ত্রিপুরা উপনির্নাচনে বিজেপিকে “খামোশ” করার ডাক শত্রুঘ্ন সিনহার

শত্রুঘ্ন সিনহার কথায়, "কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মানুষ ইতিহাস তৈরি করেছেন। যে আসন তৃণমূল কোনওদিন পাইনি, সেই আসনে রেকর্ড মার্জিনে জিতেছি আমি। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন প্রকৃত জননেত্রী। গেম চেঞ্জার।

সোমনাথ বিশ্বাস, আগরতলা

ত্রিপুরা উপনির্বাচনের শেষদিনের প্রচারে জমজমাট আগরতলা। শেষ কয়েক ঘণ্টায় একের পর এক তারকাকে ময়দানে নামিয়ে ঝড় তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন প্রথমেই আগরতলা প্রেসক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন চিত্রতারকা তথা তৃণমূলের (TMC) সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughna Sinha)। সেখান থেকে তিনি ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, “উপনির্বাচনের বিজেপিকে খামোশ করে দিন।”

শত্রুঘ্ন সিনহার কথায়, “কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মানুষ ইতিহাস তৈরি করেছেন। যে আসন তৃণমূল কোনওদিন পাইনি, সেই আসনে রেকর্ড মার্জিনে জিতেছি আমি। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন প্রকৃত জননেত্রী। গেম চেঞ্জার। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সেটা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহরা প্রতিদিন প্রচারে এসে, সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে তাঁদের।”

এবার ত্রিপুরার চারটি কেন্দ্রে হাইভোল্টেজ উপনির্বাচন। শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, “এই উপনির্বাচন ট্রেলার। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের সময় দেখাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর প্রধান সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক আমার আসানসোল ভোটেও গিয়েছিলেন। তারপর ইতিহাস তৈরি হয়েছে। প্রথমবার এই আসন তৃণমূল পেয়েছে। আমারদের লড়াই ছিল বিজেপির সঙ্গে। ২ লক্ষ ভোটে জিতেছিল বিজেপি। সেটা টপকে ৩ লক্ষের বেশি ভোটে জিতেছি আমরা। এবার অভিষেক ত্রিপুরায় বারে বারে আসছে। এখানেও নতুন ইতিহাস রচনা হবে। যুব নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ কাজ করছে অভিষেক।”

এরপরই ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশ্যে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, “আমি তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের সদস্য। তাই হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আপনাদের কাছে আবেদন করছি, আপনাদের রাজ্যে এখন বিজেপি নামক যে দলটি বিভেদের রাজনীতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তুলুন। ভারত ধর্মনিরপেক্ষ। সুন্দর ত্রিপুরা ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য। বিজেপি এখানেও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে। কিন্তু উন্নয়নের নাম গন্ধ নেই। ডাবল ইঞ্জিন অপশাসন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। ভাল রাস্তা নেই, ভালো স্কুল নেই, ভালো স্বাস্থ্য পরিসেবা নেই। শুধু ধর্মের নামে রাজনীতি আছে। বাকি বিরোধীদলগুলোকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপির বিরুদ্ধে গোটা দেশের মতো ত্রিপুরাতেও লড়াই করছে একমাত্র তৃণমূল। তাই ভোট ভাগ করা যাবে না। বিজেপিকে হারাতে তাই তৃণমূল প্রার্থীদের ভোট দিন।”

আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ আরও প্রশ্ন তোলেন, “কেন বিধানসভা ভোটের মাত্র ১০ মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন হল জানতে চাই? সেটা মানুষকে জানাতে হবে। সন্ত্রাস দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না।”

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বিজেপির হয়ে প্রচারে এসেছিলেন ত্রিপুরায়। তাকে কটাক্ষ করে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, “হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রধানমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন। একজন জুমলবাজ। ওকে নিয়ে আর কী বলবো”!

 

Previous articleমহারাষ্ট্রে ‘অপারেশন লোটাস’? ২৬ বিধায়ক সহ নিখোঁজ শিন্ধে এখন গুজরাটে
Next articleসঙ্ঘের প্রস্তাব: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটের ঘাটতি পূরণে বিজেপির বাজি নাইডু