Tuesday, August 26, 2025

EZCC-তে বিজেপির দুর্গাপুজোর বিপুল টাকার উৎস ফাঁস করলেন জয়প্রকাশ! জানলে চমকে উঠবেন

Date:

Share post:

সোমনাথ বিশ্বাস

ঋণের বোঝায় জর্জরিত রাজ্য সরকার। বারে বারে দরবার করলেও কেন্দ্র ন্যায্য বকেয়া মেটাচ্ছে না। রাজকোষ যখন রুগ্ন, তখন ঘটা করে কেন পুজো কমিটিগুলিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? যেখানে রাজ্যের কোষাগার থেকে খরচ হবে প্রায় ৩০০কোটির কাছাকাছি। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। যেখানে বিজেপি ও বিরোধীদের প্রচ্ছন্ন মদন রয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।

ঠিক সেই জায়গা থেকে পাল্টা দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। EZCC (ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টার)-তে বিজেপির দুর্গাপুজোর জন্য যে বিপুল টাকা খরচ হয়েছে, তার উৎস ফাঁস করলেন জয়প্রকাশবাবু। ২০২০ সালে বিজেপি লোকদেখানো দুর্গাপুজো শুরু করে। যার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নামেই এই পুজোর সংকল্প। কিন্তু কোথায় হবে পুজো? বেছে নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি দফতরের অধীনে থাকা সল্টলেকের EZCC-কে। কিন্তু EZCC কী কোনও রাজনৈতিক দলের ধর্মীয় কর্মসূচির জন্য জায়গা দিতে পারে? বিতর্ক এড়াতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিয়ে করোনা আবহে ভার্চুয়াল উদ্বোধন করা হয় বঙ্গ বিজেপির দুর্গাপুজো। ব্যাস, কর্তার ইচ্ছায় কর্ম!

এখানেই শেষ নয়, বিজেপির প্রথম বছর দুর্গাপুজোর জন্য যে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছিল, তার সিংহভাগ মিটিয়েছে কেন্দ্রের সংস্কৃতি দফতর! যা আইনত বা নৈতিকভাবে করা যায় না। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পুজোর খরচ কেন দেবে কেন্দ্রীয় সরকার? মানুষের ট্যাক্সের টাকায় বিজেপির পুজো কেন হবে? প্রশ্ন উঠছে…!

আবার এই বিজেপি রাজ্য সরকারের অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আদালতে ছুটছে। গেরুয়া শিবিরের এমন দ্বিচারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর দাবি, “বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। এবং এই উৎসবকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। যা শুধু প্রতিটি বাঙালি নয়, গোটা দেশের কাছে গর্বের। দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হয় বাংলা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকার যদি ক্লাবগুলিকে অনুদান দিয়েই থাকে, তাতে আপত্তির কী আছে?”

এরপরই বিজেপির দুর্গাপুজোর বিপুল টাকার উৎসের পর্দা ফাঁস করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর কথায়, “বিজেপির EZCC-তে দুর্গাপুজোর সমস্ত বিষয়টি আমার নখদর্পনে। দুর্ভাগ্যবশত তখন আমি বিজেপিতে ছিলাম। কেন্দ্রের সংস্কৃতি দফতর কখনই EZCC-কে একটি রাজনৈতিক দলের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য দিতে পারে না। শুধু তাই নয়, বিজেপির এই দুর্গাপুজোর খরচ দলের ফান্ড থেকে হয়নি। বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি দফতর। দেশবাসীর করের টাকায় একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে পূজার অনুদান দিয়েছিল কেন্দ্র।”

নিজের বেলা আটিশুটি পরের বেলা দাঁতকপাটি। যে বিজেপি কেন্দ্রের টাকায় দুর্গাপুজো করে, সেই বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এটাই দ্বিচারিতা। জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, “যেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবকে সফলভাবে পালনের জন্য কোনওরকম রং না দেখে সমস্ত ক্লাবকে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করেছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার একমাত্র তাদের শাসক দল বিজেপির দুর্গাপুজোকে অনৈতিকভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছে। ক্ষমতা থাকলে জবাব দিক বিজেপির নেতারা!”

আরও পড়ুন- সব সুদে-আসলে হিসেব হবে: ফের মাত্রা ছাড়ালেন দিলীপ, পাল্টা তোপ তৃণমূলের

spot_img

Related articles

দুদিন ছুটি বৃষ্টির! তবুও থাকছে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস

বঙ্গোপসাগরে ফের তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত। তার জেরে ফের ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর। যার প্রভাব ওড়িশা ও বাংলার...

অনেক প্রেরণা তাঁরই: জন্মদিবসে মাদার টেরেসাকে স্মরণ মুখ্যমন্ত্রীর

তিনি যত না ছিলেন ম্যাসিডোনিয়ার তার থেকেও বেশি ছিলেন ভারতের, এই বাংলার। যাঁদের বেঁচে থাকার কোনও আশাই ছিল...

সবার ভালোবাসা লালবাগচা রাজাকে, মুম্বইয়ের গণেশ পুজোয় টক্কর দিতে তৈরি অন্যরাও

মুম্বইয়ের লালবাগের রাজাকে (Lalbaugcha Raja) কে না চেনে। সারাবছর আখ্খা মুম্বইকর অপেক্ষা করেন তাঁর ঝলক দর্শনের জন্য। এবছরও...

প্রাথমিক টেট-এর তথ্য ফাঁস হয়নি, বিভ্রান্তি কাটিয়ে জানালো পর্ষদ

নতুন জালিয়াতির বিরুদ্ধে কড়া রাজ্যের শিক্ষা দফতর। প্রাথমিক টেট-এর (Primary TET) তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে নতুন করে বিভ্রান্তি...