অবাধ-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দাবি করেও হারলেন অশোক, কংগ্রেস বলছে দম্ভই পরাজয়ের কারণ

ভোট পরবর্তী সময়ে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড দখল করার বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে কার্যত জোট বার্তা দিয়েছিলেন অশোকবাবু

গত ডিসেম্বরের শুরুতেই সক্রিয় রাজনীতিকে “আলবিদা” করেছিলেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, তিনি আর ভোটে লড়বেন না। কিন্তু রাজ্যের চার পুরনিগমে ভোটের বাদ্যি বাজতেই অশোক ভট্টাচার্যকে ফোন করেন স্বয়ং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁকে ভোটের ময়দানে নেমে লড়াই করে দলকে জেতানোর আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে অশোকবাবু শিলিগুড়ি পুরনিগমের ভোটে বাম তথা সিপিএমের মুখ হয়ে ভোটে লড়েছিলেন। কিন্তু নিট ফল জিরো। বাকি তিন পুরসভার মতো শিলিগুড়িতেও মুখ থুবড়ে পড়েছে সিপিএম। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথা রাখতে গিয়ে নিজের মুখে চুনকালি মাখতে হলো তাঁকে। শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রায় ৩০০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন একসময়ের দাপুটে এই বাম নেতা। শিলিগুড়ির বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড বামেরা দখল করলেও, হারতে হয়েছে হেভিওয়েট অশোক ভট্টাচার্যকে।

কিন্তু ফল তো এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। অন্তত গত শনিবার ভোটগ্রহণের পর অশোকবাবুর বক্তব্য ছিল, শিলিগুড়িতে শান্তিপূর্ণভাবেই মিটেছে ভোটপর্ব। শাসকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের কোনও অভিযোগ করেননি তিনি। বরং, শিলিগুড়ি পুরবোর্ড জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন প্রাক্তন মেয়র। সুতরাং, তাঁর এমন মনোভাবে অন্তত এটা প্রমাণ হয়, শিলিগুড়িতে মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর অশোক ভট্টাচার্যের কথায়, “আমি ভোটে লড়তে চাইনি। দল সিদ্ধান্ত নিলে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তও তুচ্ছ হয়ে যায়। দলের সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দিয়েছি।”

অন্যদিকে, ভোট পরবর্তী সময়ে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড দখল করার বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে কার্যত জোট বার্তা দিয়েছিলেন অশোকবাবু। অর্থাৎ, তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যেভাবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে, তাতে অন্তত অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে শিলিগুড়িতে। সুতরাং, এক্ষেত্রে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বা অন্য কোনও অভিযোগ তিনি করেননি। অর্থাৎ, এই ফলাফল মানুষের গণতান্ত্রিক রায়ের সঠিক প্রতিফলন।

শিলিগুড়ির এই ফলাফলের জন্য উল্টোদিকে অশোক ভট্টাচার্যকেই দায়ী করেছেন শিলিগুড়ির কংগ্রেস নেতা শংকর মালাকার। তাঁর কথায়, “অশোক ভট্টাচার্যের দম্ভ ও দলের আত্মবিশ্বাসের কারণেই বামেদের এই পরিণতি।” বামেদের সার্বিক ফলাফল নিয়ে তিনি আরও বলেন, “বারবার জোটের কথা বলেও তারা আগেভাগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলেছে বামেরা। জোট বেঁধে কংগ্রেস-বাম লড়াই করলে ভোটারদের আস্থা অর্জন করা যেত। কিন্তু বামফ্রন্টের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও অহংকারই ডুবিয়েছে।”

আরও পড়ুন- ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যুকে ঘিরে রণক্ষেত্র আমতা, স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

Previous articleSurajit Sengupta: এখনও ভেন্টিলেশনে প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত
Next articleবিজেপি নিশ্চিন্ত হয়ে যাবে, কেন এমন বললেন রীতেশ?