কল্যাণী AIMS নিয়োগ দুর্নীতি: বিজেপি বিধায়কদের আত্মীয়কে হাজিরার নোটিশ দিল CID

বিজেপির দুই বিধায়কের নিকটাত্মীয়ের নিয়োগ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে ই-মেল পাঠিয়েছেন কল্যাণীর এক বিজেপি কর্মী

নদিয়ার কল্যাণী AIMS-এর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাটকীয় মোড়। এবার চাকদহের BJP বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূ অনুসূয়া ও বাঁকুড়ার BJP বিধায়ক নীলাদ্রীশেখর দানার মেয়ে মৈত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিশ পাঠাল CID. শুক্রবার ভবানী ভবনে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, এসএসসি-তে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠায় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা যখন সিবিআই তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন, ঠিক তখনই কল্যাণী এইমসে নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। যেখানে বিজেপির নেতা-বিধায়কদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন খোদ দলের কর্মীরাই।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দলের দুই বিধায়কের নিকটাত্মীয়ের নিয়োগ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে ই-মেল পাঠিয়েছেন কল্যাণীর এক বিজেপি কর্মী। তাঁদের একজন নদিয়ারই হরিণঘাটার বাসিন্দা। বাম আমলে সিপিএমের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি, লোকসভা নির্বাচনের আগে দল বদলে বর্তমানে চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ। অপর জন বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা।

এখানেই শেষ নয়। নদিয়ার রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে এইমসে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তানিয়া ভট্টাচার্য নামে দলের এক যুবনেত্রী। তার পরেই তাঁর পদ কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেন জগন্নাথ। কার্যত তখনই বোঝা গিয়েছিল যে পরিস্থিতি ক্রমশ নেতৃত্বের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।

গত ৬ মে তারিখে দেওয়া ওই ই-মেলে বিজেপি কর্মী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে, সাত দিন আগে বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূকে এমসে নিয়োগ করা হয়েছে। নীলাদ্রিশেখরের মেয়েও এইমসে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নেতাদের দুর্নীতির কারণে তৃণমূলের সঙ্গে লড়ে যাওয়া সাধারণ বিজেপি কর্মীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগকারী বিজেপির দীর্ঘদিনের কর্মী। দলের নানা জেলা পদেও ছিলেন।

তবে বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ পরোক্ষে নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “গত ডিসেম্বরে একটি সংস্থার মাধ্যমে এমসে চুক্তিভিক্তিক কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল। আমার পুত্রবধূ পরীক্ষা দিয়ে এক বছরের চুক্তিতে কাজ করছেন। তিনি কোন বিভাগে কাজ করেন, তা-ও আমি বলতে পারব না। এতে আমার কোনও হাত নেই।”

বিজেপি সূত্রের দাবি, বর্তমানে সাংসদ জগন্নাথ সরকারের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত পার্থ। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জগন্নাথ অবশ্য দাবি করছেন, “ও যে মেল করেছে সেটাই আমি জানতাম না। আমি তো জানি, যারা চাকরি পাচ্ছে তারা পরীক্ষা দিয়ে পাচ্ছে। অন্যায় হয়ে থাকলে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” জগন্নাথের বিরোধী বলে পরিচিত, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাসের নামও এইমসে নিয়োগের তরজায় বারবার সামনে এসেছে। তিনি অবশ্য পাল্টা বলেন, “এইমসে কাজ দেওয়ার জন্য কাউকেই আমি সুপারিশ করিনি। কে বা কারা দিচ্ছে তার তদন্ত হোক।”

আরও পড়ুন- দুর্নীতির অভিযোগে “বুলেট ট্রেন” প্রকল্পের ইনচার্জকে ছাঁটাই করল কেন্দ্র

Previous articleIndia Team: শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করল হরমনপ্রীতরা
Next articleকলকাতায় প্যাকার এবং মুভার্স কীভাবে খুঁজে পাবেন