মস্তিষ্কে ডাস্টবিন, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি: দক্ষিণেশ্বরে বিজেপির নাম না করে তীব্র কটাক্ষ মুখ্য়মন্ত্রীর

যাদের মস্তিষ্ক নোংরা ভরা ডাস্টবিন, তারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে। বৃহস্পতিবার, দক্ষিণেশ্বরে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড (Light and Sound)-এর উদ্বোধনে নাম না করে বিজেপি-কে তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কেএমডিএ (KMDA)-র উদ্যোগে মন্দির চত্বরে শ্রীরামকৃষ্ণদেব, রানি রাসমনির ব্যবহৃত জিনিসের সংগ্রহশালারও উদ্বোধন করেন তিনি। এদিন, অডিও-ভিজুয়াল মাধ্যমে প্রাচীন মন্দিরের ইতিহাস বর্ণনা করা ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ চালু হয়। সেটা দেখার পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই সব কাহিনী শুনেই তাঁর বড় হওয়া। এরপরেই তিনি বলেন, অনেকেই তাঁর সমালোচনা করে, তাঁর বিরুদ্ধে বাজে কথা বলে। কারণ, তাদের মস্তিষ্কে আবর্জনা ভরা ডাস্টবিন। সেই কারণেই তারা খারাপ কাজ করে।

রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের বাণী উদ্ধৃত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টাকা মাটি, মাটি টাকা- এই বাণীর মধ্যে দিয়ে রামকৃষ্ণ বোঝাতে চেয়েছিলেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত লোভ করতে নেই। যারা অতিরিক্ত লোভ করে, তারাই অসৎ পথে যায়। রানি রাসমণি থেকে স্বামী বিবেকানন্দ সবাই সর্ব-ধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে গিয়েছেন। কিন্তু অনেকেই সেটা না করে বিভেদের রাজনীতি করছে। নাম না করে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। ধর্ম নিয়ে অশান্তি সাধারণ মানুষ করে না। অশান্ত ছড়ায় কিছু রাজনৈতিক লোভী নেতা।“

দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের উন্নয়নের বিষয়ে অছি পরিষদ দিল্লি গিয়েছিল কিন্তু সেখানে সহয়োগিতা মেলেনি। জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী কুশল চৌধুরী (Kushal Chowdhuri)কে ডেকে বলেন, কারও কাছে চাইবে না। আমি যতদিন আছি এই মন্দিরের উন্নয়নে কাজ করব। দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক হয়েছে। হয়েছে ডালার আর্কেড। কালীঘাট মন্দিরেও ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্কাইওয়য়াক তৈরি হচ্ছে। পুরুলিয়ায় জৈন মন্দিরের জন্য ১ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরে দক্ষিণেশ্বরে গেস্টহাউজ তৈরির জন্যও ১০কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। দ্রুত লাইট অ্যান্ড সাউন্ড তৈরি করার জন্য প্রশংসা করেন তিনি।

বিকেলে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী ভবতারিণীর মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন। বলেন, ঐতিহ্য, ইতিহাস, ধর্মচর্চা – সব দিক থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের যা অবস্থান, তা আন্তর্জাতিক মানের। “আমি চাই, সকলে আসুন, ঘুরে যান।”

মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে দক্ষিণেশ্বরের ট্রাস্টের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের কাছে মানুষ। অনেক মুখ্যয়মন্ত্রী দেখেছি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কাউকে দেখিনি। সব ভিআইপি-দের আমরা ভক্ত হিসেবে আমন্ত্রণ করি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আমাদের নিজের লোক।“ মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্যের জন্য অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানান তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু, তাপস রায়, বিধায়ক মদন মিত্র।