ব্যাপক EVM লুটের পরও কমেছে আসন, জিতলেও উত্তরপ্রদেশে BJP-র মাথাব্যাথা অখিলেশ

উত্তরপ্রদেশ(UttarPradesh) রাজ্যে বিজেপির(BJP) জয় এসেছে ঠিকই, তবে তা কোনও ভাবেই বিপুল জয় নয়। বরং গতবারের তুলনায় এবার আসনসংখ্যা আনেকটাই বাড়িয়েছে অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি(SP)। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল এবারের নির্বাচনে লক্ষ লক্ষ ইভিএম(EVM) লুঠ ও ব্যাপক কারচুপির পর বিজেপির এই ফল আগামী লোকসভা নির্বাচনের(Loksava Election) দিকে নজর রেখে যথেষ্ট চিন্তার। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে যেভাবে ফিনিক্স পাখির মতো ফিরে এসে সমাজবাদী পার্টি বিজেপির ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে তা ভয় ধরাচ্ছে মোদি-যোগীর। সপার সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দ(Kiranmay Nanda) স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, সমাজবাদী পার্টিকে হারাতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হয়েছে। ভোটে কোথাও জোর করে হারানো হয়েছে। কোথাও ইভিএম সন্ত্রাস হয়েছে।

একের পর এক ইস্যুতে এবারের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে শুরু থেকেই ব্যাকফুটে ছিল বিজেপি। তবে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ব্যাপক কারচুপির। বহু স্ট্রং রুম থেকে গড়ি করে রাতারাতি সরিয়ে ফেলা হয় প্রায় ১৯ লক্ষ ইভিএম মেশিন। এই ঘটনায় সরব হয় বিরোধীরা। গোটা ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বলে আখ্যা দেয় সপা। অভিযোগ, নিশ্চিত হার বুঝেই ভোটে জিততেই এভাবে কারচুপি করছে বিজেপি। এমনকি সরকারি আধিকারিকরাও স্বীকার করে নেন ইভিএমের নিরাপত্তায় খামতি ছিল এবং ইভিএম মেশিন সরানো হয়েছিল। যদিও সেই মেশিনগুলি ছিল অব্যবহৃত। তবে প্রশ্ন ওঠে যদি কথার খাতিরে মেনে নেওয়া হয় অব্যবহৃত মেসিন সরানো হয়েছে তাহলে ওর সঙ্গে যে ব্যবহৃত মেসিন সরানো হয়নি তার গ্যারান্টি সরকার কীভাবে দিচ্ছে? তবে কারচুপির কথা বিজেপি অস্বীকার করলেও কারচুপি যে হয়েছে তা ‘অফ দ্য রেকর্ড’ মেনে নিয়েছেন বহু নেতাই। তার পরও বিজেপির এই ফল নিশ্চিত ২৪-এর লক্ষ্যে নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগজনক।

আরও পড়ুন:জিতেও যোগী শাহের কাঁটা, ২৪-এ মোদির জায়গায় ‘বুলডোজার বাবা’কে চাইছে ‘ভক্তকূল’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে ৩৮৪ আসনে লড়ে ৩১২ টি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। এবার আসন সংখ্যা অনেকখানি কমে দাড়িয়েছে ২৭৩। অর্থাৎ গতবারের তুলনায় আসন কমেছে ৪৯ টি। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য সহ একাধিক মন্ত্রী হেরেছেন নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে। পাশাপাশি, জোটের লড়াইয়ে ২০১৭ সালে মাত্র ৪৭ টি আসন পাওয়া সমাজবাদী পার্টি এবার ১২৫ টি আসন পেয়েছে। অর্থাৎ সপার আসন সংখ্যা বেড়েছে ৭৩ টি। বলার অপেক্ষা রাখে না আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে নজরে রেখে যোগীতো বটেই অখিলেশ এখন খোদ মোদির মাথাব্যাথার কারণ।

এদিকে ৫ রাজ্যের ভোটের ফল প্রকাশের পর সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মমতা বলেন, এটা হার নয়। দারুন লড়াই করেছে দল। ইভিএম কারচুপি সহ নানা অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। সেসব সত্য হলে মারাত্মক। এই রাষ্ট্রীয় ভোট সন্ত্রাসের সঙ্গে লড়াই করে দুর্দান্ত ফল করেছে সমাজবাদী পার্টি। লড়াই চলুক। একসঙ্গে ২০২৪-এ দিল্লি বদল করব।

পাশাপাশি তার কথা হয় সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দর সঙ্গেও। তিনিও পরিস্কার জানান, সমাজবাদী পার্টিকে হারাতে কীভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হয়েছে। ভোটে কোথাও জোর করে হারানো হয়েছে। কোথাও ইভিএম সন্ত্রাস হয়েছে। আবার কোথাও বিরোধী দলের অনেকেই বিজেপির ‘নুন’ খেয়ে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তবে আসন ও ভোট বাড়িয়ে সমাজবাদী পার্টি এবার আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামছে।

Previous articleগরুপাচারকাণ্ড :  অনুব্রত মণ্ডলের অবেদন খারিজ করল হাইকোর্ট
Next articleএসএসসি : সিবিআই তদন্তের নির্দেশে দুদিনের অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের