শ্মশান দুর্নীতি কাণ্ডে নোটিশ শুভেন্দুর দাদা ও ভ্রাতৃবধূকে, বিপাকে অধিকারী পরিবার

সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ এককাট্টা করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে পুলিশ। নতুন করে গ্রেফতার হয়েছে সৌমেন্দুর দীর্ঘদিনের গাড়ির চালক-সহ আরও এখন। সমবিলিয়ে শ্মশান কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার চার

কাঁথির শ্মশান জমি (Kanthi cremation ground) দুর্নীতি কাণ্ডে নয়া মোড়। চরম বিপাকে শান্তিকুঞ্জের অধিকারী পরিবার। কাঁথি পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান শিশির অধিকারীর (Sisir Adhikari) ছোট ছেলে সৌমেন্দু (Soumendu Adhikari) গ্রেফতারি এড়াতে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট-এর (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়ে রক্ষাকবচ পেয়েছে। কিন্তু সেই স্বস্তি সাময়িক, বুধবার ফের শুনানি।তার আগে সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ এককাট্টা করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে পুলিশ। নতুন করে গ্রেফতার হয়েছে সৌমেন্দুর দীর্ঘদিনের গাড়ির চালক-সহ আরও এখন। সমবিলিয়ে শ্মশান কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার চার।

এবার শ্মশান দুর্নীতি কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে কাঁথি থানা থেকে নোটিশ পাঠানো হল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বড় দাদা কৃষ্ণেন্দু অধিকারী (Krishnendu Adhikari) ও সেজো ভাই তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুর স্ত্রী সুতপা অধিকারীকে (Sutapa Adhikari)।

উল্লেখ্য, কাঁথির শ্মশানের জমিতে বেআইনি স্টল নির্মাণ ও তা বিলিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গোপাল সিং নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ব্যক্তি কাঁথির বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারীর গাড়ির চালক। এর আগে এই ঘটনায় আরও দুই পুরসভার কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিস। ধৃত গোপাল সিং পুরসভার কর্মী থাকাকালীন সৌমেন্দুর গাড়ির চালক ছিলেন। অবসর গ্রহণের পরও সৌমেন্দুর গাড়ির চালক হিসেবেই কর্মরত ছিলেন। তার সঙ্গে আলোক সাউ নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সৌমেন্দ্র অধিকারী চেয়ারম্যান থাকাকালীন রাঙামাটি শ্মশানের জমিতে ২ কোটি টাকা খরচ করে কয়েকটি স্টল নির্মাণ করেছিল কাঁথি পুরসভা (Kanthi Municipality)। স্টল নির্মাণ এবং বণ্টন প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছিল বলে বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান সুবল মান্নার অভিযোগ। সম্প্রতি, এ বিষয়ে তিনি কাঁথি থানায় সৌমেন্দ্র-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। তার পরেই সক্রিয় হয় পুলিশ। ধৃত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ বেরা পুরসভার তরফে ওই প্রকল্প তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন। স্টল নির্মাণ করেছিলেন ঠিকাদার সতীনাথ দাস অধিকারী। কাঁথির বর্তমান পুরবোর্ডের দাবি, জমির চরিত্র বদলের কোনও অনুমতি পুরসভা দেয়নি, বা এই সংক্রান্ত কোনও বোর্ড মিটিংও পুরসভায় হয়নি। দোকান বানাবার কোনও ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ পুরসভায় নেই। এমনকি, কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি। দোকানের মালিকরা বলেছেন যে তাঁরা এই দোকানের জন্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু দোকান মালিকদের থেকে নেওয়া কোনও টাকা পুরসভায় জমা পড়েনি। অনেক ক্ষেত্রেই এই ধরনের পদাধিকারীরা সরে যাওয়ার পর দেখা যায় তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি জানান, অভিযোগ উঠেছে ব্যক্তিগত ভাবে প্রায় ১ কোটি টাকা দোকান মালিকদের থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা পুরসভার কোষাগারে গিয়েছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

এদিকে গ্রেফতারি এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী। গত শুক্রবার এই সংক্রান্ত মানলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর একক বেঞ্চের নির্দেশ, পুলিশ তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে, কিন্তু সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ এখনই নিয়ে পারবে না। বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।


Previous articleআজ সোনা রুপোর দাম কত? জেনে নিন এক ঝলকে
Next articleনবান্নের ধাঁচে অভিনব ও ডিজিটাল কন্ট্রোল রুম খুলল কলকাতা পুরসভা