নাগরিক মঞ্চের আড়ালে সিপিএমের মিছিল, কেন গোয়েবলসিও মিথ্যাচার? উঠছে প্রশ্ন

আদালতের(Court) নির্দেশ মেনে করুণাময়ীতে আন্দোলনরত(Protest) চাকরি প্রার্থীদের সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে রাজনীতির ফায়দা তুলতে ময়দানে নেমে পড়েছে বাম-বিজেপি সব পক্ষই। সেই পথে হেঁটে শনিবার বিদ্বজনকে সামনে রেখে শহরে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করল বামেরা। ধর্মতলার হলো প্রতিবাদ মিছিল। যদিও আদালতের নির্দেশ মেনে যেখানে প্রশাসন চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দিয়েছে সেখানে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে বামেদের এই উদ্যোগ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলছে। প্রশ্ন উঠছে মিথ্যাচারকে হাতিয়ার করে সিপিএমের রাজনীতিতে টিকে থাকার প্রচেষ্টা নিয়ে।

তবে এই মিছিল প্রসঙ্গে তৃণমূলের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, চাকরিপ্রার্থীদের মূল আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আন্দোলনের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতে সচেষ্ট হয়েছে বিরোধীরা। আর এই ফাঁদে ভুল করে পা দিয়ে ফেলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ভিত্তিহীন আন্দোলন ও মিথ্যাকে হাতিয়ার করে নাগরিক মিছিলের নামে বামেদের এই মিছিলের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে।

১. ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও সেখানে জোর করে রাস্তা আটকে বসেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর পুলিশ বারবার তাদের উঠে যেতে অনুরোধ করে অনড় থাকায় সরাতে বাধ্য হয়।
২. পুলিশ অবস্থানকারীদের সরাতে কোনরকম কাদানে গ্যাস জল কামান বা লাঠি চালায়নি সরিয়ে দিয়ে এলাকা খালি করেছে।
৩. চাকরি প্রার্থীরা রাস্তায় না বসে আদালতে যান নি কেন? কারণ আদালতে গেলে ওদের দাবি মান্যতা পাবে না তা তারা জানেন।
৪. সিপিএম কংগ্রেস বিজেপি জানে আদালতে গেলে হাড় নিশ্চিত তাই বিরোধীরা সবসময় চেয়েছে রাস্তা আটকে ধরনা চললে তাদের ফায়দা।
৫. ধরনা না চললে বিরোধীরা টিভিতে মুখ দেখাবে কি করে?
৬. ধর্মতলায় আরো একাধিক জায়গায় ঝরনা চলছে। পুলিশ তো সেখানে যায়নি। সেকথা কেন বিরোধী বা বিশিষ্টরা বলছেন না?
৭. ত্রিপুরাতে বিজেপি কি করেছে তা মনে পড়ে ১০৩২৩ জন কে চাকরি থেকে ছাঁটাই করেছিল। তারা আন্দোলন করেছিল ত্রিপুরা সরকার তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস, জল কামান চালিয়েছে, লাঠি চালিয়েছে।
৮. উত্তরপ্রদেশে কৃষক আন্দোলনের কথা মনে পড়ে বিজেপি নেতার ছেলে আন্দোলনকারীদের ওপর গাড়ি চালালে চারজনের মৃত্যু হয়
৯. মধ্যপ্রদেশে ব্যাপন কেলেঙ্কারিতে কতজনের মৃত্যু হয়েছে কতজন আত্মহত্যা করেছে বিজেপি হিসাব দেবে কি?
১০. কাঁথির চিরকুমার মন্ত্রী থাকাকালীন মেদিনীপুর মুর্শিদাবাদ পুরুলিয়া জেলা থেকে কত বেআইনি নিয়োগ করেছে, মনে পড়ে?

১১. বাম আমলেও সিপিএম কিভাবে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ভুরি ভুরি মানুষ ঢুকিয়েছে তা বাংলার মানুষ জানে তাদের মধ্যে কতজন যোগ্য কতজন অযোগ্য তা তারাও নিজেরা জানে।

শনিবার বিকেলে নাগরিক সমাজের নামে বামেদের এই মিছিলে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে, বিমান বসু, আব্দুল মান্নান, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়দের। পাশাপাশি মিছিলে ছিলেন, পরিচালক অনেক দত্ত, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, সাহিত্যিক মন্দাক্রান্তা সেনের মত বামপন্থী ব্যক্তিত্বরা। লাল পতাকা বিহীন এই মিছিলে বামপন্থী নেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এই মিছিল প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বিমান বসু বলেন, “মিছিটা ডেকেছে নাগরিক সমাজ। আমরা সিপিএমের পক্ষ থেকে সমর্থন দিচ্ছি মাত্র।” যদিও রাজনৈতিক মহলের দাবি, নাগরিক সমাজের মিছিল বলে চালানোর চেষ্টা হলেও এটা আসলে সিপিএমের মিছিল। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, যারা মিছিল করছে সেখানে সিপিএমের নেতারা আছেন। তাদের মধ্যে যারা বুদ্ধিজীবী তারাও সিপিএমের মিছিলে সর্বদা থাকেন। শেষ বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম একটিও আসন পায়নি। বুদ্ধিজীবীদের নাম করে তারা নতুন করে সমর্থন আদায় করতে পারবে না। টেট পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনে সরকার কোন বল প্রয়োগ করেনি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের। সেটাও আদালতের নির্দেশ মেনে। ১৪৪ ধারা জারি ছিল ওই স্থানে।

Previous articleবাংলা নয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আছড়ে পড়বে বাংলাদেশে
Next articleপঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে হুঁশিয়ারি উদয়ন গুহর