গুজরাটে ঝুলন্ত সেতু বিপর্যয়ে সাসপেন্ড মোরবি পুরসভার মুখ্য আধিকারিক

অভিযোগ, জীর্ণ হয়ে যাওয়া সেতুর তার না বদলে সেতুর মেঝেতে অ্যালুমিনিয়ামের পাত বদল করে এবং রং করেই দায় সেরেছিল ওরেভার থেকে বরাত পাওয়া একটি সংস্থা।

গুজরাটে বিধানসভা ভোট ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঝুলন্ত সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় সাসপেন্ড করা হল মোরবি পুরসভার মুখ্য আধিকারিক সন্দীপসিন ঝালাকে।কী কারণে সাসপেন্ড ? সেতু নির্মাণ বা সংস্কারের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। সেটা জানা থাকা সত্ত্বেও আদতে ঘড়ি নির্মাতা সংস্থা ওরেভাকে ব্রিটিশ জমানায় তৈরি ঝুলন্ত সেতু মেরামতি ও সংস্কারের দায়িত্ব দিয়েছিল মোরবি পুরসভা।অভিযোগ, জীর্ণ হয়ে যাওয়া সেতুর তার না বদলে সেতুর মেঝেতে অ্যালুমিনিয়ামের পাত বদল করে এবং রং করেই দায় সেরেছিল ওরেভার থেকে বরাত পাওয়া একটি সংস্থা।

চার স্তরের নতুন অ্যালুমিনিয়াম পাতগুলিকে ধরে রাখতে পারেনি পুরনো তারগুলি। ৩০ অক্টোবর রাতে মাচ্ছু নদীর ওই সেতু ভেঙে মৃত্যু হয় ১৪১ জনের।জানা গিয়েছে, ওরেভাকে সেতু সংস্কারের বরাত পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে মোরবি পুরসভার মুখ্য আধিকারিক সন্দীপের ‘ভূমিকা’ ছিল। সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ওরেভা সংস্থার দু’জন ম্যানেজার, দু’জন শ্রমিক, তিন জন নিরাপত্তাকর্মী এবং দু’জন টিকিট বিক্রেতাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের জেরা করে কোম্পানির আধিকারিকের সঙ্গে সন্দীপের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের খবর পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ দীর্ঘক্ষণ জেরা করেছিল সন্দীপকে।প্রাথমিক তদন্তের পরে সেতু মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ওরেভা সেতু সারাইয়ের জন্য ২৯ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দেব প্রকাশ ফ্যাব্রিকেশন লিমিডেট নামে একটি সংস্থাকে সেতু সারাইয়ের দায়িত্ব দেয়। কিন্তু ওই সংস্থাটি সেতুর গঠনগত স্থায়িত্ব পরিমাপের জন্য কোনও বিজ্ঞানসম্মত পরীক্ষা করেনি। অভিযোগ, সারাইয়ের যে সব সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, তা নিম্নমানের। কাজে লাগানো হয়েছিল অদক্ষ শ্রমিকদের।

অন্য দিকে, মোরবি পুরসভার তরফে দাবি করা হয়েছে, ওরেভা সংস্থা সেতুটি খুলে দেওয়ার আগে তাদের কাছ থেকে কোনও শংসাপত্র নেয়নি। কিন্তু দুর্ঘটনার চার দিন আগে বিনা অনুমতিতে সেতু চালুর পরেও পুর কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেননি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।প্রসঙ্গত, গত মার্চে মোরবি পুরসভার থেকে সেতুর সংস্কারের দায়িত্ব পায় ওরেভা। সংস্কারের জন্য ৭ মাস সেতুটি বন্ধ ছিল। গুজরাটি নববর্ষ উপলক্ষে সেটি ২৬ অক্টোবর খুলে দেওয়া হয়। যদিও চুক্তিতে ওরেভা সংস্থাকে সংস্কার এবং মেরামতির জন্য সেতুটি ৮ থেকে ১২ মাস বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। অভিযোগ, সেই চুক্তি ভেঙেই সেতু খুলে দেয় তারা। টিকিট কেটে জনসাধারণকে ঝুলন্ত সেতুতে ওঠার সুযোগ করে দেয়।এর ফলে বেঘোরে প্রাণ দিতে হল এত মানুষকে।

 

Previous articleনিজ কেন্দ্রে বিজয়া সম্মিলনীতে এসে উষ্ণ অভ্যর্থনায় ভাসলেন অভিষেক, খোঁজ নিলেন ‘এক ডাকে অভিষেক’ কর্মসূচির
Next articleকেরলে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল সংঘাত! বিজয়নের বিদেশ সফর ইস্যুতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি আরিফের