ম্যানহোলে মৃত্যুতে এগিয়ে উত্তরপ্রদেশ- গুজরাট!

গোটা দেশেই ম্যানহোলে পড়ের মৃত্যুর ঘটনা কমবেশি হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গও তার ব্যতিক্রম নয়। সংশ্লিষ্ট একটি কমিশনের প্রকাশিত তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে, এই বিষয়ে গোটা ভারতের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের স্থান দশম। অন্যদিকে, তালিকায় থাকা প্রথম তিনটি রাজ্য হল, যথাক্রমে তামিলনাড়ু, গুজরাট এবং উত্তরপ্রদেশ। গত ২৯ বছরের প্রকাশিত তথ্যভাণ্ডার অনুসারে একথা জানা গিয়েছে।

সম্প্রতি কলকাতায় ম্যানহোলে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তা নিয়ে অনেক বিতর্কও হয়। বস্তুত, একজন মানুষের মৃত্যুকে ছাপিয়ে আলোচনার মোড় ঘুরে যায় রাজনীতির দিকে। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যের সরকার এবং প্রশাসনের উদাসীনতাতেই এমন ঘটনা ঘটে। এই অভিযোগ যে ভিত্তিহীন, তা একেবারেই বলা যায় না। কারণ, গাফিলতি এবং নজরদারির অভাব থাকে বলেই বারবার এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। প্রাণ দিয়ে যার মূল্য চোকাতে হয় কিছু মানুষকে। তবে, গোটা ভারতের ছবিটা দেখলে বোঝা যায়, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়। গাফিলতির এই পরম্পরা রয়েছে দেশের সর্বত্র।

সাফাই কর্মচারীদের জাতীয় কমিশনের তরফ থেকে একটি ডেটা বা তথ্যভাণ্ডার প্রকাশ করা হয়েছে। ১৯৯৩ সাল থেকে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতের কোথায়, কোথায় ম্য়ানহোলে পড়ে গিয়ে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, সেই তালিকা সেখানে তুলে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে তালিকার দশম স্থানে। এই ২৯ বছরে আমাদের রাজ্যে ম্যানহোলে পড়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে মোট ২৩ জনকে। তালিকার শীর্যে রয়েছে দক্ষিণী রাজ্য তামিলনাড়ু। গত ২৯ বছরে সেখানে ম্যানহোলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২১৮ জনের। অর্থাৎ সংখ্যাটা পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১০ গুণের কাছাকাছি! এমন পরিসংখ্যান উদ্বেগ বাড়িয়েছে সে রাজ্যের প্রশাসনের। তথ্য বলছে,সমস্যা মেটাতে ইতিমধ্যেই একাধিক সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচি চালানো হয়েছে। তাতেও লাভ খুব একটা হয়নি। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছেন, অসতর্কতা এবং প্রশাসনের নজরদারির অভাব এই ধরনের ঘটনার প্রধান কারণ।

তবে, শুধুমাত্র ম্যানহলে পড়ে গিয়েই যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তা কিন্তু নয়। অনেক সময় ভূতলে থাকা নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়েও শ্রমিকদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। কারণ, নর্দমার পচা জল ও আবর্জনায় বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। যে শ্রমিকরা নর্দমা পরিষ্কার করতে নামেন, তাঁদের কোনও সুরক্ষাকবচ থাকে না। কোনও কোনও সময় এই অব্যবস্থার খেসারত দিতে হয় প্রাণ দিয়ে। বৃহস্পতিবার মাদুরাইতে ঠিক এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। মাটির নীচে নিকাশিনালায় কাজ করতে নেমে মৃত্যু হয়েছে তিন যুবকের। মৃতেরা হলেন শিবকুমার (৪৫), লক্ষ্মণ (৩১) এবং সারাবনন (৩২)। তবে এঁরা কেউই সাফাইকর্মী নন। সকলেই ছিলেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রী। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২৯ বছরে গোটা দেশে ম্যানহোলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৯৮৯ জনের। তালিকাটি নিম্নরূপ-
১) তামিলনাড়ু- ২১৮
২) গুজরাট- ১৫৩
৩) উত্তরপ্রদেশ- ১০৭
৪) দিল্লি- ৯৭
৫) কর্ণাটক- ৮৬
৬) হরিয়ানা- ৮৪
৭) পঞ্জাব- ৪৩
৮) মহারাষ্ট্র- ৩৯
৯) রাজস্থান- ৩৮
১০) পশ্চিমবঙ্গ- ২৩
১১) অন্ধ্রপ্রদেশ- ২২
১২) তেলঙ্গনা- ১৭
১৩) মধ্যপ্রদেশ-১৬
১৪) কেরালা- ১৩
১৫) পুদুচেরি ৯
১৬) উত্তরাখণ্ড- ৮
১৭) গোয়া- ৬
১৮) চণ্ডীগড়- ৩
১৯) বিহার, ওডিশা, ত্রিপুরা- প্রত্যেক রাজ্যে ২ জন করে
২০) ছত্তিশগড়- ১

আরও পড়ুন- অসুস্থ, হাঁটতে পারছেন না, সিবিআই হাজিরায় ফের ৪ সপ্তাহ সময় চাইলেন অনুব্রত

Previous articleঅসুস্থ, হাঁটতে পারছেন না, সিবিআই হাজিরায় ফের ৪ সপ্তাহ সময় চাইলেন অনুব্রত
Next articleপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী!v