মুজিবরের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে ত্রিপুরায় তৃণমূলের মোমবাতি মিছিলে মানুষের ঢল

বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হয়ে দীর্ঘদিন কলকাতার SSKM হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর অবশেষে গত বুধবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ত্রিপুরার তৃণমূল নেতা মুজিবর ইসলাম মজুমদার। এমন নির্মম ও নিশংস ভাবে তার ওপর হামলা চালানো হয়েছিল যে, চিকিৎসকদের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও শেষরক্ষা করা যায়নি। মুজিবরের মতো একজন সৎ-নির্ভীক-সজ্জন রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে দলমত নির্বিশেষে কেঁদেছে গোটা ত্রিপুরা। এবার তার হত্যাকারীদের গ্রেফতারও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে রাজনীতিবিদরা।

শনিবার সন্ধ্যায় আগরতলার ভগবান ঠাকুর চুমোহনীতে ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাম্প অফিস থেকে স্টিয়ারিং কমিটির কনভেনর সুবল ভৌমিকের নেতৃত্বে মোমবাতি হাতে এক প্রতিবাদ ও শোক মিছিলের আয়োজন করা হয়। এই মিছিল আগরতলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার পরিক্রমা করে। ধিক্কার ও প্রতিবাদ স্বরূপ মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। তাঁদের সঙ্গে পা মেলান পথ চলতি অনেক সাধারণ মানুষও।

মৌন মিছিল শেষে সুবল ভৌমিক বলেন, “মুজিবর ইসলাম মজুমদারের পরিকল্পিত হত্যাকান্ড শুধু তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার নয়, গোটা ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য রাজনৈতিক মহলের এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এমন অশান্ত ত্রিপুরা আগে দেখিনি। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এখানে জঙ্গলের রাজ কায়েম করেছে। আমরা অবিলম্বে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে যাদের জন্য মুজিবরকে চলে যেতে হল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছি।”

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার প্রয়াত তৃণমূল নেতা মুজিবর ইসলামের শেষকৃত্যে মানুষের ঢল নেমেছিল ত্রিপুরার রাস্তায়। চোখের জলে প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব থেকে সাধারণ মানুষ। ত্রিপুরায় দলীয় নেতার মরদেহের সঙ্গে সুবল ভৌমিক সহ স্থানীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি ছিলেন বাংলার তৃণমূল নেতৃত্ব – ব্রাত্য বসু, শান্তনু সেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতাকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাসভবনে যান বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা তথা আগরতলার বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মন, বিজেপি থেকে বরখাস্ত হওয়া আশিস সাহারাও। একসুরে তাঁরা তৃণমূল নেতা মুজবরের হত্যাকাণ্ডে যুক্ত দোষীদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন।

ছেলেবেলার বন্ধু, একদা রাজনৈতিক সহকর্মী মজিবুর ইসলাম মজুমদারকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে এসে বিস্ফোরক ছিলেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা তথা আগরতলার বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা দাবি করেন, মজিবুর ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে। তাই এই মামলায় তদন্তকারী সংস্থা ৩০২ খুনের মামলা রুজু করে চার্জশিট দিক। দুষ্কৃতীরা নির্মমভাবে মেরেছে। শুধু হাত ভেঙে দেওয়া নয়, গতবছর ২৮ আগস্ট ঘটনার দিন তাঁকে মাটিতে ফেলে বুকে লাথি মেরেছে দুষ্কৃতীরা। তার ফলেই মৃত্যু হয়েছে মজিবুরের।

আরও পড়ুন- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চরম সীমায় পৌঁছবে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ: IIT মাদ্রাজ

Previous articleদাপুটে অভিনেত্রী মঞ্জু দে
Next articleTalk to Mayor: দ্বিতীবার মেয়র হয়ে প্রথমবার যা শুনলেন, যা বললেন ববি হাকিম