য বেরিয়ে পড়ে। ক্যাটিরিংয়ের দায়িত্বে থাকা তপন মহাপাত্র পরিস্কার জানান, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী এবং জেএন রায় হাসপাতালের অন্যতম পরিচালক সজল ঘোষের নির্দেশেই এই বিরিয়ানি তৈরি হচ্ছিল। প্রায় ৩ হাজার জনের রান্নার কর্মযজ্ঞ চলছিল। সবটাই সজলের ওয়ার্ডের কর্মীদের এবং বহিরাগতদের খাওয়ানোর জন্য। হাসপাতালের কর্মীরা স্পষ্ট ভাষায় জানান, তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। পুরোটাই বিজেপি প্রার্থী করছেন।

তৃণমূল প্রার্থী অয়ন চক্রবর্তী পরিষ্কার ভাষায় জানান, বহিরাগতদের গ্রেফতার করতে হবে এবং হাসপাতাল থেকে বিরিয়ানি বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, অত্যন্ত অনৈতিক এবং বেআইনি কাজ চলছিল হাসপাতালকে কেন্দ্র করে। হাসপাতালে এভাবে বিরিয়ানি রান্না হতে পারে সে অভিজ্ঞতা আমার প্রথম। আমরা প্রশাসনকে বলেছি যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। কারণ গতকাল রাত থেকে এখানে বহিরাগতরা জমায়েত করেছেন বলে অভিযোগ ছিল। কুণালের স্পষ্ট কথা হাসপাতালের বিরিয়ানি কর্মী বা রোগীদেরকে দেওয়া হোক কিন্তু একটি প্যাকেটও বাইরে আনা যাবে না। তৃণমূল কর্মীরা একজনও রোগী কিংবা রোগীর পরিবারকে ঢুকতে বা বেরোতে কোনওরকম বাধা দেননি।

 

কুণালের পদক্ষেপের পরই হাসপালের ছাদে বিরিয়ানি রান্না বন্ধ হয়। থানায় লিখিত অভিযোগ যায়। রান্না করতে আসা বহিরাগত কর্মীরা ফিরে যান। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অমিয় হাজরা বেকায়দায় পড়তেই জানান, আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না, সবটাই সজল ঘোষ করেছেন ও জানেন।


Previous articleSourav Ganguly: ‘ব্ড্ড ঝগড়া করে, কিন্তু ওর ‘অ্যাটিটিউড’ ভালো লাগে’, বিরাট প্রসঙ্গে বললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
Next articleKMC Elections: কলকাতার পুরভোটে বিচ্ছিন্ন অশান্তি, বোমার আঘাতে গুরুতর জখম ১ ভোটার