যোগীরাজ্যে গ্রেফতার সাংবাদিক বাবা, স্বাধীনতা দিবসে ছোট্ট মেহনাজের গলায় ‘অধিকারের’ কথা

প্রত্যেক ভারতীয়ের অধিকার আছে তাঁরা কী বলবেন, কী খাবেন এবং কোন ধর্ম গ্রহণ করবেন। এই অধিকার মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, ভগৎ সিংয়ের মত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের লড়াই এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ভারতীয়রা অর্জন করেছেন। ১৫ অগাস্টে (Independence Day) যে মর্যাদা ও গৌরব আমাদের দেশ অর্জন করেছে তা কখনওই কারও কাছে আত্মসমর্পণ করতে শেখায় না। স্বাধীনতা দিবসে স্কুলের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করল সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের (Siddique Kappan) মেয়ে মেহনাজ (Mehnaz Kappan)। মাত্র মিনিট দুয়েকের বক্তব্যই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল। ৯ বছরের ছোট্ট মেহনাজের বক্তব্যে একদিকে যেমন ধর্মের ভিত্তিতে হিংসার কথা উঠে এসেছে, অন্যদিকে তা নির্মূলের জন্য ভালবাসা এবং একতা ঠিক কতটা প্রয়োজন সে কথাও শোনা গিয়েছে।

স্কুলে বক্তব্যের শুরুতেই নিজের পরিচয় দেয় মেহনাজ। জোর গলায় বলে, “আমি মেহনাজ। সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের মেয়ে। এরপরই ছোট্ট মেহনাজ বলে, আজ এই শুভ মুহূর্তে আমাদের দেশ যখন ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছে, তখন একজন ভারতীয় হিসেবে গর্বের সঙ্গে বলতেই হয়, ভারত মাতা কী জয়! এরপরই সিদ্দিক কন্যা দৃপ্ত কণ্ঠে বলে ওঠে একটা ভালো ভবিষ্যতের স্বপ্ন আমাদের সকলের দেখা উচিত। যেখানে না থাকবে কোনও ভেদাভেদ না থাকবে মতানৈক্য।“ তবে ৯ বছরের খুদের এমন বক্তব্য শুনে তাজ্জব দেশবাসী। দেশের জ্বলন্ত সমস্যা এবং তা থেকে প্রতিকারের উপায় যেভাবে অবলীলায় মেহনাজ বাতলে দিল তা এক কথায় প্রশংসনীয়।

হাথরসে কাণ্ডে (Hathras) দলিত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন দিল্লির মালয়ালম কাগজের সাংবাদিক তথা মেহনাজের বাবা সিদ্দিক কাপ্পান। মথুরায় পৌছলে তাঁকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ (Uttar Pradesh Police)। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ। বলা হয়, কাপ্পান এবং তাঁর তিন সঙ্গী উগ্রপন্থী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (PFI) এবং তার শাখা সংগঠন ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার (Campus Front of India) সঙ্গে যুক্ত। হাথরসে সাম্প্রদায়িক লড়াই সৃষ্টির জন্য বিদেশ থেকে অর্থ নিয়েছেন তাঁরা। আর স্বাধীনতা দিবসে সেই কাপ্পানের ছোট মেয়েকেই স্কুলে দেখা গেল পতাকা হাতে। ছোট্ট মেয়েটা মন থেকে শ্রদ্ধা জানাল দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। তবে ঠিক কী কারণে বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে- তার উত্তর এখনও পায়নি মেহনাজ। ছোট্ট মেহনাজের বক্তব্য এদিন উত্তরপ্রদেশের সামগ্রিক চিত্রটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বলেই মত অভিজ্ঞ মহলের। রাজ্যের মানুষের মধ্যে জাতপাতের বিভাজন যে ঠিক কতটা চরমে পৌঁছেছে তা এদিন আবেভাবেই বুঝিয়ে দিল সাংবাদিক কাপ্পানের ছোট্ট মেয়েটি।

Previous articleরুশদির পর এবার খুনের হুমকি তসলিমাকে, টুইটে উদ্বিগ্ন লেখিকা
Next articleহোর্ডিং তো দলের নয়, উৎসাহী কেউ করে থাকতে পারেন: কুণাল