মোদি সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় অনলাইন প্রতারণা দেড় লক্ষ! রিপোর্ট আরবিআইয়ের

ডিজিটাল লেনদেনের অভ্যাস বাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে সাধারণ মানুষকে ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড বা ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ে অভ্যস্ত হতে অনুরোধ করা হচ্ছে। ব্যবহার বাড়ছে ডিজিটাল ওয়ালেটেরও। কিন্তু তাতে যে প্রতারণার ফাঁদ বা পরিষেবার গাফিলতি ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে, তার প্রমাণ দিল খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।

একবছরে যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার সিংহভাগ দখলে রেখেছে ডিজিটাল লেনদেনই। সেই সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ। ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় গাফিলতিতে পিছিয়ে নেই এ রাজ্যও। এখানে একবছরে প্রতারণা বা গাফিলতি মিলিয়ে প্রায় ১৯ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে।

আরও পড়ুন- Amar Jawan Jyoti: ৫০ বছর পর নিভতে চলেছে ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’-এর অগ্নিশিখা, সরব বিরোধীরা
ব্যাঙ্কের পরিষেবায় গ্রাহক অসন্তুষ্ট হলে বা কোনও ব্যাঙ্কের দোষে আর্থিক ক্ষতি হলে, তার সুরাহা পাওয়ার অধিকার আছে গ্রাহকের। তিনি অভিযোগ জানাতে পারেন ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট শাখায়। সেখানে যদি একমাসের মধ্যে সুরাহা না-পাওয়া যায়, তাহলে অভিযোগ জানানো যায় ব্যাঙ্ক ওম্বুডসম্যানে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি শাখা ওম্বুডম্যান হিসেবে কাজ করে। সেখানে যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার একবছরের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আরবিআই। সেখানেই উঠে এসেছে ব্যাঙ্ক গ্রাহকের আর্থিক হয়রানির চাঞ্চল্যকর তথ্য।

জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে, অর্থাৎ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ওম্বুডসম্যানে এটিএম বা ডেবিট কার্ড সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে ৬০ হাজারের বেশি। মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত অভিযোগ ৪৪ হাজার ৩৮৫। ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত অভিযোগ ৪০ হাজার ৭২১টি। ব্যাঙ্ক কর্তারা বলছেন, এই অভিযোগগুলির মধ্যে যেমন আছে অকারণে চার্জ বাবদ বেশি টাকা কেটে নেওয়ার সমস্যা, তেমনই আছে ক্রেডিট কার্ডের ভুল বিলিং।

তথ্য বলছে, এটিএমে টাকা তোলার সময় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বেরিয়ে যাওয়ার এসএমএস এসেছে, কিন্তু হাতে টাকা পাননি গ্রাহক। ব্যাঙ্কও সেই টাকা ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ওম্বুডম্যানে এমন অভিযোগ এসেছে প্রায় ৩২ হাজার। সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন গ্রাহক, যখন তিনি দেখেছেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বেরিয়ে গিয়েছে, অথচ তিনি তার বিন্দুবিসর্গও জানেন না। এক্ষেত্রে তাঁরা ডেবিট কার্ডটি যেমন ব্যবহার করেননি, তেমনই তার তথ্যও কাউকে দেননি। এমন অভিযোগের সংখ্যা ১১ হাজার। এটিএম থেকে একবার মাত্র টাকা পেয়েছেন গ্রাহক, কিন্তু তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে একাধিকবার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগও প্রায় তিন হাজার। এমনই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
ওম্বুডসম্যানে জমা পড়া অভিযোগগুলির মধ্যে অনলাইন লেনদেনের পরই আছে ব্যাঙ্কের তরফে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ। অর্থাৎ গ্রাহককে ব্যাঙ্ক যে পরিষেবা বা আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে, তা তারা আদৌ পালন করেনি। সেই সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ৩৬ হাজার। অথচ একবছর আগে সেই সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার। আগে থেকে গ্রাহককে না জানিয়ে লেভি বা চার্জ বাবদ টাকা কেটে নেওয়ার মতো ঘটনাও নাজেহাল করেছে গ্রাহকদের। ব্যাঙ্কের থেকে কোনও সুরাহা না পেয়ে একবছরে ওম্বুডসম্যানে অভিযোগ জমা পড়েছে প্রায় ২১ হাজার। ঋণ নেওয়ার পর অকারণ হয়রানির শিকার হতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার গ্রাহককে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলছে, সাব মিলিয়ে গ্রাহকের অভিযোগের পাহাড় জমেছে ওম্বুসম্যানে। সেই সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ।

Previous articleAmar Jawan Jyoti: ৫০ বছর পর নিভতে চলেছে ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’-এর অগ্নিশিখা, সরব বিরোধীরা
Next articleHate Speech রুখতে কড়া আইনের দাবি জানিয়ে শাহকে চিঠি কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার