Monday, November 10, 2025

রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে স্থগিতাদেশ ঐতিহাসিক: স্বাগত জানিয়ে আইন বাতিলের দাবি সুজাত ভদ্রর

Date:

Share post:

রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে (Sedition Law) স্থগিতাদেশ জারি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত- মন্তব্য করলেন মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র (Sujata Bhadra)। তিনি বলেন, শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশকে স্বাগত। এই আইনে এখন আর কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। যাঁরা ইতিমধ্যেই 124A-এর অধীন বন্দি আছেন তাঁরা জামিন পাবেন। সুজাত ভদ্রের অভিযোগ, এই আইন অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারের বিরোধিতা করে অনেকেই এই আইনের জালে জেলবন্দি হয়েছেন।

সুজাত ভদ্র বলেন, এই ব্রিটিশ আমলের ঔপনিবেশিক আইন অবিলম্বে বিলুপ্ত করা উচিত। এই ধারা অনুসারে প্রথম গ্রেফতার করা হয় বালগঙ্গাধর তিলককে। পরে ব্রহ্মানন্দ উপাধ্যায়, মহাত্মা গান্ধীকেও রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অধীনে ধরা হয়। এই আইনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এর জেরে জেলবন্দি হয়েছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে সাংবাদিক, সাহিত্যিক থেকে শুরু করে মানবাধিকার কর্মীও।

তবে, সুজাত বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে যাঁদের ধরা হয়েছে, তাঁরা এই ধারায় জামিন পেলেও যদি ইউএপিএ-সহ অন্য ধারায় জেলবন্দি থাকেন, তাহলে তাঁদের এখনই মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

একনজরে দেখা যাক রাষ্ট্রদ্রোহ আইন কী-

ব্রিটিশ ভারতে ১৮৬২ সালে দণ্ডবিধি চালু হয়। তখন রাষ্ট্রদ্রোহ নিয়ে আলাদা সেকশন ছিল না। ১৮৭০ সালে ধারাটি যুক্ত হয়। এই আইনে কেউ শব্দ, কথা লিখিত অথবা স্বাক্ষরের দ্বারা বা অন্যভাবে ঘৃণা বা অবজ্ঞা ছড়ালে বা চেষ্টা করলে, উত্তেজিত করলে, অথবা উত্তেজনাকে অসন্তোষে বদলানোর চেষ্টা করলে- সরকার তাঁকে আইন অনুযায়ী আজীবন কারাবাস, সঙ্গে জরিমানাও করতে পারে। এই আইনে বিনা পরোয়ানায় কাউকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো যায়। গতবছর সুপ্রিম কোর্ট এই আইনের উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও কি এই আইনের প্রয়োজন আছে? এই আইনের পর্যালোচনা কেন করা হবে না? জানাতে চায় শীর্ষ আদালত।

UAPA কী-
ভারতের একতা, অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব, সাধারণ নিরাপত্তা বা আর্থিক নিরাপত্তাকে সঙ্কটে ফেলার উদ্দেশ্য নিয়ে কোন কাজ, বা দেশের বা বিদেশের যে কোন অংশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক এবং সন্ত্রাস ছড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে করা কোনও কাজ ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’ হিসেবে গণ্য হবে। এই কাজগুলির সঙ্গে জড়িত কোনও ব্যক্তিকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষণা করার ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে কেন্দ্রের। সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কাউকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষণা করতে পারে সরকার। ঘোষণার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ দিতে বাধ্য থাকবে না সরকার

দেশ থেকে চিরতরে মুছে যাক রাষ্ট্রদ্রোহ আইন। আইনের বইতে এর যেন কোনও অস্বস্তি না থাকে- চান সুজাতর মতো মানবাধিকার কর্মীরা। আর সেটা যতদিন না হচ্ছে, ততদিন এই নিয়ে তাঁদের লড়াই চলবে।

spot_img

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...