দুর্যোগ উপেক্ষা করেই চলছে কালীপুজো, দেবী আরাধনায় ভিড় জমিয়েছেন অগণিত পুণ্যার্থী

আজ কালীপুজো।এই উপলক্ষ্যে রাজ্যজুড়ে আজ আলোর রোশনাই।পাশাপাশি ঝড়-জল উপেক্ষা করেই শক্তিপীঠগুলিতে ভিড় জমিয়েছেন অগণিত ভক্ত। তারাপীঠ থেকে কালীঘাট, সকাল থেকেই দেবী আরাধনায় সামিল হয়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীরা। মহা সমারোহে চলছে পুজো।

আরও পড়ুন:দীপান্বিতা কালীপুজোয় তারাপীঠে উপচে পড়া ভিড়, সারারাত খোলা থাকবে মন্দিরের দরজা

সকাল থেকেই তারাপীঠে চলছে শক্তির আরাধনা। চিরাচরিত রীতি মেনে চলছে পুজো। আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে গোটা মন্দির। পুণ্যার্থীদের ভিড়ে সরগরম মন্দির চত্বর। এদিন সকালে স্নানের পর দেবীর শিলাব্রক্ষ্মময়ী মূর্তিকে রাজবেশে সাজিয়ে তোলা হয়।তারপর চুনরি পরিয়ে পঞ্চ উপাচারে মঙ্গলারতি এবং নিত্যপুজো শুরু হয়। ইতিমধ্যেই ভোগ নিবেদন করা হয়েছে দেবীকে। এরপর কিছুক্ষণ বন্ধ থাকবে গর্ভগৃহের দরজা।বিকেলে পুণরায় খুলে দেওয়া হবে মন্দির।এরপর নিশিরাতে দেবীকে সোনার অলঙ্কারে ও ডাকের সাজে রাজ রাজেশ্বরী বেশে সাজিয়ে শ্যামা রুপে পুজো শুরু করা হয়। আজ সারারাত খোলা থাকবে মন্দির।

এদিকে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে এ বছর স্বাভাবিকভাবে পালিত হচ্ছে দক্ষিণশ্বরে কালীপুজো। দু’বছর পর এ বার দক্ষিণশ্বরে মন্দির চত্বরে বসেই মায়ের পুজো দেখার সুযোগ পাচ্ছেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।আজ, সোমবার ভোর ৫টা থেকে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে মন্দিরের সিংহদ্বার। মন্দির চত্বর থেকে বালি ব্রিজ পর্যন্ত ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ছে।আজ ভোরে মঙ্গলারতি দিয়ে ১৬৮তম পুজোর সূচনা হয়েছে। আজ সারারাত ধরে চলবে পুজো নেওয়া হবে। পুজো দেওয়াতেও এ বছর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। নাটমন্দির চত্বরে বসে ভবতারিণীর পুজো-অর্চনা দেখা যাবে মন্দির প্রাঙ্গণে লাগানো বড় পর্দায়।

সতীর একান্ন পীঠের অন্যতম কালীঘাটের মা দক্ষিণাকালী। আজ মহালক্ষ্মী রূপে শ্যামা মায়ের আরাধনা করা হচ্ছে। সকাল থেকেই কালীঘাট মন্দিরে ভক্তদের ভিড় শুরু হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে পুজো দিতে এসেছেন দর্শনার্থীরা। আজ সন্ধ্যার পরে শুরু হয় লক্ষ্মীপুজো। সন্ধে নামতেই মন্দিরের চারদিকে সাত পাক ঘোরার পরে খড়ের পুতুলে আগুন ধরিয়ে দূর করা হয় অলক্ষ্মীকে। তারপর শুরু হয় মহালক্ষ্মীর পুজো। সেটিই কালীঘাটের বিশ্বেষত্ব। আজ গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে কালীঘাট মন্দির।

সোমবার সকাল থেকেই মহাসমারহে পালিত হচ্ছে সিঙ্গুরের নান্দা সন্ন্যাসী-ঘাটার ব্রহ্মময়ী মায়ের মন্দিরে পূজা অর্চনা। অতি জাগ্রত এবং প্রাচীন এই ব্রহ্মময়ী মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যতীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় পরবর্তীকালে তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।এদিন কালী পূজোর সকালে থেকেই মন্দিরে রয়েছে পুণ্যার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।  মহিলাদের উপস্থিতিও রয়েছে চোখে পড়ার মত। সুখ এবং সমৃদ্ধির জন্য মন্দির পুজোও দিচ্ছেন ভক্তরা। এ বিষয়ে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই অঞ্চলের এই পুজো প্রতিবছর খুবই ভক্তিভরে এবং জাঁকজমক সহকারে পালিত হয়, সকাল থেকেই ভক্তের ঢল নামে মায়ের মন্দিরে। লোকমুখে প্রচলিত এই মন্দিরে মায়ের কাছে যদি কেউ কিছু প্রার্থনা করেন, মা ভক্তদের সেই প্রার্থনা পূরণ করেন।

অন্যদিকে অসমের গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরে প্রতিবারের মতো এবারও সাড়ম্বর চলছে মায়ের আরাধনা।সারা দেশ থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন। এদিন দেবী মাকে মহাস্নান করিয়ে, ষোড়শপচারে ভোগ নিবেদন করা হয়। এরপর হয় বলিদান। মাছ ভোগ ও বলিদানের মহাপ্রসাদ ভোগও নিবেদন করা হয় মাকে। আজ সকাল ৭টার পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের দরজা। এখানে শুধু দর্শন নয়, মাকে স্পর্শ করে পুণ্যলাভ করতে আসেন ভক্তরা।কামাখ্যা মন্দিরে এদিন রাত পর্যন্ত মহাযজ্ঞ চলে। মন্দিরের মধ্যে দশটি নামী আখড়ায় প্রথা মেনে যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। পুজো ও যজ্ঞ দেখতে মন্দিরে অগণিত ভক্তের সমাগম হয়েছে।

Previous articleকারগিলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দীপাবলির উৎসব পালন মোদির
Next article‘কোহলি বিশেষ প্রতিভাবান’, বললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়